পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কর্মহীন, ভাগ্যান্বেষী, বিদ্যান্বেষীসহ নানা শ্রেণির মানুষের স্বপ্ন গড়ার শহর ঢাকা। সেজন্য দিন দিন এই নগরে মানুষ বাড়ছিল জ্যামিতিক হারে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি সেই মানুষদের স্বপ্ন যেন ভাঙতে শুরু করে। আয় রোজগার কমে এমনকি কর্ম হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এর মধ্যে মরার উপর খাড়ার গাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। ফলে হতদরিদ্ররা হয়ে পড়েছে আরও অসহায়। জীবিকার এমন সঙ্কট দেখা দেয়ায় ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। তাতে রাজধানীর অনেক বাড়িতে ভাড়াটিয়া সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সে জন্য এখন বাড়িতে বাড়িতে ঝুলছে বাসাভাড়া দেয়ার বিজ্ঞাপন ‘টু লেট’।
জানা গেছে, দেশের কর্মসংস্থানের সিংহভাগ রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন কাজের সন্ধানে রাজধানীমুখী হতেন। প্রতিদিনই কর্মসংস্থান বা ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ঢাকায় আসত মানুষ। এভাবে দেড় হাজার বর্গকিলোমিটারের এ নগরীর বাসিন্দার সংখ্যা দাঁড়িয়ে যায় প্রায় দুই কোটি, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশই ভাড়া বাসার বাসিন্দা।
এ ভাড়াটিয়ারা বছরের পর বছর বাসার উচ্চ ভাড়া দিয়ে আসছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে বাসা ভাড়ার চিত্রও। করোনার কারণে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অনেক মানুষের শ্রেণি কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে অনেক মানুষ হতদরিদ্র হয়েছেন, ফলে আগের ভাড়ার ভার বইতে পারছেন না তারা, ফলে ছেড়ে দিচ্ছেন বাসা, ছেড়ে দিচ্ছেন ঢাকাও। গতকাল মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে দেখা যায় জিনিসপত্রসহ কয়েকটি পিকআপে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন কয়েকটি পরিবার। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরে যানবাহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। জ্বালানি তেল ও যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব পড়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর। বেড়ে যায় সব নিত্যপণ্যের দাম। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকেই টিকতে না পেড়ে ঢাকা ছাড়ছেন।
ঢাকা ছেড়ে যাওয়াদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি করে শিমুলিয়া ঘাটের সীমিত ফেরি চলাচল। এ রুটে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কে-টাইপ ৪টি ফেরি দিয়ে সীমিত যানবাহন পারাপার করায় প্রতিদিনই ঘাট এলাকায় দীর্ঘসময় আটকা পড়ে থাকছে শত শত যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি।
নিশি বেগম নামের এক যাত্রী জানান, তিনি সাভারে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। করোনা পরবর্তী সময়ে তার চাকরি চলে যায়। স্বামীর একার আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। তাদের আর ঢাকায় বসবাস করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ঢাকার বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, সাভার থেকে গতকাল ঘাটে আসছি, শিবচর যাবো। বাসাবাড়ির মালামাল ও পরিবার নিয়ে এখনো ঘাটে সিরিয়ালে আছি।
মিজানুর রহমান নামে অপর যাত্রী জানান, ফ্যামিলি নিয়ে পিরোজপুর চলে যাচ্ছি। বাসাবাড়ির মালামাল নিয়ে কেনো যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় ব্যাটারির ব্যবসা করতাম। ব্যবসা মন্দা, আয় কমে গেছে, জিনিসপত্রর দাম বেশি তাই ফ্যামিলি নিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছি। মেয়ে ও নাতী নিয়ে শীতের মধ্য সারা রাত আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডবিøটিসি) শিমুলিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত হোসেন জানান, সীমিত ফেরি চলাচলের কারণে প্রায়ই দিনশেষে কোনো দিন অর্ধশতাধিক, কোনো দিন শতাধিক যানবাহন ঘাটে আটকা পড়ছে। ফলে আটকে পড়া গাড়িগুলোকে পরের দিনে ফেরি পারাপারের জন্য হয় ঘাটেই রাত কাটাতে হচ্ছে, নয়তো ফিরে যেতে হচ্ছে ঢাকায়। এর সমাধানে হয় ফেরির সংখ্যা বাড়াতে হবে, নয়তো ফেরি চলাচলের সময় বাড়ানো প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।