Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দামে দিশেহারা ক্রেতা

সীতাকুণ্ডে শীতকালীন সবজি

শেখ সালাউদ্দিন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন খুচরা বাজারগুলোতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে বলে অসংখ্য ক্রেতাদের অভিযোগ। ফলে শুধুমাত্র পাইকার ও খুচরা দোকানিরা দিন দিন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। অপরদিকে প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খেটে খাওয়া কৃষক। আর বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতাদের।
পৌরসভাস্থ শেখনগর থেকে মোহন্তের হাটে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা রিগান দাশ ও ইদিলপুরের শেখ নছির উদ্দিনসহ অনেকে জানান, কৃষকদের উৎপাদিত নতুন বিভিন্ন প্রজাতির শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু খুচরা দোকানিরা কৃষকদের কাছ থেকে কম মূল্যে সবজি কিনে তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ৪৫/৫০টাকা।
কিন্তু কৃষকদের কাছ থেকে তারা ক্রয় করছেন কেজি ২০/২৫ টাকায়। এভাবে প্রত্যেকটি সবজির দাম বেশি নিচ্ছে খুচরা দোকানি।
উপজেলার বিভিন্ন হাটে সরেজমিনে জানা গেছে, প্রতি মৌসুমে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা অনেক পরিশ্রম করে জমিতে নানান প্রজাতির সবজির চাষ করে তা বিক্রির উদ্দেশ্যে সাপ্তাহিক হাট-বাজারে নিয়ে আসেন। আর খুচরা দোকানিরা ও পাইকার কৃষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অযুহাতে কম দামে সবজি ক্রয়করে তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন বলে প্রায় সময় হাটে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করেন। প্রতিটি সবজিতে তারা কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন বলে এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। অথচ কৃষক পরিবার সারা বছর মাঠে ময়দানে অনেক পরিশ্রম করে বিভিন্ন সবজির চাষ করেও তারা সবজির প্রকৃত দাম পান না। তারা বলেন, কাঁচা বাজারে এক ধরণের সিন্ডিকেট আছে, তারাও সবজির দাম কমিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। সে ক্ষেত্রে অধিক লাভবান হচ্ছেন পাইকারও খুচরা দোকানিরা। ফলে কৃষক পরিবার সারাবছর সবজি চাষ করে যে লাভের কথা ভাবেন তা আর পুরোন হয় না। অথচ যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলের সবজির চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। এদিকে মুরাদপুর গুলিয়াখালী গ্রামের প্রবীণ কৃষক, মো. আজম, আয়ুব আলী ও মো. আবু তাহের বলেন, একটি সিন্ডিকেট প্রতি কেজিতে তারা ২০ টাকা করে কম দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছেন।
কাঁচা মাল পঁচে যাওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে আমরা কম দামে পাইকারিতে বিক্রি করে দিচ্ছি। তারা আরোও বলেন, উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজারে কৃষকদের কাছ থেকে পাইকারিতে বেগুন কিনছে কেজি ৩৫ টাকা, আর সেটি খুচরা
দোকানে বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ঢেঁড়শ পাইকারিতে ২০ আর খুচরা বাজারে ৩৫/৪০ টাকা, চিচিংগা ২৫, খুচরা বাজারে ৪০। ঠিক এভাবে প্রত্যেকটি সবজি বেশি দামে বিক্রি করছেন খুচরা দোকানিরা।
সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ ইনকিলাবকে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে ১৮ হাজার ৬৫০ জন কৃষক শীতকালীন বিভিন্ন রকম সবজির আবাদ করেছেন। আর সবজি
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ৯৮ হাজার ৯৮০ মেট্রিকটন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে সবজির দাম অনেকটা ভাল। কৃষক সবজি বিক্রি করে তারা অনেক লাভবান হবেন বলে আশা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ