পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ সত্তে¡ও ২০৩০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা ভোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই অবস্থান ধরে রাখতে পারবে বলে মনে করেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেছেন, উত্তরণের পর বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতার পাশাপাশি নিজেদের ‘ঘর গোছানো’ গুরুত্বপূর্ণ। পণ্যের উৎপাদনশীলতা ও বহুমুখীকরণ করতে হবে। আর সে জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোতে সংস্কার করতে হবে। অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত গতকালের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব এসব কথা বলেন। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডবিøউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের আসন্ন সম্মেলনকে সামনে রেখে ইআরএফ এ কর্মশালার আয়োজন করে।
আগামী ২৯ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শুরু হচ্ছে ডবিøউটিওর চার দিনব্যাপী ১২তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। একে বলা হচ্ছে এমসি-১২। কর্মশালায় এমসি-১২তে বাংলাদেশ কোন কোন বিষয় উত্থাপন করবে, কী ধরনের ফলাফল আশা করছে, দরকষাকষির পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক কারিগরি অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডবিøউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ২০২৬ সালের পরও বাংলাদেশ এলডিসি সুবিধা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আসন্ন ডবিøউটিও সম্মেলনে উত্তরণের পরে ৬ থেকে ৯ বছর যেন একই সুবিধা অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে এলডিসি দেশগুলো একমত হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এ বিষয়ে ইতিবাচক ঘোষণা আসবে। যদি কোনো কারণে ঘোষণা না আসে, তাহলে বাংলাদেশ এই আলোচনা জিইয়ে রাখবে। অন্যদিকে জিএসপি সুবিধা, ট্রিপস, মেধাসত্ব, মৎস্য খাতে ভর্তুকি নিয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বিশ্ববাজারে টিকে থাকা নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত নয়। বিশ্বের যেসব দেশের বাজারে প্রতিযোগিতা করে পণ্য রফতানি করতে হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ ভালো করছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ভারতের বাজারে রফতানিতে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। এটা বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির জায়গা। এরপরও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজারস যেমনÑ জিএসপি, জিএসপি প্লাস, ট্রিপসের সুবিধাগুলো চাইবে। এসব সুবিধা না থাকলে বড় বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করা হবে।
সচিব সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইইউ জিএসপির নিয়মে যে পরিবর্তন আনছে সেখানেও বাংলাদেশের জন্য অনেক ইতিবাচক ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সমস্যা হবে না। এ ছাড়া ট্রিপসের আওতায় ওষুধের মেধাসত্ব সুবিধা যাতে বাংলাদেশ পায়, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া আগামী রফতানি নীতিও এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই করা হচ্ছে।
কারিগরি অধিবেশনে ডবিøউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, এবারের ডবিøউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অন্যান্য অনেকগুলো দেশ বাংলাদেশের প্রস্তাবকে সমর্থন করছে অথবা একই ধরনের প্রস্তাব দিচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।