বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকারি কর্মচারিদের জন্য অবিলম্বে ৬০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান, নতুন জাতীয় বেতন কমিশন গঠন, চিকিৎসা, যাতায়াত ও অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতি। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের হলরুমে সমিতির কেন্দ্রিয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির এক যৌথ সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের ডাক দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমান।
যৌথ সভায় সমিতির মহাসচিব মোঃ ছালজার রহমান বলেন, ২০১৫ তে সর্বশেষ (৮ম) জাতীয় বেতনস্কেল প্রদানের পর চিকিৎসা ব্যয়সহ দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের কর্মচারিরা হতাশাগ্রস্থ ও দিশেহারা। বাৎসরিক ৫% হারে বেতন বৃদ্ধি হলেও তা জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে একেবারেই সামঞ্জস্যহীন। এমতাবস্থায় অবিলম্বে ৯ম জাতীয় বেতন কমিশন গঠন ও বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন এবং ৯ম জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর না করা পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য ৬০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান ও কমপক্ষে ৩,০০০/- টাকা চিকিৎসা ভাতাসহ, যাতায়াত, শিক্ষা সহায়ক, টিফিন ভাতা বৃদ্ধি আজ সময়ের দাবী। একইসাথে তিনি শতভাগ পেনশন চালু করার দাবী জানান।
বিশেষ জরুরি সভায় বক্তব্য রাখছেন সভার প্রধান অতিথি, সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ। উপবিষ্ট ছিলেন মোঃ ছালজার রহমান, মহাসচিব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, মোঃ লুৎফর রহমান, সভাপতি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মাহফুজুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সংবাদ সম্মেলন, মানব বন্ধন, লিফলেট বিতরণ, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণের নিকট স্মারকলিপি প্রদান। আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, আমরা সবসময়ই চেয়েছিলাম সরকার ১৯৭৩ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত বেতন স্কেলের ১০ ধাপের জাতীয় বেতন ও চাকুরি কমিশনের আদর্শিক ধারা অনুসরণ করে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন কাঠামো নির্ধারণ এবং চাকরি ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ-পদবীতে বিরাজমান বৈষম্যগুলো নিরসনের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবেন। তিনি আরও বলেন, ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন এর নেতৃত্বে গঠিত ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত ও সুপারিশকৃত (জুলাই ২০১৫) বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন না করে সচিব কমিটি কর্তৃক পুনঃগঠিত বেতন কাঠামো ঘোষণা ও বাস্তবায়নকালে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তাদের (১ম থেকে ১০ম গ্রেড পর্যন্ত) বেতন-ভাতাদি তাদের প্রস্তাবিত পর্যায়ে বৃদ্ধি করা হলেও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের (১১ গ্রেড থেকে ১৬ গ্রেড পর্যন্ত) তুলনামূলকভাবে অনেক কম বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধি করা হয়। অপরদিকে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তাদের তুলনায় তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ অত্যন্ত কম হওয়া সত্বেও টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের সুযোগ থেকেও কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হয়। এক্ষেত্রে সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতির সুযোগসৃষ্টির কথা বলেন। সভাপতির বক্তব্যে জনাব লুৎফর রহমান আরও উল্লেখ করেন, সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য দাবী নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা দুইবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি যে, চলমান সময়ে একজন কর্মচারীর ৬জন সদস্যের পরিবারে জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহের জন্য ন্যুনতম ৪৯,৯০০ সর্বমোট বেতন নির্ধারণ করা জরুরি। আশাকরি কর্মচারীবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের এ চাওয়াটুকু সদয় দৃষ্টিতে দেখবেন।
সভায় উপিস্থিত নেতৃবৃন্দ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য নিরসনকল্পে বাংলাদেশ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয় বহির্ভূত দপ্তর-সংস্থায় কর্মরত প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, স্টেনোগ্রাফার, ক্যাটালগার, কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, হিসাবরক্ষকসহ সমমানের সমমর্যাদার কর্মচারীদের পদ-পদবী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্বপদে দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা ও বেতনস্কেল প্রদানের জন্য জোর দাবী জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।