Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরম শঙ্কায় প্রান্তিক আলু চাষি

মুন্সীগঞ্জে বীজ-সারের মূল্যবৃদ্ধি

মঞ্জুর মোর্শেদ, মুন্সীগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

মুন্সীগঞ্জে চলতি আলু মৌসুমে ৩৭ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিকটন। বাক্স বীজ আলু ও সারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আলুর বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষক আলু চাষে আবার আগ্রহী হয়ে উঠেছে। চরম শঙ্কায় রয়েছে গত বছরের মতো আলুর ন্যায্য মূল্য না পাবার। এখানে প্রান্তিক চাষিরা মধ্য স্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেটের কবলে পরে আলু মৌসুমের শুরুতে আলুর ন্যায্য মূল্য পায় না। জেলায় প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে আলু বীজ লাগানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ হলো দেশের প্রধান আলু উৎপাদন অঞ্চল। দেশের প্রায় এক পঞ্চমাংশ আলু এখানে উৎপাদন হয়। এখানকার প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করে আর ফায়দা লুটে মধ্যস্বস্তভোগীরা। প্রতিবার প্রান্তিক চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রীয় হয়ে উঠে।
মহাজনদের নিকট থেকে উচ্চ হারে ঋণ এবং জমির মালিকের নিকট কম মূল্যে জমিতে আলু বিক্রির শর্তে ঋণ নিয়ে আলুচাষ করে থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আলু মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৮০৫ হেক্টর, টংগীবাড়িতে ৯ হাজার ৯শ’ হেক্টর, শ্রীনগরে ২ হাজার ২শ’ ৬০ হেক্টর, সিরাজদিখানে ৯ হাজার ৩শ’ ৬০ হেক্টর, লৌহজেং ৪ হাজার ১শ’ ১০ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ২ হাজার ৪শ’ ৬৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সরকারি হিসেবে ১১ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন। প্রকৃত উৎপাদন হবে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন। গত বছর জেলায় ৩৮ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। চলতি মৌসুমে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন বীজ আলুর প্রয়াজন রয়েছে। জেলার ৬৫টি হিমাগারে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন বীজ সংরক্ষন করা হয়। এ ছাড়া ২ হাজার মেট্রিক টন বীজ এখানের সরকারী হিমাগারে সংরক্ষন করা হয়। বিএডিসি এবছর প্রায় ১৫ শত মেট্রিক টন বীজ আলু বিক্রি করবে।
আলু চাষি মাসুদ জানায়, বেসরকারিভাবে আমদানী করা হল্যান্ডের ডায়মন্ড বীজ আলুর দাম এবার দিগুন হয়েছে। গত বছর যে বাক্সের দাম ছিল সাড়ে ৪ হাজা থেকে ৫ হাজার টাকা এবার সে বীজের দাম হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। আলু চাষি জিয়াউর রহমান জানান দেশী বীজ আলুর দাম এবার বৃদ্ধি পায়নি।হল্যান্ডের বীজ আলু ও সারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আলুর উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়ে ঘÐা প্রতি খরচ পরেছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। আল চাষি ফিরুজ মিয়া জানান, প্রতি বছর আলু মৌসুমে এখানে সারের সংকট দেখা দেয়।এবছর ও এমপিও সার সংকট দেখা দিয়েছে। শঙ্কায় রয়েছে গত বছরের মতো এবারও আলুর ন্যায্য মূল্য না পাবার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ পরিচালক জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলায় প্রধানত ডায়মন্ড আলু চাষ করা হয়। এখানকার কৃষক প্রধানত ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করে।এ জাতের আলু দীর্ঘদিন সংরক্ষন করা যায় না।
কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কাার্ডিনাল আলু লাগানোর জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ জাতের আলু দিয়ে বিভিন্ন ধরনের চিপিস তৈরি করা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ