পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নানা প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটিয়ে ৩০ বছরের চেষ্টায় অবশেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভবন আলোর মুখ দেখছে। শিগগিরই এনবিআর পেতে যাচ্ছে নিজস্ব ভবন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ৬০ ফুট সড়কের মোড়ে ৪১২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহুল কাক্সিক্ষত আধুনিক এই কার্যালয়ের নির্মাণকাজ শেষের পথে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। সেপ্টেম্বরে এটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৭৬ নম্বর অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর সৃষ্টি হয়। আর ৫০ বছরে সংস্থাটির রাজস্ব আহরণ বেড়েছে প্রায় দেড় হাজার গুণ। যে সংস্থাটি সরকারের বেশির ভাগ রাজস্ব আদায় করে দেয়, এত দিন তার কোনো নিজস্ব ভবন ছিল না। শেষ পর্যন্ত রাজস্ব কর্মকর্তাদের প্রত্যাশিত সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।
এখন সেগুনবাগিচায় যে রাজস্ব ভবন আছে সেটি অনেক পুরোনো। পাকিস্তান আমলে এখানে সচিবালয় ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কিছুদিন কাজ চলে এখানে। তার পর সচিবালয় চলে যায় প্রেস ক্লাবের পাশে। আর সেগুনবাগিচায় পুরাতন সচিবালয়ে থেকে যায় এনবিআর। সেই থেকে এখন পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ডের যাবতীয় কাজ এখান থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমানে এনবিআরের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখানে বসেন। এর বাইরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভাড়ায় অফিস করেন। সারা দেশে প্রায় ছয় শতাধিক আয়কর অফিস এবং তিন শতাধিক ভ্যাট অফিস আছে। এর বাইরে আছে কর অঞ্চল, কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশন। ভাড়া দিয়ে এসব অফিস চালায় এনবিআর। এ জন্য সরকারের প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়।
এনবিআরের অধীনে কাস্টমস ও আয়কর বিভাগের প্রায় ৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। নতুন ভবনটির ২০ তলা পর্যন্ত ভিত্তিপ্রস্তর থাকলেও ১২ তলা সম্পন্ন হয়েছে। এই ভবনে রাজস্ব বোর্ডের সব অফিস যাবে। দুটি আপিল ও ট্রাইবুন্যাল, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), দুটি লার্জ ট্যাক্স পেয়ার ইউনিটের অফিসও যাবে। এর পাশাপাশি আগারগাঁও নির্বাচন অফিসের সামনে রাজস্ব ভবন-২-এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ভবনের কাজ শেষ হলে এখানে মাঠপর্যায়ের অনেক অফিস স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজস্ব ভবন প্রকল্পের পরিচালক ও কর কমিশনার লুৎফুল আজীম বলেন, নতুন ভবনের কাজ প্রায় শেষের পথে। শেষ মুহূর্তে কিছু ঘষামাজার কাজ চলছে। এনবিআরের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই উদ্বোধন করা হবে বহুল প্রত্যাশিত অত্যাধুনিক রাজস্ব ভবন।
এনবিআর সূত্র বলেছে, ভবন বানাতে ৪৫১ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে খরচ হয়েছে ৪১২ কোটি টাকা। বাকি ৩৯ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
এনবিআর বলেছে, দৃষ্টিনন্দন এ ভবনে এলে সরকারি অফিস সম্পর্কে করদাতা ও দর্শনার্থীদের গতানুগতিক ধারণা পাল্টে যাবে। কারণ এখানে আধুনিক সব সুবিধা থাকবে। অবকাঠামোগত সুবিধা থাকায় এখানে করদাতাদেরও দ্রুত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
২০০৮ সালে জাতীয় রাজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ১৪১ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। কিন্তু জমি নিয়ে জটিলতার কারণে সাত বছর দেরিতে ২০১৫ সালে কাজ শুরু হয়।
এর আগে ১৯৯২ সালে প্রথমবারের মতো রাজধানী আগারগাঁওয়ে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য কর বিভাগের অনুকূলে দুই একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় সেখানে কাজ শুরু করতে পারেনি এনবিআর। পরে ২০০১ সালে বর্তমান জায়গায় দুই একরের প্লট বরাদ্দ পায় এনবিআর।
সেখানেও বিপত্তি বাধে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে। এর পরের বছর ২০০২ সালে জমি বরাদ্দ পেলেও বুঝে পেতে বিলম্ব হয় ছয় বছর। তবে জমি বুঝে না পেলেও ওই বছরই প্রথবারের মতো ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তখনকার অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান।
এর ছয় বছর পর ২০০৮ সালে পাঁচ বছর মেয়াদে ১৪১ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয় একনেকে। জমি নিয়ে মামলা নিষ্পত্তি হলে ২০১৪ সালে সেই প্লট বুঝে পায় এনবিআর। এর মধ্যে প্রকল্পের প্রথম মেয়াদ ২০১৩ সালেই শেষ হয়ে যায়। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। বিশেষ করে ভবনের নকশা পরিবর্তন করে পরিসর বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫১ কোটি টাকা। একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পটি শেষ করার সময়সীমা ঠিক করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।