Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মূল হোতা রায়হান গ্রেফতার

প্রাইম ব্যাংকের টাকা লুট

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

রংপুরের প্রাইম ব্যাংকের গোপন পাসওয়ার্ডধারী এক কর্মকর্তার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা লোপাট হয়েছে। করোনা মহামারীকে কাজে লাগিয়ে অভিনব কায়দায় এটিএম বুথ থেকে এসব টাকা লুট করেছে আবু রায়হান নামের ওই কর্মকর্তা। গত শনিবার রাতে রংপুর নগরীর ডিসির মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এতথ্য জানিয়েছে পিবিআই।

পিবিআই রংপুরের জেলা পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানিয়েছেন, গত বছরের ৬ অক্টোবর প্রাইম ব্যাংক রংপুর শাখার অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পীষুয কুমার রায় বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। তিনি উল্লেখ করেন, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কোতোয়ালি থানার প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশে অবস্থিত প্রাইম ব্যাংকের এটিএম বুথ। সেখান থেকে ৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অজ্ঞাত হ্যাকার/ চোর ই-ট্রানজেকশন, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে চুরি করেছে। এ ঘটনায় থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় রংপুর পিবিআই।

বিশেষজ্ঞ দুই প্রকৌশলীর বরাত দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো অস্বাভাবিক আঘাত কিংবা কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ভোল্টের লোহার পার্ট থেকে দুটি ক্যাসেট সরানো হয়েছে। এটিএম বুথে কোনো প্রকার আঘাত কিংবা কোনো ক্ষতের এমনকি বাইরে থেকে কোনো প্রকার বল প্রয়োগ ছাড়াই ভল্ট থেকে টাকার ক্যাসেট সরানো হয়েছে। এটি শুধু পাসওয়ার্ড ও সেফডোর কি অপব্যবহারের ফলে সংঘটিত হয়েছে।তদন্তে জানা যায়, এটিএম বুথটিতে টাকা লোড দেয়ার সময় ব্যাংক থেকে নির্ধারিত দুজন পাসওয়ার্ডধারী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এদের একজন ছিলেন কাস্টমার সার্ভিস কর্মকর্তা মোস্তাফিজ, অপরজন আবু রায়হান। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের রংপুর শাখা থেকে তারাই নির্ধারিত গোপন পাসওয়ার্ডধারী কর্মকর্তা এবং তারাই দীর্ঘদিন ধরে ভল্টে টাকা লোড দিয়ে আসছেন।

আবু রায়হান বগুড়ায় বদলি হওয়ার পরও গত বছরের ২০ আগস্ট পর্যন্ত প্রাইম ব্যাংক রংপুর শাখায় কর্মরত ছিলেন। এছাড়া ওই এটিএম বুথে গত বছরের ১৭ জুন বিকল হওয়ার আগ পর্যন্ত মোট তিনবার ভল্টে টাকা লোড দেয়া হয়। এরমধ্যে প্রথমদিন টাকা লোড দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পাসওয়ার্ডধারী কর্মকর্তা ফরহাদ ও আবু রায়হান। দ্বিতীয়বার উপস্থিত ছিলেন আবু রায়হান ও ব্যাংকের ফ্যাসিলিটিজ স্টাফ মিলন মিয়া। তিনি এটিএম বুথে উপস্থিত হয়ে মিলন মিয়ার মোবাইল ফোন থেকে সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদের সঙ্গে কথা বলে ফরহাদের কাছে রক্ষিত পাসওয়ার্ডটি নেন এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ভল্টের দরজা খুলে টাকা লোড দেন।

 

সর্বশেষ তৃতীয়বার ওই বছরের ৩ জুন ভল্টে টাকা লোড করার আগে কর্মকর্তা আবু রায়হান ব্যাংকের ভেতরে সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদের কাছ থেকে চিরকুটে পাসওয়ার্ড লিখে নেন। পরে তিনি ৩০ লাখ টাকা বুথে নিয়ে যান এবং ভল্ট লোড দেন। গোপন দুই পাসওয়ার্ডই আবু রায়হান জানতেন। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে পিবিআই পুলিশ সুপার জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ