রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মাঠে মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে পাকা আমনের শীষ। আর ক’ দিন পরেই শুরু হবে খুলনাঞ্চলে ধান কাটার কাজ। মাড়াইয়ের পর ধান কড়া রোদে শুকানো হবে। তারপরই ধান থেকে বের হবে কৃষকের কাছে মুক্তার দানার মত দামি চাল। শুরু হবে নবান্নের উৎসব। তৈরি হবে পিঠা-পুলি। বছর কুড়ি আগেও বছরের ঠিক এ সময়টা অর্থাৎ কার্তিক-অগ্রহায়ন মাসে গ্রামগুলোর প্রতি বাড়ি থেকে ভেসে আসতো ঢেঁকিতে অনবরত শব্দ। বর্তমান যান্ত্রিক যুগে উঠে গেছে কাঠের সেই ঢেঁকি। তার জায়গায় এসেছে ধান ভাঙার মেশিনসমেত রাইসমিল। আরো একধাপ এগিয়ে যোগ হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ধান ভাঙার কল। খুলনার গ্রামাঞ্চলে ধান ভাঙার ভ্রাম্যমান কল চালিয়ে অনেক পরিবারই স্বাবলম্বী হয়েছেন। সময়, শ্রম ও খরচ কমে আসায় উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরাও।
খুলনাঞ্চলে এখন আর ধান নিয়ে ছুটতে হয় না বাজার বা ধান ভাঙার মেশিন বাড়িতে। রিকশা, বাইসাইকেল ও মাথায় বহন করতে হয় না ধান বা চালের বস্তা। এখন ধান ভাঙার কলই বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছে। কয়েক বছর হল, খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান ধান ভাঙার কলগুলো। কারিগরি প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। তিন চাকার ভ্যানের উপরে বসানো শ্যালো ইঞ্জিন চালিত যন্ত্র। ধান ও কুঁড়ো (ধানের খোসা) আলাদা হয়ে যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই।
কথা হয় খুলনা তেরখাদা উপজেলার আমতলা গ্রামে এমনই এক ধান ভাঙা কলের মালিক ইসহাক সরদারের সাথে। তিনি জানালেন, এক সময় ধান ভাঙা হতো ঢেঁকিতে। এখন শত বাড়ি খুঁজলেও একটা ঢেঁকির দেখা মেলে না। হাট বাজারের রাইস মিল পর্যন্ত ধানের বস্তা ভরে ধান নিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য ও খরচের। অনেক দূরে দূরে রাইস মিল হওয়ায় মানুষকে খুব কষ্ট করে ধান ভাঙাতে হতো। এখন ঘরে বসেই ধান ভাঙাতে পারছেন সবাই। ভ্রাম্যমান ধান ভাঙার কল আসলে কী, তা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, প্যাডেল বা ব্যাটারীচালিত ভ্যানে লোহার শক্ত অ্যাঙ্গেলের ওপর একটি ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন ও একটি হলার সেট করে তৈরি করা হয় ধান ভাঙার কল। দিনে ত্রিশ থেকে চল্লিশ মণ ধান ভেঙে চাল তৈরি করা যায়। এক মন ধান ভাঙিয়ে এক/দেড় কেজি চাল বা সম পরিমান দাম নেয়া হয়। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন খরচ বাদে এক হাজার থেকে বারো শ’ টাকা টেকে।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের ভ্রাম্যমাণ কলের আরেক মালিক নিত্যানন্দ ঢালী জানালেন, আমি বিভিন্ন এলাকার রাস্তা দিয়ে মেশিন নিয়ে যাই। যাদের ধান ভাঙানো দরকার তারা আমাকে ডেকে নেন। আগে কোনো রকম কৃষিকাজ করে সংসার চালাতাম। ধানের মৌসুমে প্রতিদিন খরচ বাদে হাজার টাকা থাকে। পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
পাশের আজগড়া গ্রামের গৃহবধূ অঞ্জলী রানী ও সবিতা রানী জানালেন, আগে ধানের সময় সারাদিন চলে যেত ঢেঁকিতে। এক মন ধান ভাঙতে ঢেঁকিতে কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যেত। এখন মেশিন ঘরে ঘরে চলে আসে। অনেক সুবিধা হয়েছে। সময়ও কম লাগে। এক মন ধান ভাঙতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট লাগে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, ভ্রাম্যমান ধান ভাঙার কলগুলোতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। তাই যে কোনো স্থানে ব্যবহার করা যায়। সময় ও খরচ কম। তাই এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খুলনাঞ্চলে কয়েক হাজার পরিবার এর মাধ্যমে উপার্জন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।