Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোর আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সভাপতি নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ৮:২০ পিএম

যশোর সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক হট্টোগোল হয়েছে। সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর লাঞ্চিত হয়েছে এমন অভিযোগ শোনা গেলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। প্রভাব বিস্তার, হট্টোগোল, ভয়ভীতির এই নির্বাচনে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মাজাহারুল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইছালীর আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তফসীল ঘোষনা হয় গত ২১ অক্টোবর। ঘোষিত তফসীল অনুযায়ী অভিভাবক সাধারণ শ্রেণিতে চারজন, মহিলা সংরক্ষিত সাধারণ শ্রেণিতে একজন, শিক্ষক প্রতিনিধি সাধারণ শ্রেণিতে দুইজন এবং সংরক্ষিত মহিলা শ্রেণিতে একজন মোট ৮ জন মনোনয়ন গ্রহণ করে। ৩১ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় এবং অতিরিক্ত কেউ মনোনয়ন না নেয়ায় ৮জনের সকলে মনোনীত হন।
এরা হলেন, অভিভাবক সাধারণ শ্রেণিতে জগমোহনপুর গ্রামের ফারুক হোসেন ও মশিউল আজম, হাশিমপুর গ্রামের নওশের আলী মন্ডল, হুদারাজাপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম, সংরক্ষিত মহিলা শ্রেণিতে রাজাপুর গ্রামের সেলিনা খাতুন, শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে ওই বিদ্যালয়ের এনামুল কবীর ও আলমগীর হোসেন এবং সংরক্ষিত নারী শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে সুরাইয়া পারভীন।
নিয়মানুযায়ী এই ৮জন ভোট দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করবেন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বতর্মান আহবায়ক কমিটির প্রধান মাজাহারুল ইসলাম এবং সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ।
রবিববার (২১ নভেম্বর) সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কক্ষে সভাপতি পদে নির্বাচন হওয়ার দিন ছিলো। সেখানেই আগেই হাজির হন দুইজন প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা। সেখানে উপস্থিত হন যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীসহ সরকারি দলের বেশ কয়েকজন নেতা। মৌখিকভাবে ভোট চাইতে গেলে সেখানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে হট্টোগোল বাঁধে। তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ৫ জন থাকেন বাকিরা বেরিয়ে যান। পরে নওশের আলী, সেলিনা খাতুন ও মনিরুল ইসলাম ফের কক্ষে ঢোকেন এবং তারা ভোট দান থেকে বিরত থাকেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, সেখানে উপস্থিত থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরকে লাঞ্চিত করেন। নির্বাচানের প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি কথা বলতে চাইলে তাকে ধমক দেয়া হয়। পরে চাপের মুখে ওই ৫জনের ভোট নিয়ে তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনের দিন তিনিসহ অন্যান্য শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ৮জনের মাধ্যে ৫জন ভোট দিয়ে মাজাহারুল ইসলামকে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। সেখানে হট্টোগোলের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর বলেছেন, তেমন কিছু হয়নি। নির্বাচনের সময় হাত তোলা বা সমর্থন নিয়ে বাইরের কিছু লোক হঠাৎ করে হট্টোগোল শুরু করে। এরপর তিনজন বেরিয়ে যান। কিছু সময় পর তারা আসেন কিন্তু ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ভোট গ্রহনের সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে ভোটাররা সঠিকভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে সমস্যায় পড়েছেন কি-না এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধি অফিসে আসলে বাঁধা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলো বা যেভাবে সম্পন্ন হয়েছে এটা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন।
এব্যাপারে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ