Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ৭১ হাজার হেক্টরে ১৫ লক্ষাধিক টন সবজী উৎপাদনের লক্ষে মাঠে কৃষি যোদ্ধাগন

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ পিএম

চলতি রবি মওশুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষাধিক টন শীতকালীন সবজী উৎপাদনের লক্ষে মাঠে মাঠে কাজ করছেন কৃষি যোদ্ধাগন। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজীর আবাদ সম্পন্ন হওয়ায় ধীরে বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তেও শুরু করেছে। তবে নদ-নদীবহুল বরিশাল কৃষি অঞ্চল দেশের অন্য এলাকার তুলনায় কিছুটা নিচু হওয়ার পাশাপাশি এখান থেকে মৌসুমী বায়ু কিছুটা দেরীতে বিদায়ের কারণে বর্ষাও কিছুটা বিলম্বিত হওয়ায় জমিতে পানি আটকা রয়েছে। ফলে জমিতে অতিমাত্রায় আদ্রতা বিরাজ করায় রবি ফসলের আবাদও বিলম্বিত হয়। পাশাপাশি বিলম্বিত বর্ষার কারণে এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন ধান উঠতেও বিলম্ব ঘটায় শাক-সবজী সহ রবি ফসল আবাদও বিলম্বিত হয়ে থাকে।

চলতি রবি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ১২ লাখ হেক্টরে বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ হচ্ছে। এরমধ্যে শুধু সাড়ে ৩ লাখ হেক্টরে বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে ১৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা হওয়ায় এখানো শুধুমাত্র বীজতলা তৈরীর লক্ষ্যে মাঠ কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কৃষি যোদ্ধাগন।
তবে এখন বরিশাল অঞ্চলের কৃষকরা এখন ব্যাস্ত শীতকালীন সবজি আবাদে। চলতি রবি মৌসুমে কৃষি মন্ত্রনালয় দেশে ৯ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে ২ কোটি ১৯ হাজার টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারন করেছে। এরমধ্যে শুধু বরিশাল কৃষি অঞ্চলেই প্রায় ৭১ হাজার হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষাধীক টন সবজী উৎপাদনের লক্ষে কাজ করছেন কৃষি যোদ্ধাগন। ইতোমধ্যে লালশাক, পালংশাক, ছিম, পাটল, ফুলকপি, বাধা কপি, শালগম, গাজর, মুলা সহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজী বাজারে আসছে। তবে এর বাইরে লাউ সহ বেশ কিছু সবজী, যা বার মাসই আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে, তাও বাজারে রয়েছে।
কিন্তু এ অঞ্চলে শীতকালীন সবজীর আবাদ বিলম্বিত হওয়ায় এখনো দেশের দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের সবজী বরিশাল অঞ্চলের বাজারে আসছে। ফলে পরিবহন ব্যায় জনিত কারনে দামও কিছুটা চড়া। আগামী দিন পনেরর মধ্যে স্থানীয়ভাওবে উৎপাদিত সবজী বাজারে আসতে শুরু করলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন বরিশালের পাইকারী সিটি মার্কেটের সবজীর আড়তদারগন।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, ‘দেশে গত বছর ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৮ হাজার টনের মত শীতকালীন সবজী উৎপাদন হয়েছে। এবছর আমরা তা ২ কোটি টনের ওপর নিয়ে যেতে চাচ্ছি। এতে করে অভ্যন্তরীন বাজারের পূর্ণ চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রপ্তানী বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে’। ডিএই’র মতে ‘বিশে^র শতাধীক দেশে বর্তমানে বাংলাদেশর কৃষি পণ্য রপ্তানী হচ্ছে। এরমধ্যে শীতকালীল সবজীই অন্যতম প্রাধান কৃষিপণ্য। আগামীতে এ বাজার আরো সম্প্রসারনের লক্ষ্যে সরকার দেশে সবজীর আবাদে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে’।

এদিকে আমাদের কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট ‘বারী’ মাঠ পর্যায়ে গবেষনা কার্যক্রমের মাধ্যমে অন্যসব ফসলের মত বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজীরও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। ফলে কম জমিতে অধীক ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এতেকরে একদিকে কৃষকগন লাভবান হচ্ছেন, অপারদিকে দেশও কৃষিতে সয়ম্ভরতা অর্জনের পরে বিদেশে রপ্তানী বাজার সম্প্রসারনের সুযোগ ঘটছে বলে জানিয়েছে ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ