পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মুরাদ হাসানকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল রিজভী বলেছেন, তাকে গ্রেফতার করে প্রচলিত আইনে তার বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, এই ধরনের ব্যক্তির রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। সে যে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলেছেন, সেজন্য তাকে রাজনীতি করার অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। তাকে সকল পর্যায় থেকেই সরিয়ে দিতে হবে। এবং প্রচলিত আইনে তার বিচার করতে হবে।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, হাট-বাজার, গণমাধ্যম-সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজপথের প্রতিবাদী মিছিল, সর্বত্রই যখন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে একাট্টা, তখন মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নিতে নতুন নতুন নাটক তৈরী করা হচ্ছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, অবৈধ সরকারের মন্ত্রিত্বের সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন বিএনপি তথা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় করাই ছিল তার একমাত্র কাজ। খিস্তিখেউড়ে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ তার সিনিয়রদের অতিক্রম করে দিনে দিনে দুর্বিনীত হয়ে উঠেছিল। ভব্যতা সভ্যতার সকল সীমা অতিক্রম করে মুরাদ জনগণের সামনে দানবের মতো আবির্ভূত হয়েছে। এরা আমাদের সমাজে বসবাস করবে, কিন্তু তাদের আচরণ, চলাফেরা ও কথাবার্তায় প্রতিফলিত হয় কুরুচি, বিবেকবর্জিত ও নারী বিদ্বেষ। তাহলে সেই সমাজে কত বিষাক্ত নৈরাজ্য তৈরী হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
তিনি বলেন, নারী বিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী মুরাদের মানসিকভাবে বিকৃত বক্তব্য সারা জাতিকে হতবাক ও স্তম্ভিত করেছে। উপর মহল থেকে আস্কারা পেয়ে অসুস্থ মানসিকতার একজন ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকলে ক্ষমতার অপব্যবহারে সে যে বিকারগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ সেটির একটি প্রমাণ। এরকম একজন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার আস্ফালনে দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীতে পরিণত হয়।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, তিনবারের সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন বিনা ভোটের সরকার। দেশের জনগণের আর বুঝতে বাকি নেই যে, প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রধানমন্ত্রীর প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া। আপনারা জানেন, মৃত্যুর সাথে লড়াই করা দেশনেত্রীর সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
‘বিদেশে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সূক্ষ্ম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে কিনা এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে জনমনে। বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী কারাগারে নেয়া হয়েছিল তখন তিনি কারাগারের ভেতরে হেঁটে গেছেন। কিন্তু আজ কেন তার এই ভয়ানক অবনতিশীল শারীরিক অবস্থা ? এ প্রশ্নের জবাব সরকার, কারাগার ও পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একদিন দিতেই হবে। আরেকটা প্রশ্নের জবাবও সরকারকে দিতে হবে। এখন দেশনেত্রীর জীবনকে নিঃশেষ করে দিতে শেখ হাসিনার প্রকাশ্য প্রতিহিংসার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে নানাভাবে।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। গত ৬ মে ২০২১ অর্থাৎ সাত মাস আগে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করা হয়েছিল। এতেই প্রমাণিত হয়-সরকার দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দিতে রাজী নয়, তিলে তিলে তাকে নিঃশেষ করাই এই মূহুর্তে আওয়ামী সরকারের কর্মসূচি। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা বলছেন-বাংলাদেশে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা না দিলে তাকে বাঁচানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার প্রশ্ন নিয়ে একটি অনাকাঙ্খিত ও অশোভনীয় বিতর্ক অযৌক্তিকভাবে দীর্ঘায়িত করছে আইনমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা। হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া একজন সত্তরোর্ধ্ব বর্ষিয়ান জনপ্রিয় জাতীয় নেত্রীর গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে সরকারের টালবাহানা সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই-বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে কেউ রেহায় পাবেন না। জনগণের টর্নেডো আন্দোলনে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবেন আপনারা। আপনাদের অস্তিত্ব জনগণের মন থেকে মুছে যাবে। তাই আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এই মূহুর্তে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ফেনীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক কাজে ফেনী সফররত মহিলা দল কেন্দ্রীয় সভাপতি বেগম আফরোজা আব্বাসকে ফেনীর কোন হোটেলে থাকতে দেয়নি সরকারের আজ্ঞাবাহী পুলিশবাহিনী। তিনি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ফেনীতে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল বরাদ্দের চেষ্টাকালে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয় আপনারা কোন হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। পুলিশের এই ধরণের ন্যাক্কারজনক আচরণের বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।