বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে মাগুরা জেলার চারটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। তাছাড়া নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর থেকে বাদ যায়নি। সাথেসাথে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মাছ চাষিরা। ক্ষতির তালিকায় প্রধান রোপা আমন ধান জমি সহ মসুরি, রবি সরিষা, রসুন ও পেয়াজ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি জমিও। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মাগুরা জেলার কয়েক হাজার চাষি। ফলে ফসল বাঁচাতে কৃষকের অতিরিক্ত মজুরি খরচ করে তা রক্ষা করতে হচ্ছে। তারপরও মিলছে না শ্রমিক। অনেকের আবার শ্রমিক-সংকটে ধান পচে যেতে চলছে ফসলের মাঠেই।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, জেলার চার উপজেলায় রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১হাজার ৪শত ৬৫ হেক্টর জমিতে। এ মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের হয়েছে ৬১ হাজার ৪শত ৭০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ১০০৩০ হেঃ জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হয়েছে।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাগুরা শএুজিৎপুর, মঘীর মাঠ, বড়বিল, বেরইল, আমুড়িয়া, গঙ্গারামপুর আঠারখাদা, বেরইল, গজারিয়া বিলসহ শ্রীপুর আলাইপুর ধানের মাঠে দেখা যায় বৃষ্টির পানি জমতে।ঘুর্নীঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সারাদেশের মতো মাগুরা জেলায়ও গত ৩ ডিসেম্বর থেকে আকাশ কিছুটা মেঘলা ঘন কুয়াশাছন্ন হলেও ৪ ডিসেম্বর গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয় এবং ৫,৬ ডিসেম্বর থেকে ভারীবর্ষণ চলছে, আর তাতেই মাঠে পানি জমতে শুরু করে।
কৃষকেরা তাদের পাকা ধান কাটার শেষ মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তারা এখন চিন্তিত, কীভাবে সারা বছরের খাবার ঘরে তুলবেন? এ বছর এক বিঘা জমিতে আমন ধান করতে সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় ৩ হাজার টাকা বেড়ে ১৫ হাজারে ঠেকছে। আবার গো-খাদ্য বা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার্য বিচালি বা খড় পচে যাওয়ায় ক্ষতি আরও বেড়েছে অনেকটা। অনেকে বাড়তি শ্রমিক দিয়ে পানি থেকে বিচালির আশায় ধান তুলছেন বৃষ্টিতে ভিজে ।
চাউলিয়া ইউনিয়নের কৃষক শাহ আলম জানান, সাধারণত ৪৬ শতকে এক বিঘা জমিতে ৩০ মণ হারে ফলন হয়। সেখানে বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে যাওয়ায় ৮ থেকে ১০ মণের মতো ধান ঝরে যাবে। আবার বিচালিও পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা জানান, হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের কাটা ধানগুলো পানিতে ডুবে গেছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৪ থেকে ৫টি শ্রমিক বেশি লাগবে। যেখানে এক বিঘা জমিতে খরচ হতো ২ হাজার ৫০০ টাকা। সেখানে এখন অতিরিক্ত শ্রমিক লাগবে তিন-চার হাজার টাকা। আবার বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করার মত শ্রমীক মেলানো দায়, সময়মতো শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না বৃষ্টির কারণে।
সদর উপজেলার এক কৃষক জানান, তিন দিনের বৃষ্টিতে বিচালীর ক্ষতি হবে। এই ধান থেকে পরবর্তীতে বীজও করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় সরকার যদি কোনো অনুদান দেয়, তাহলে হয়তো কিছু উপকার হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী মাঠ পরিদর্শন করেনি বা দেয়নি কোন পরামর্শ।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, এ মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের হয়েছে ৬১ হাজার ৪শত ৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩০ হেক্টর রয়েছে হাইব্রিড জাতের। তিনি কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা স্বীকার করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।