Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে কফিন মিছিল ও ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন

নিরাপদ সড়কের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৮ এএম

নিরাপদ সড়কসহ ৯ দফা দাবিতে গতকাল রোববার রাজধানীর শাহবাগে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডাকা প্রতীকী লাশের মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে। তবে কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে থেকে প্রায় শেষ পর্যন্ত শাহবাগ এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিলেন।
পুলিশের এই উপস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা ‘সড়ক হত্যার শিকার ব্যক্তির প্রতীকী লাশ’ নিয়ে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা পর্যন্ত মিছিল করেন। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বালন ও প্রতিবাদী গানের আসর করবেন তারা।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল দুপুর ১২টায় শাহবাগে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে ৯ দফা দাবিতে প্রতীকী লাশের মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার কিছুক্ষণ আগে থেকেই ৩৫-৪০ পুলিশ সদস্য শাহবাগ মোড়ে রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তা থেকে প্রতীকী লাশ নিয়ে মিছিল বের করেন ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য শিক্ষার্থীদের মিছিলকে অনুসরণ করছিলেন।

মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে মিনিট দুয়েক অবস্থান করলে পুলিশ সদস্যরা পুরো মিছিলটিকে ঘিরে রাখেন। পরে মিছিলটি টিএসসি এলাকার দিকে যাত্রা করে। এ সময় শাহবাগ পুলিশ বক্সের সামনে মিছিলের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিকদেরও ধাক্কা দেন অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ। পরে মিছিল নিয়ে টিএসসি এলাকায় যান শিক্ষার্থীরা। মিছিলে ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘শ্রমিক-ছাত্র ভাই ভাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘জাস্টিস, জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আইন করে হাফ পাস, দিতে হবে দিয়ে দাও’ প্রভৃতি বলে সেøাগান দেওয়া হয়।

পরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা মোহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। দাবি আদায়ে আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি দিয়ে আমরা নিরাপদ সড়ক চাই লিখব। সঙ্গে থাকবে প্রতিবাদী গানের আসরও। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করেই আমরা ফিরব।
ইনজামুল হক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল ১৮টি জেলায় একযোগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বরিশালে কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে।

এদিকে, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর রামপুরা ব্রিজে দাঁড়িয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার একই স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাঈম হাসান ও মাইনুদ্দিন ইসলামের স্মরণে শোক জানাতে কালো ব্যাজ ধারণ ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন তারা।
ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। ১১ দফার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজে দাঁড়িয়ে ‘লুটপাটের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্র হত্যার আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও,’ ‘গুজব ছড়িয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’ সেøাগান দেন।

শিক্ষার্থীদের ব্যঙ্গচিত্রে দেখা গেছে, বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা মারা যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করছেন, সরকারকে ভক্তি করছেন বাসমালিকেরা আর পুলিশ বলছে কিছু দেখিনি, কিছু শুনিনি, কিছু বুঝিনি। আরেকটি ব্যঙ্গচিত্রে দেখা গেছে, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের দড়ি বাসমালিকদের হাতে, প্রশাসন ঘুমাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা রাজপথে আন্দোলন করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ