পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিতর্কিত, সুবিধাবাদী, বিএনপি, জামায়াত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ঢুকে পড়ছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটিগুলোতে। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম রাজধানীতে সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিট কমিটি গঠন করছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কমিটিতে নগরের প্রভাবশালী নেতা, কাউন্সিলর, থানা ওয়ার্ডের নেতারা নিজেদের ‘মাইম্যান’দের দিয়ে পকেট কমিটি করতে বিতর্কিতদের স্থান দিচ্ছেন। এ নিয়ে অভিযোগ, আলোচনা সমালোচনার মাঝে তিনটি ওয়ার্ডে ২৬টি ইউনিট কমিটি বাতিল করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে নগরের ছয় জন নেতাকে।
মহানগর সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা যে যার নিজের দল ভারি করতে আত্মীয়-স্বজন, বিতর্কিতদের পদে আনতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন। অনেক ওয়ার্ডেই এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে কিন্তু প্রভাবশালী নেতাদের কারণে কিছু কিছু জায়গায় বিতর্কিত, বিএনপি জামায়াতও কমিটিতে স্থান পেয়েছে। এ নিয়ে মহানগরে অভিযোগও জামা পড়েছে। এ বিষয়ে মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলছেন, আমরা এ বিষয়ে কঠোর, কোন অভিযোগ পেলে সেই কমিটি স্থগিত করা হচ্ছে।
দক্ষিণখান থানার তিনটি ওয়ার্ড-৪৭, ৪৮, ৪৯ নম্বরে বিতর্কিতদের স্থান দেয়া, নিয়ম না মেনে কমিটি ঘোষণা করায় ২৬টি ইউনিটের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে মৌখিকভাবে নগরের এই থানার টিম সদস্যদের জবাবদিহিও করতে হয়েছে। টিম সদস্যরা হলেন, নগরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এম এম তোফাজ্জল হোসেন, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরী, এস এম মাহবুব আলম, রবিউল ইসলাম রবি, ফয়েজ আহমেদ।
ঢাকা মহানগর উত্তরের একজন প্রভাবশালী নেতা জানান, ইতোমধ্যে কমিটি গঠনে অর্থ লেনদেনের কিছু অভিযোগও পেয়েছেন তারা। কিছু সুবিধাবাদি, বিতর্কিত, বিএনপি-জামায়াতও কমিটিতে স্থান পেয়েছে। অনেক স্থানে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিতর্কিতদের পদায়নের চেষ্টা চলছে। এসব কাজে মহানগর আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতা জড়িত। কাউন্সিলররা তার মাইম্যান দিয়ে পকেট কমিটি করার জোর চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতাদের মাঝে বাকবিতণ্ডাও হয়েছে। এক ওয়ার্ডের সম্মেলনে কাউন্সিলরকে মঞ্চ থেকেও নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এলাকাগুলোতে দলের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি তাদের প্রভাব ধরে রাখা ও বিস্তার করতে কমিটিতে পদ চাচ্ছেন। এজন্য তারা নেতাদের পিছনে টাকা খরচ করছেন। আর কিছু কিছু নেতা সুযোগের সৎ ব্যবহার করে অর্থ নিচ্ছেন। অনেক ইউনিটে ব্যবসায়ী, ঠিকাদারদের কমিটিতে আনা হয়েছে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে। কাউন্সিলররা ভোট পেতে বিএনপি জামায়াতের লোকদেরও কমিটিতে পদ দিতে সুপারিশ করছেন।
ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি ইনকিলাবকে জানান, ২৬টি থানা, ৬৪টি ওয়ার্ড ও ১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। কমিটি গঠনের জন্য ২৬টি থানায় ২৬টি টিম গঠন করা হয়েছে। ৬৪টি ওয়ার্ডে আনুমানিক ১ হাজার ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিটি ইউনিটে ৩৭টি পদ থাকবে আর সদস্য সংখ্যা হবে ১৫০ জন। সে হিসেবে ৩৭ হাজার নেতা তৈরী হবে এবং দেড়লাখ সক্রিয় কর্মী থাকবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগে। ইতোমধ্যে ৪২টি ওয়ার্ডে (আংশিক-পূর্ণাঙ্গ) সম্মেলনে ৩৭৭টি ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোথাও কমিটিতে দুইজন, কোথাও ১০জন, আবার কোথাও ২০ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানা টিম কমিটির সদস্য ও মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা ইনকিলাবকে বলেন, এবারের ইউনিট কমিটির সফলতা হল ত্যাগী ও অভিমানী নেতাদের অভিমান ভাঙিয়ে ঘর থেকে রাজপথে নিয়ে আসা। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হচ্ছে, মাঠের সমস্যা মাঠে সমাধান হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে কারো অভিযোগ থাকলে সম্মেলনের মাঠেই সে বিষয়ে কথা বলার সুযোগ থাকছে। আশা করি ইউনিট কমিটি গঠন হলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিকড় প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।
২০১৬ সাল থেকে থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দিয়েই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১৯ সালের ৩০ নেভেম্বর মহানগরে নতুন নেতৃত্ব এলেও সেগুলো আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি। আর এ কারণে মহানগরের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে হতাশা। দলের সাংগঠনিক ভিত দুর্বল হয়েছে রাজধানীতে। নেতাদের সঙ্গে কর্মীদের দূরত্বও ক্রমেই বাড়ছে। এই দূরত্ব কমিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করতে কাজ করছে মহানগর আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ইনকিলাবকে বলেন, দলকে শক্তিশালী করতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা রেখে চেষ্টা করছি। এরপরও কিছু সুবিধাবাদী, বিতর্কিতরা ঢুকে পড়ছে। তবে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা সেসব কমিটি স্থগিত করে পুনরায় কমিটি করতে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন শেষ করার টার্গেট থাকলেও আশা করছি প্রায় ৮০০ ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে। বাদ বাকী ইউনিট গঠনের জন্য কিছু সময় বাড়ানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।