পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শিশুসন্তান নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে যাওয়া ধনাঢ্য পিতা সানিউর টিআইএম নবীর বাবা টি এম নবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে টিএম নবীও যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যে ইমিগ্রেশন পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তিন বছরের শিশুসন্তানের জিম্মাদারী চেয়ে ভারতীয় মা সাদিকা সাঈদ শেখ’র করা রিটের বর্তমান পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন আদালত। বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত টিআইএম নবীর বাংলাদেশী পাসপোর্টের কার্যকরিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। শিশুটির দাদা টিএম নবী ফেসবুকে আদালত সম্পর্কে কেন অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আগামী ৭ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হয়ে তাকে এ ব্যখ্যা দিতে হবে। টিএম নবী ৩ বছর বয়সী শিশুটির দাদা। আদেশ প্রদান এবং রুল জারিকালে সরকারের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার, ভারতীয় মায়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ সংযুক্ত ছিলেন। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম।
আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম বলেন, শিশুর জিম্মাদারী চেয়ে ভারতীয় মায়ের করা রিটের প্রেক্ষিতে গত ২২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, শিশুটির পিতা বাংলাদেশী নাগরিক সানিউর টি আই এম নবীর ৩ বছরের শিশুকে নিয়ে দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন। গত ১৬ নভেম্বর সকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে শিশুকে নিয়ে বাবা সানিউর টি আই এম নবী অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন।
এর আগে, ১৭ নভেম্বর ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদ ও বাংলাদেশী নাগরিক সানিউর টি আই এম নবীর ২ বছর ৮ মাস বয়সের শিশুসহ পলাতক বাবাকে হাজির করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও গুলশান থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ২১ নভেম্বর বিকেল ৩টার মধ্যে তাদেরকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছিল।
গত ১৬ নভেম্বর হাইকোর্ট সাদিকা সাঈদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ৩ বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশী নাগরিক বাবা সানিউর টি আই এম নবীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। শিশুকে নিয়ে বাবা সানিউর যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ১৬ নভেম্বর শিশুটির বাবার পক্ষে আইনি লড়াই থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। ১৫ নভেম্বর ওই শিশুকে পরদিন ১৬ নভেম্বর সকালের মধ্যে মায়ের আইনজীবীর কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু ওই শিশুর বাবা আইনজীবীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। এ কারণে বাবা সানিউরের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া এ মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।
গত ২৫ আগস্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদেশে বলা হয়, মা ও শিশু মানবাধিকার সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড)’ ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তবে বাংলাদেশী বাবা সপ্তাহে ৩ দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এ দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়।
সাদিকা সাঈদের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পর শিশুর বাবা তার সন্তানকে উন্নত পরিবেশে গুলশান ক্লাবে রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শিশুর মঙ্গলের কথা চিন্তা করে আমরাও রাজী হই। গুলশান ক্লাবেই মা ও শিশু অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে তিন বছরের ওই শিশুকে বেড়ানোর কথা বলে গুলশান ক্লাব থেকে নিয়ে যান বাবা সানিউর। কিন্তু পরে আর মায়ের কাছে দিয়ে যাননি। এর মধ্যে শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে জিডি ও মামলা করেন সানিউর। বিষয়টি গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্টের দৃষ্টিতে আনা হলে আদালত ১৬ নভেম্বর সকালের মধ্যে শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে বলেছিলেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে সানিউর দেশ ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত: ২০১৭ সালে হায়দারাবাদে তাদের ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। এর মধ্যে এই দম্পতির ঘরে ২০১৮ সালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এক পর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী সানিউর। তাকে ভারতের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।