বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল মহানগরীতে যানবাহন চলাচলে নিয়ম-শৃঙ্খলা ক্রমে বিলুপ্ত হতে চলেছে। আজ পর্যন্ত কোন সুষ্ঠু ও যাত্রী বান্ধব গন পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে যেসব নগর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তারও প্রায় সবই বিধি বিধানের বাইরে। ২০০২ সালে চালু করা মহানগর দ্বিতল বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেনা সমর্থিত কথিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়। ফলে নগরবাসীর জন্য সহনীয় যাত্রী ভাড়াও ইতোমধ্যে প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে। অতি সম্প্রতি ডিজেলের মূল্য ২৩ ভাগ বৃদ্ধির অজুহাতে এ নগরীতে এলপি গ্যাস চালিত থ্রীÑহুইলারের ভাড়া বেড়েছে ৫০ ভাগ। করোনা মহামারীর অজুহাতে ব্যাটারী চালিত রিক্সার ভাড়াও গত দেড় বছরে দ্বিগুন বেড়েছে। আর এসব অবৈধ রিক্সার জোয়ারে প্যাডেল চালিত বৈধ রিক্সা ক্রমে বিলুপ্ত হওয়ায় নগরবাসীর দূর্ভোগ আরো বেড়েছে।
গত দুবছর ধরে সিটি করপোরেশন ব্যাটারী চালিত ইজি বাইকের লাইসেন্স নবায়ন করছে না। ফলে পুরো নগরী যুড়ে অবৈধ ইজিবাইকেরও ছড়াছড়ি। আর এ সুযোগে কতিপয় ট্রাফিক পুলিশ এসব ইজিবাইক আটকে নানাভাবে অবৈধ সুযোগ নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এনগরীতে কোন অযান্ত্রিক যানবাহনের চালকদেরও সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স নেই।
সব মিলিয়ে চরম অব্যবস্থা অনিয়মের মধ্যে দিয়ে চলছে বরিশাল মহানগরীর পরিবহন ব্যবস্থা। আর পদে পদে এর খেশারত দিচ্ছেন নগরবাশী। পথে নামলেই নানাভাবে নাকাল হতে হচ্ছে বলে সুস্পষ্ট অভিযোগ নগরবাসীর। নগরীর প্রায় ৯০ভাগ মানুষ পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট। ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সার দাপটে মহানগরীর সর্বত্র দূর্ঘটনার ঝুকি বেড়েছে কয়েকগুন। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থ্যােপেডিক্স ওয়ার্ডে দূর্ঘটনাজনিত রোগীর একটি বড় অংশ যুড়েই ব্যাটারি চালিত রিক্সায় দূর্ঘটনার শিকার।
ইতোপূর্বে নগর ভবন থেকে ইস্যুকৃত প্রায় সাড়ে ১২ হাজার প্যাডেল চালিত রিক্সার বেশীরভাগেরই লাইসেন্স এখন নবায়ন হচ্ছে না। নগরীতে এধরনের কত রিক্সা চলমান আছে তার কোন পারিসংখ্যান নগর ভবনের কাছে না থাকলেও সংখ্যাটা তিন হাজারের বেশী নয় বলে মনে করছেন নগরবাশী। তবে চলতি অর্থ বছরে মাত্র ৫ হাজারের মত রিক্সার লইসেন্স নবায়ন হয়েছে বলে নগর ভবনের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
কিন্তু ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সা পুরো নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ২০১৯ সালে এসব রিক্সা বন্ধে ট্রাফিক বিভাগ ও নগর ভবন উদ্যোগ নিলে চালকরা রাজনৈতিক আশ্রয়ে আমরন অনশন করে এক বছরের জন্য সদর রোড বাদে চলাচলের সম্মতি আদায় করে রাজপথ ছাড়ে। কিন্তু সে একবছর পার হয়ে আরো বছর খানেক অতিক্রম হতে চললেও করোনা সহ নানা কারণে সবকিছু চাপা পরার সুযোগে নগরী যুড়ে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সার ছড়াছড়ি। তবে গত এক বছরে ভাড়াও বেড়েছে দ্বিগুন। উপরন্তু এসব অবৈধ রিক্সার বেপরোয়া চলাচলে নগরীতে দূর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। পঙ্গু হচ্ছে অগনিত মানুষ।
এমনকি সিটি করপোরেশন থেকে ইস্যু করা আড়াই হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স নবায়ন না করায় এখন নগরীতে এ ধরনের প্রায় দ্বিগুন যানবাহন চলছে। কোথাও কেউ দেখার নেই। অথচ যাত্রী ও পরিবেশ বান্ধব এবং নিরাপদ এসব যানবাহন যাত্রী বান্ধব বলে ইতোপূর্বে বিবেচিত হলেও তা কোন নিয়ম শৃংখলার মধ্যে নেই।
এদিকে নগরী যুড়ে এলপি গ্যাস চালিত ইজিবাইকের লাইসন্সে প্রদান করছে বিআরটিএ। কিন্তু ঐসব যানবাহনের ভাড়া ও রুট নির্ধারন কোন নিয়ম শৃংখলা সিটি করপোরেশন সহ কারো হাতে নেই। এমনকি এনগরীতে এলপি গ্যাস চালিত স্কুটারও চলছে বিআরটিএ’র লাইসেন্সে। কিন্তু সেখানেও নগর ভবন সহ বিআরটিএ বা জেলা প্রশাসনের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। কতিপয় প্রভাবশালী চাঁদাবাজ রুট ও ভাড়া নির্ধারন সহ এনগরীর বেশীরভাগ গন পরিবহন নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিজোগ রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ, বিআরটিএ বা নগর ভবনের কেউ কিছু জানেন না। এমনকি অতি সম্প্রতি সরকার ডিজেলের দাম ২৩% বৃদ্ধির পরে এ নগরীতে এলপি গ্যাস চালিত ইজি বাইজক ও স্কুটারের ভাড়া ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনকি অর্ধেক পথেও এখন পূর্ণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অসহায় নগরবাসী এসব বিষয়ে অভিযোগ করারও কোন কতৃপক্ষ খুজে পাচ্ছেন না।
এসব বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোঃ ফারুক জানান, মঙ্গলবার নগর পরিষদের সভায় নগরীর গন পরিবহনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সভায় নগরীর পরিবহন ব্যবস্থায় নিয়মÑশৃংখলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের বিষয়টিও আলোচিত হতে পারে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।