Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেবিদ্বারে পিতার পরকীয়ার বলি পাঁচ বছর শিশুকণ্যা ফাহিমা

র‌্যাবের হাতে বাবাসহ ৫জন গ্রেফতার

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৬:১৮ পিএম | আপডেট : ৬:২২ পিএম, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিখোঁজের সাতদিন পর ৫ বছরের শিশু ফাহিমার ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা আমির হোসেনসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ফাহিমা দেবিদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর (চম্পকনগর) গ্রামের ট্রাক্টর চালক আমির হোসেন ও গৃহিনী হোছনা বেগমের একমাত্র কন্যা। হোছনা বেগম বর্তমানে ৩ মাসের অন্তস্বত্বা।

বুধবার সকালে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ ব্রিফিং-এ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও ঘটনার বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা অনুসন্ধানের পর শিশু ফাহিমা হত্যায় যোগসাজশের তথ্য পাওয়ার পরই গত মঙ্গলবার চাপানগর গ্রামের ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন (২৫), আবুল কালাম (৩৫) ও তার স্ত্রী লাইলী আক্তার (৩০) এবং মৃত লিলু মিয়ার পুত্র রবিউল আউয়াল(১৯), সিএনজি চালক সোহেল রানাকে (২৭) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র‌্যাব।
র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত ৫ নভেম্বর ভিক্টিমের বাবা আমির হোসেনকে পাশর্^বতী বাড়ির মহিলা লাইলী আক্তারের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে তার মেয়ে ফাহিমা আক্তার। ফাহিমা তার মা’কে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলেও জানায়। তখন লাইলী আক্তারের প্ররোচনায় আমির হোসেনের দুই চাচাতো ভাই রেজাউল ইমন, রবিউল আউয়াল ও তাদের বন্ধু সোহেলসহ রেজাউলের ফার্নিচারের দোকানে বসে একটি পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আমির হোসেন তার মেয়েকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর রেজাউল, রবিউল, সুমন, লাইলী আক্তার ও আমির হোসেন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ফাহিমাকে সোহেলের সিএনজিতে করে ঘুরতে যায়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা হয়ে আসলে খাবারের কথা বলে রাস্তার পাশে একটি নির্জন স্থানে তাকে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে রেজাউল ইমন তার গরুর খামার থেকে ২৫ কেজি ওজনের ২টি প্লাষ্টিকের গরুর খাবারের ব্যাগ নিয়ে আসে। রবিউল একটি ছুরি ও আমির হোসেন তার ঘর থেকে আরো একটি ছুরি নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা ৪ জন মিলে ফাহিমাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। প্রথমে আমির হোসেন তার মেয়েকে মাথায় চেপে ধরে তার উপর ছুড়ি চালায়, পরবর্তীতে একে একে রবিউল এবং সোহেল ছুরি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। তখন লাইলী আক্তার পাশে দাড়িয়েছিল। সব শেষে ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন তার গলা চেঁেপ ধরে শ^াশ রোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে তারা ৪জন মিলে ফাহিমার মরদেহ প্লাষ্টিকের ব্যাগে ঢুকায়। ৯ নভেম্বর রাতে লাইলী আক্তার ছাড়া বাকী ৪জন উপজেলার কাচিসাইর গ্রামের নির্জন ওই স্থানের কালভার্টের নিচে ভিক্টিমের লাশ ভর্তি ব্যাগটি ফেলে আসেন।
উল্লেখ্য, ফাহিমা গত ৭ নভেম্বর বিকেলে বাড়ির আঙ্গীনায় খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। গত ১৪ এপ্রিল ভোরে পথচারীরা উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের নজরুল ইসলাম মাষ্টারের বাড়ির সামনে খাল সংলগ্ন একটি ব্রীজের গোড়ায় বাজারের ব্যাগ থেকে মরদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। # #

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ