কর জাল, অটোমেশন ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো হলেও রাজস্ব আদায়ে কাক্সিক্ষত সাফল্য পায়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এনবিআর। তবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার রাজস্ব আদায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

২০২১-২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পাঁচ মাসে এক লাখ ২৬৭ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ হাজার ৯৮ কোটি টাকা কম। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে ৮৭ হাজার ১৯৪ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। অর্থাৎ চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশের বেশি।
গতকাল সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ১৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সেই ইতিবাচক ধারা চলতি অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আগামী দিনগুলোতে রাজস্ব আদায় আরও বাড়বে।
জানা গেছে, অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এনবিআরকে এক লাখ ১৩ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা আদায়ের জন্য বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবে এনবিআর আদায় করতে পেরেছে এক লাখ ২৬৭ কোটির টাকার রাজস্ব। আয়কর, ভ্যাট ও আমদানি-রফতানি শুল্ক কোনো খাতেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। ভ্যাটে ঘাটতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এ খাতে একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকার কম আদায় হয়েছে।
আমদানি ও রফতানি শুল্কে সাড়ে ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ঘাটতি চার হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। আয়কর খাতে প্রায় দুই হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।
রাজস্ব বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে ভ্যাট থেকে ৩৬ হাজার ৬০৫ কোটির রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। আমদানি-রফতানি শুল্কখাত থেকে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আয়কর থেকে আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ৬৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এই সময়ে ভ্যাটে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২৪০ কোটি টাকা, আয়করে ৩২ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা আর আমদানি-রপ্তানি শুল্ক কর আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৩৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।