রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
তৃতীয় ধাপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের কাজে বাধা, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ অবরুদ্ধ রাখার ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক ৪ মামলায় পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। নির্বাচনের পরদিন ২৯ নভেম্বর পৃথক পৃথক মামলা করেন সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রের ৪ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাগণ। এ ৪ মামলায় ১০ জন নামীয় ৫৮০ থেকে ৭৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করায় গ্রেফতার আতঙ্কে রাতে ৪ গ্রামের পুরুষ বাড়িতে ঘুমায় না।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই ৪ গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, দিনে মাঠে কাজ করি আর রাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকি। ভোট চলাকালীন সময় উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বৌলজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১২ রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। এসময় ২ জন পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়। এঘটনায় ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বানিজ মিয়া থানায় মামলা করে। মামলার এজাহারে ২ জন নামীয় এবং ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর চেংমারী গ্রামের মৃত আইজল হকের ছেলে জবেদ আলী (৫৫) ও পুটিমারী গ্রামের মৃত কবীর হোসেনের ছেলে মনজু মিয়া (৪০)। অন্যদিকে কঞ্চিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপারসহ ৬টি ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়। এ নিয়ে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আশরাফুজ্জামান ৬ জনকে নামীয় এবং ৮০ থেকে ৯০ জনকে অজ্ঞানামা আসামি করে মামলা করে। ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই হওয়া রৌলজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাললয় ভোট কেন্দ্র ও কঞ্চিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করা হয়েছে। ভোট গণনা শেষে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহনকারি কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ক্ষতিসাধন করে স্থানীয়রা। এনিয়ে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আব্দুর রউফ মিয়া একজন নামীয় এবং ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে।
অপরদিকে মধ্য হাতিবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় ভোট কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর করে স্থানীয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভোটার। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জাহাঙ্গীর আলম থানায় মামলা করে। এতে একজন নামীয় এবং ১০০ হতে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এনিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেকান্দার আলী জানান, যে দুই কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছে সে দুই কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ জানান, এ ৪ মামলা করেছেন সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারগণ। শ্রীপুর ইউনিয়নের বৌলজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে ছিনতাই হওয়া ৬ টি ব্যালট বাক্সের মধ্যে ৫টি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করা হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতার মামলায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আসামি গ্রেফতার করা হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউ যেন হয়রানি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। যারা ঘটনার সাথে জড়িত নিশ্চিত হওয়ার পর শুধু তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।