পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার জাহাঙ্গীর আলম এবার মেয়র পদও হারাতে যাচ্ছেন। গাজীপুর সিটি করর্পোরেশনের এই মেয়র আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদিকে আজ রোববার না হলে চলতি সপ্তাহে বরখাস্ত হতে পারেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দল থেকে বহিষ্কার হলে মেয়র পদেও থাকতে পারেন না। কারণ, দলে তো উনি আর নেই, তাহলে দল থেকে বহিষ্কার করলে তো আর (মেয়রের) চেয়ার থাকে না। এটা সাধারণ হিসেব বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সরকার বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দল থেকে বহিষ্কার হলে মেয়র পদেও থাকতে পারেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। মন্ত্রণালয় থেকে সেই কাজ করবে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, মেয়র পদে থাকবে কি-না, এ বিষয়টা আইন পর্যবেক্ষণ না করে আমার পক্ষে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। আইন দেখে পরবর্তীতে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা হবে। এখন মেয়র আছে। কতদিন থাকবে, সেটা আইন দ্বারা নিষ্পত্তি করা হবে।
এ বিষয় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, দল থেকে বহিষ্কার হলে দলীয় মেয়র তাঁর পদ হারাবেন। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন আইনে কিছু বলা নেই। এই আইনে বলা আছে, অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালতের মাধ্যমে দন্ডিত হলে তাঁকে অপসারণ করা যাবে।
জানা গেছে, দল থেকে বহিষ্কার হলে সংসদ সদস্য পদ হারানো-না হারানো দুই রকম নজিরই আছে। কিন্তু সিটি করর্পোরেশনের মেয়রের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতি এবারই প্রথম। সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনেরও মেয়র প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন নিয়ে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন। দল থেকে বহিষ্কার হলে তার মেয়র পদ থকবে না।
দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকীকে দল বহিষ্কার করলে তাঁর সংসদ সদস্য পদ নিয়ে বিতর্ক হয়। লতিফ সিদ্দিকীকে বহিষ্কারের বিষয়ে দলের চিঠি পেয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দেন সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে তার সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। এতে লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের পক্ষেই রায় দিলে লতিফ সিদ্দিকী আপিল করেন। কিন্তু আপিল বিভাগও হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বহাল রাখলে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশ না নিয়ে লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে দল থেকে বহিষ্কার হয়েও এমপি পদে বহাল থাকেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (সাতক্ষীরা-৪) গোলাম রেজা ও বিএনপির সংসদ সদস্য (রাজশাহী-৪) আসনের সংসদ সদস্য আবু হেনা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ দুজনের বিষয়ে তাদের দল থেকে সংবিধানের ৬৬ ধারা অনুসারে পদক্ষেপের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রে দল থেকে বহিষ্কার হলে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিধান রয়েছে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সিটি করর্পোরেশনের ক্ষেত্রে কী হবে সেই প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। দলীয় প্রতীকে সিটি মেয়র পদে নির্বাচন শুরু হওয়ার পর নির্বাচিত কোনো মেয়রকে তার দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা এই প্রথম। এ অবস্থায় শুধু দল থেকে বহিষ্কারের কারণে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদ হারাবেন কি-না সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আইন অনুযায়ী, কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত আমলে নিলে এবং অসদাচরণ প্রমাণ হলে মেয়রদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে। জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষেত্রে দল থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে দল কী ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেয় তার ওপরও জাহাঙ্গীরের ভাগ্য নির্ভর করছে। তবে গাজীপুর জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা গেছে, গাজিপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ভূমিঅধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেননি। বরং ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের হয়রানি করে আসছেন। এ নিয়ে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, এমন কোনো বিধান না থাকলেও সরকার চাইলে সিটি করর্পোরেশনের একজন মেয়রকে অপসারণের অনেক পথ আছে। অসদাচরণ বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য মেয়রকে প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।