পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতেও করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ওমিক্রন শনাক্ত দেশের সংখ্যা ২৬-এ দাঁড়াল। এর আগে বতসোয়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরাইল, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়ে ও সউদী আরবে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিক্যাবল ডিজেসেস (এনআইসিডি) জানায়, দেশটিতে বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৮ হাজার ৫৬১ জন সংক্রমিত হয়েছে। দেশটিতে এখন সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। বিশ্বে আশার সঞ্চার করে জিএসকে কোভিড ড্রাগকে অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এ নিয়ে গত বুধবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করেন ফাউসি। তিনি জানান, ওমিক্রনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি গত ২২ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। ২৯ নভেম্বর কোভিড পজিটিভ হন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। ওমিক্রনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি এখন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সবার করোনার পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। ফাউসি জানান, ওই ব্যক্তি করোনার পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। তার শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।
জিন বিন্যাস করে ওই ব্যক্তির ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় ক্যালিফোর্নিয়া ও সানফ্রান্সিসকো জনস্বাস্থ্য বিভাগ। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া এ জিন বিন্যাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) পরে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে।
ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে আক্রান্ত দুই ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দিয়েছে। ভারতে এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত শনাক্তের ঘটনা এটিই প্রথম। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উভয় আক্রান্ত ব্যক্তি কর্ণাটক রাজ্যে শনাক্ত হয়েছেন। তারা দুজনেই পুরুষ এবং বয়স ৬৬ ও ৪৬ বছর। আক্রান্ত দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত এবং পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লাভ আগারওয়াল বলেন, ওমিক্রন শনাক্ত নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু সচেতনতা অবশ্যই জরুরি। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, মানুষের ভীড় এড়িয়ে চলুন। গোপনীয়তা রক্ষা স্বার্থে আক্রান্ত দুজনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আগারওয়াল।
একদিনে দ্বিগুণ আক্রান্ত বেড়েছে দ. আফ্রিকায়
মারাত্মক পরিবর্তিত করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। প্রথম শনাক্ত হওয়ার চার সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বুধবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিক্যাবল ডিজেসেস (এনআইসিডি) জানায় দেশটিতে বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৮ হাজার ৫৬১ জন সংক্রমিত হয়েছে। দেশটিতে এখন সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন।
এনআইসিডি জানিয়েছে, ওমিক্রনের প্রোফাইল এবং মহামারির প্রাথমিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে এ ভ্যারিয়েন্টটি কিছু প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়াতে পারে, কিন্তু প্রচলিত টিকা এখনও মারাত্মক অসুস্থতা এবং মৃত্যু থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকান সংস্থাটি জানিয়েছে, গত মাসে জিনগতভাবে বিশ্লেষণ করা নমুনার ৭৪ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এক সপ্তাহ আগে ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। যে নমুনায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া যায় তা দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল গৌতেং প্রদেশ থেকে ৮ নভেম্বর সংগ্রহ করা। গত মঙ্গলবারের তুলনায় দেশটিতে বুধবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে।
জিএসকে কোভিড ড্রাগকে অনুমোদন দিল যুক্তরাজ্য
ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রকেরা বৃহস্পতিবার একটি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ড্রাগ অনুমোদন করেছে। যারা গুরুতর কোভিড-১৯ সংক্রমণে ভুগছেন এবং যাদের জীবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে তাদের চিকিৎসার জন্য এটি কার্যকর হবে। শুধু তাই নয়, ওষুধ নির্মাতারা বলেছে যে, এটি নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও কার্যকর। অ্যান্টিবডি চিকিৎসা, সোট্রোভিম্যাব, ‘মৃদু থেকে মাঝারি করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে নিরাপদ এবং কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে, বিশেষ করে যারা গুরুতর রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে’, বলেছেন ওষুধ এবং স্বাস্থ্যসেবা পণ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা (এমএইচআরএ)। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) একটি বিবৃতিতে বলেছে যে, প্রি-ক্লিনিকাল ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, ওষুধটি ‘নতুন ওমিক্রন সার্স-কোভ-২ ভ্যারিয়েন্টের মূল মিউটেশনের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম’। সেই সঙ্গে সংস্থার দাবি, আজ অবধি সোট্রোভিমাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দ্বারা অনুমোদিত কোভিডের সবরকম ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে নিজের কার্যকারিতার নিদর্শন রেখেছে। সমস্ত ওমিক্রন মিউটেশনের সংমিশ্রণের বিরুদ্ধে সোট্রোভিমাবের নিরপেক্ষ কার্যকলাপ নিশ্চিত করতে পরীক্ষা চলছে, যার ফল ২০২১ এর শেষ নাগাদ হাতে চলে আসতে পারে। এমএইচআরএ অনুসারে, কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই ওষুধের একটি ডোজ হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি ৭৯% শতাংশ কমাতে সক্ষম। সোট্রোভিমাব ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক বৃটেনের সংস্থা জিএসকে এবং ভির বায়োটেকনোলজির তৈরি। এটি একটি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, এক ধরনের প্রোটিন যা করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি শরীরের কোষে ভাইরাসের প্রবেশ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কার কথা শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরা
দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কেবল মৃদু অসুস্থতা তৈরি করছে কিনা তা নির্ধারণ সময় এখনও আসেনি। বুধবার দেশটির আইনপ্রণেতাদের সামনে এক উপস্থাপনায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের এ ধরনটির সত্যিকার প্রভাব বর্তমানে নির্ধারণ করা কঠিন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এই ভ্যারিয়েন্টে মূলত আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণেরা, যাদের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার সক্ষমতা বেশি। এছাড়া ভ্যারিয়েন্টটিতে সংক্রমিত হওয়ার কয়েক দিন পরেই অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
এনআইসিডি’র পাবলিক হেলথ সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড রেসপন্স বিভাগের প্রধান মাইকেল গ্রুমি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সংক্রমণ মূলত তরুণ বয়স গ্রুপের মধ্যে দেখা গেছে কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি বয়স্ক বয়স গ্রুপের মানুষেরাও এতে আক্রান্ত হচ্ছেন।’ আইনপ্রণেতাদের তিনি বলেন, ‘আমরা আরও আশা করছি তাদের মধ্যে আরও তীব্র জটিলতা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেখা নাও দিতে পারে।’
গত ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ও বিজ্ঞানীরা নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের কথা জানায়। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এটির নাম দেয় ওমিক্রন। দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লেসেলস বলেছেন, এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের রোগের তীব্রতা কম হচ্ছে কারণ ইতোমধ্যে টিকা নেওয়া বা অন্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়া অনেক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, এই ভাইরাস ও ভ্যারিয়েন্ট যদি কার্যকরভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ভাইরাসটি টিকা না নেওয়া এবং সুরক্ষাবিহীন মানুষকেও আক্রান্ত করবে, তাদের রোগের তীব্রতা বাড়া আশঙ্কা বেশি। সূত্র : টিবিএস নিউজ, ব্লুমবার্গ, সিএনএন, এনডিটিভি, বিবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।