পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব কথাবার্তা বলেছেন তা অত্যন্ত জঘন্য, নিকৃষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছে, আমি যা কিছু করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই করছি এবং তিনি সব কিছু জানেন। আমি স্পষ্টভাবে প্রশ্ন করতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে-এই কথা সত্য কি মিথ্যা? আপনাকে জানাতে হবে। কারণ আপনি প্রধানমন্ত্রী- এদেশের মানুষের নিরাপত্তা, মর্যাদাকে রক্ষা করা এবং একই সঙ্গে মিডিয়ার উদ্দেশ্যে একজন মন্ত্রীর এই ভয়াবহ উক্তি করতে পারে তাহলে আপনার সরকারের অবস্থান কি? আমরা জানতে চাই। এর উত্তর দিতে হবে। কারণ আপনাকে জড়িয়ে এই কথা বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদ পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে বিএনপি এই দিনকে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানতে চাই যে, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কী এমন একটি সরকার নিয়ে এখানে এসেছেন যে সরকার আমাদের দেশের সমস্ত কৃষ্টি, সৌজন্যবোধ, ঐহিত্যগুলো আছে তাকে বিনষ্ট করে দেবে? রাজনীতিকে তো ধবংস করেছেনই। এখন ন্যূনতম মূল্যবোধগুলো আছে, আমাদের মা-বোনের প্রতি আমাদের সম্মান-শ্রদ্ধা সেটাও কী আপনি ধ্বংস করে দেবেন? আমরা তীব্রভাবে শুধু প্রতিবাদ নয়, আমাদের ঘৃণা প্রকাশ করছি, ধিক্কার জানাচ্ছি সেই সমস্ত বক্তব্যের জন্যে।”
তিনি বলেন, বর্ণবাদী কথা, নারী বিদ্বেষী কথা তাদের চরিত্র। আমার বোনদের অনুরোধ করবো আপনাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে ভূঁইফোর ডাক্তার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, একজন ভূঁইফোড় ডাক্তার ছিলো শুনেছি, সম্ভবত জামালপুরের সরিষাবাড়ীর। এটাও শুনেছি সে নাকী একসময় ছাত্রদল করতো। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রচার সম্পাদক ছিলো। পরবর্তিকাল সে ছাত্রলীগে যোগ দেয়। ধিক্কার দেই আমি তাকে।
এই পর্য়ায়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয়তলায় যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক গোলাম মাওলা শাহিন দাঁড়িয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করে বলেন, মুরাদ ছাত্রদল করেনি। এসময়ে মহাসচিবের সাথে বির্তকে জড়িয়ে পড়ে এই তরুন যুবদল নেতা। মির্জা ফখরুল তাকে থামিয়ে বলেন, ইউ ডোন্ট নো। তুমি জানো না। তারপরেও শাহিন পুনরায় মহাসচিবের সাথে তর্কে শুরু করলে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়। এই সময়ে মহাসচিবকে তাকে চুপ করতে বলে এবং নিচে নেমে মঞ্চে আসার জন্য বলেন। এই সময়ে মিলনায়তনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে মুহুর্র মুহুর্র শ্লোগান দিতে থাকে। এই সময়ে মঞ্চে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমানউল্লাহ, দক্ষিনের আবদুস সালাম হাত উঠিয়ে তাকে চুপ করতে বলেন।
বিএনপি মহাসচিব এই পর্যায়ে সকলকে শান্ত হয়ে বসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, এক সময়ে সে ছাত্রদল করেছে, পরবর্তিতে ছাত্রলীগের নেতা হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য আমাদের এই রকম একটা ছেলে ওই সময়ে ছাত্রদলে ছিলো। বর্তমান সরকারকে হটাতে নব্বইয়ের মতো সকল গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম।
হাসপাতালে চিকিতসাধীন খালেদা জিয়াকে দ্রæত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। আইনের কথা বলছেন। আইন বাঁধা নয়, বাঁধা হচ্ছে সরকার।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের অধঃপতন যখন হয় কিভাবে হয় ..। ফুটপাত থেকে ধরে এনে মন্ত্রী বানিয়েছে। বাংলাদেশের লোক ফুটপাতের মন্ত্রী দেখতে চায় না, বাংলাদেশের লোক চোর-বাটপার দেখতে চায় না, বাংলাদেশের ঘুষখোর লোক মন্ত্রী দেখতে চায় না, বাংলাদেশের লোক তাদের অশ্রাব, অকথ্য কথা-বার্তা শুনতে চায় না।
তিনি বলেন, নতুন একটা জুটছে। সে এখন বিএনপি, বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অশ্রাব্য কুটক্তি করছে, নেত্রীর পরিবার সম্পর্কে তারেক রহমানের পরিবার সম্পর্কে অশ্রাব্য কটুক্তি করছে। এগুলো সহ্য করা যায় না, আমরা সহ্য করবো না। এর প্রতিবাদ করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই সমস্ত নোংরা লোকজনকে মন্ত্রী সভায় স্থান নিয়ে বাংলাদেশের সচিবালয়কে অপবিত্র করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারকে বলতে চাই, এতো মারপ্যাঁচ না করে আপনারা সোজাসুজি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেবেন কি দেবেন না। আমরা সাফ সাফ কথা জানতে চাই, এখনই জানতে চাই। আপনাদের এতো কথা শুনতে চাই না। নইলে দেশের জনগণ পরবর্তি এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে সুচিকিৎসার জন্য নেবে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় নব্বইযের সাবেক ছাত্র নেতার মধ্যে আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন মনি, খন্দকার লুতফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, য্বু দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মুস্তাফিজুল করীম মজমুদার, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।