Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যশোর অঞ্চলে ব্রি-৭৪ ও ব্রি-৮৪ ধান চাষ বাড়ছে

যশোর থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ৬:১৭ পিএম

প্রতি বছর জিংকের অভাবে ৩৬ ভাগ শিশু ও ৫৭ ভাগ মহিলা অপুষ্টিতে ভুগছে। পাশাপাশি ৪৪ ভাগ কিশোরী জিংকের অভাবে খাটো হয়ে যাচ্ছে। হারভেস্ট বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা জিংক সম্পৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের উপর গুরত্ব দিচ্ছেন। জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদনের মাধ্যমেই পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) যশোরে হারভেস্ট বাংলাদেশ আয়োজিত এক কর্মশালায় এই তথ্য জানানো হয়। শহরের ব্র্যাক টার্ক সেন্টারে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় কৃষি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ও গবেষকগণ অংশ নেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, জিংক সমৃদ্ধ দুটি জাতের ধান দেশে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। আরও একটি জাতের ধান শিগগির কৃষক পর্যায়ে পৌঁছাবে। যশোর অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৭৪ ও ব্রি-৮৪ জাতের ধানের চাষের আগ্রহ বেড়েছে। যশোর জেলা সর্বশেষ বোরো মৌসুমে এক হাজার হেক্টর জমিতে বি-৭৪ ও ৫শ’ হেক্টর জমিতে ব্রি-৮৪ জাতের ধান চাষ হয়েছে। ব্রি-৭৪ জাতের ধান ১৪৭ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। এতে প্রতি কেজিতে জিংকের পরিমাণ ২৪ দশমিক ২ মিলি গ্রাম। প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) ফলন ২৪-২৮ মণ। এই চাল মাঝারি চিকন হয়।
অপরদিকে, ব্রি-৮৪ জাতের ধান ১৪৫ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। এই ধানে প্রতি কেজিতে জিংকের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৬ মিলি গ্রাম। আর প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) উৎপাদন ২০-২৭ মণ। এই ধানের চাল মাঝারি চিকন ও বাদামী রঙের। আরো একটি জিংক সমৃদ্ধ নতুন জাতের ধান শিগগির কৃষক পর্যায়ে পৌঁছাবে। সেটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু-১০০। এই ধান ১৪৮ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। এই ধানের চালে প্রতি কেজিতে ২৫ দশমিক ৭ মিলি গ্রাম জিংক আছে। প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) ফলন ২৬ মণ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, যশোরে জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে কৃষকদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তিন বছর আগে এই জেলায় জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত মৌসুমে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ব্রি-৭৪ ও ব্রি-৮৪ জাতের জিংক সমৃদ্ধ ধান চাষ হয়েছে। পুষ্টির চাহিদা পূরণে জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদনের বিকল্প নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদন ও বিপননের অংশীজনদের উদ্বুদ্ধকরণে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। এই ধান উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
হারভেস্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. মো খায়রুল বাসার বলেন, মানব দেশের জন্য জিংকের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সকলের পুষ্টি নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে জিংক সমৃদ্ধ ধান। পুষ্টির চাহিদা পূরণে জিংক সমৃদ্ধ ধান উৎপাদন ও সরবরাহ জোরদার করতে হবে।
হারভেস্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. মো খায়রুল বাসারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদুল আমিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বিএডিসি খুলনা-যশোর জোনের যুগ্ম পরিচালক একেএম কামরুজ্জামান, হারভেস্টপ্লাসের সিনিয়র স্পেশালিস্ট ওয়াহিদুল আমিন, হারভেস্টপ্লাসের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মজিবর রহমান, হারভেস্টপ্লাসের সিবিসি প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর আবু হানিফা প্রমুখ। এতে অংশ নেন কৃষি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ও গবেষকগণ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ