Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যশোরে একদিনে ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড

যশোর থেকে শাহেদ রহমান | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৫ পিএম | আপডেট : ৬:৩৫ পিএম, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ’র প্রভাবে সারা দেশের ন্যায় যশোরেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সোমবার ও মঙ্গলবার যশোরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ১১৮ মিলিমিটার যা দেশে সর্ব্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। তারা বলছেন, মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাত কমবে। এদিকে টানা তিন দিন যশোরে বৈরী আবহাওয়ায় বিরাজ করায় স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে কৃষকের পাকা আমন ধানের ক্ষতি হয়ে গেছে। অধিকাংশ কৃষকের ধান বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টি যদি দীর্ঘ হয় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

যশোরে বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ’র প্রভাবে শনিবার থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আজও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। মঙ্গলবারও আবহাওয়া একই থাকবে। ৮ ডিসেম্বর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। টানা বৃষ্টির কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনে ব্যাঘাত ঘটছে। তবে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত যশোর জেলায় ১১৮ মিলিমিটার যা দেশের সর্ব্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন জেলায় সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২২ সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ছিলো ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালও দেশের সর্ব্বোচ্চ বৃষ্টিপাত যশোরে ছিলো ৮২ মিলিমিটার। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাতে সঙ্গে শীতের তীব্রতাও বাড়বে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।

এদিকে, তিন দিন ধরে টানা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সকাল থেকে খেটে খাওয়া মানুষকে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। যশোর সদর পালবাড়ি গ্রামের ভ্যান চালক নাজমুল বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে বৃষ্টি ও শীতের কারণে ভ্যান চালাতে পারেনি রোজগারও নাই। কোনো আয় না থাকায় অনেক কষ্টের মধ্যে আছি। ওই এলাকার রওশনারা বেগম নামের এক নারী বলেন, বৃষ্টি ও শীতের কারনে আমরা টিনের ঘরে বসবাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া মাঠে কাটা ধান ভিজে অনেক ক্ষতি হয়েছে। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সরসকাঠি গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, দুদিন আগে ১২ কাটা জমির আমন ধান কেটে রেখেছি। কিন্তু দুদিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়ে গেল। এই বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে ধানের অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন এই কৃষক। সদরের চুড়ামণকাটি অঞ্চলের কৃষক ইয়াদুল ইসলাম জানান, এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে ধান কাটা হয়ে গেছে। বিচালি রক্ষার জন্য মাচা করা হয়েছে। তবে মাঠের সবজির ক্ষতি হবে। এই বিষয়ে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, যশোর জেলার কৃষকরা তাদের আমন ধান ঘরে নেওয়া শেষ পর্যায়ে। এই বৃষ্টিতে আমন ধান ঘরে তুলতে বৃষ্টি কিছুটা বাগড়া দিয়েছে। যদি এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে ধানের কিছুটা ক্ষতি হবে। সেই সাথে শীতকালীন সবজি, মসূর ও সরিষার ক্ষতি হবে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারি অপু জানান, বৃষ্টির পানি যাতে পৌর এলাকায় না জমে সেজন্য ড্রেনগুলো পরিষ্কার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ