Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বময় ইসলামের জাগরণ বিস্মৃত ইতিহাসের আরেক অধ্যায় মহররম

প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ বশির উল্লাহ
চাতক পাখির ন্যায় দীর্ঘ এগারটি মাস অপেক্ষার পর এবং যুগ-যুগান্তরের অনেকগুলো ঘটনার ভার বহন করে কালচক্রের পাখায় চড়ে বার বার আমাদের সামনে আসে মহররম। আরবি বর্ষ পরিক্রমার অর্থাৎ হিজরি সালের প্রথম মাস এটি। এটি ‘আশহারুল হুরুম’ হারামকৃত মাস চারটির একটি। মহররম মানে সম্মানিত। মাসটি নামের মাধ্যমেই সম্মানিত ও মর্যাদা পরিস্ফুট হয়েছে। ইসলামী ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল আলোচিত ঘটনাসমূহ এ মাসেই সংঘটিত হয়েছে। এ মাসেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো ১০ই মহররম, যা আশুরা নামে অধিক পরিচিত। ইতিহাসের নানা ঘটনায় ভরপুর এ দিনটি। এদিন আল্লাহতা’আলা মুসা আলাইহি-সসালাওয়াতু ওয়াসাল্লাম ও তার কাওমকে রক্ষা করেছেন এবং ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়কে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন। হযরত ইবনে আব্বাস রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন, ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা পালন করছে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন, এটি কি? তারা বলল, এটি একটি ভালো দিন। এদিনে আল্লাহতা’আলা বনি ইসরাঈলকে তাদের দুশমনদের কবল থেকে বাঁচিয়েছেন। তাই মুসা আলাইহি-সসালাওয়াতু ওয়াসাল্লাম রোজা পালন করতেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন, মুসাকে অনুসরণের ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে অধিক বেশি হকদার। তখন থেকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম রোজা রেখেছেন এবং রোজা রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারি : ১৮৬৫)
আরো বর্ণিত আছে, ইমাম আহম্মদ বর্ণনা করেছেন, এটি সেইদিন যাতে নুহ আলাইহি-সসালাওয়াতু ওয়াসাল্লাম-এর কিশতি জুদি পাহাড়ে স্থির হয়েছিল। তাই নুহ আলাইহি-সসালাওয়াতু ওয়াসাল্লাম আল্লাহর শুকরিয়া আদায়স্বরূপ রোজা রেখেছিলেন।
এই মাসে বা আশুরার দিনে কি হয়েছে বা হবে তা আমাদের আলোচনা নয়। আমাদের জানা উচিত, এ মাসে এদিনে একটি নুরানী বাতিঘর রয়েছে, যেটিকে পাশ্চাত্য ও দেশীয় ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী ভেঙ্গে তথায় একটি বিদআতী বাতিঘর স্থাপন করেছে। যাতে মুসলমানগণ কোনো দিন সে প্রেরণায় উজ্জীবিত হতে না পারে। মুসলমান ষড়যন্ত্রমূলক বিদআতী সেই বাতিঘরের ধাঁধায় পড়ে ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহুর প্রতি সস্তা ভালোবাসা প্রকাশে মাতম করে করে শুধু বুকই ফাটিয়েছে। কিন্তু সঠিক প্রেরণার ইতিহাস তারা জানতে পারেনি এবং নিজেদেরকে উজ্জীবিত করতে পারেনি। মহররমের মূল চেতনার সেই ইতিহাসের পাতা থেকে বিশ্ব মুসলিমকে ছিটকে ফেলে দেয়া বা বিস্মৃত করার পাশ্চাত্য টার্গেট সফল হয়েছে। এই সফলতার কারণেই এদিনের অসংখ্য ঘটনার মধ্যে একটিমাত্র চেতনা যা মুসলমানদের জানা ও উপলব্ধি করা একান্তই প্রয়োজন ছিল সেটিকে বাদ দিয়ে আমাদের সম্মানিত ইমাম সাহেবগণ হয় তা চেপে যান। তারা সঠিক চেতনার ইতিহাসটি বলার সাহস করেন না বা কালের বিস্মৃত ইতিহাসের কবলে তারাও নিমজ্জিত। ফলে শুধুমাত্র মুখরোচক ও উত্তেজিত ঘটনাগুলো বর্ণনা করে একান্তই কিসসা কাহিনীর মতো সাময়িকভাবে মজাদান করা হয়। তাদের নিমিক্তে অনুরোধ মহররমের বিস্মৃত স্মৃতিকে মন্থর করুন। আশুরার দিনে সংঘটিত অসংখ্য ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হলো কারবালার মরু প্রান্তরে ইয়াজিদ কর্তৃক ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু ও তার পরিবারকে হত্যাকা-। পৃথিবী তার বিশাল বুকে যতগুলো দুঃখ- বেদনাকে ধারণ করে এখনো ঠিক রয়েছে এবং যতগুলো মর্মান্তিক ঘটনা বা দুর্ঘটনা ইতিহাসকে বার বার কাঁদায়, তারমধ্যে শাহাদাতে কারবালা সর্বোচ্চ আসনে সিক্ত হয়ে আছে। প্রতিটি মুসলমান হযরত ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু-এর শাহাদাতের ঘটনায় আন্তরিক দুঃখ ও বেদনা প্রকাশ করে থাকে। নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লামের প্রতি ঈমানের স্বাভাবিক প্রতিফলন এবং মানবতার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। এটি নিছক একটি হত্যাকা-ই ছিল না বরং হত্যাকা-ের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস তার সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে অন্যদিকে মোড় নিয়েছিল। এ হত্যাকা- যতটুকু বেদনাদায়ক তার চেয়েও বেদনাদায়ক হলো ইসলাম ও ইসলামী জীবন ব্যবস্থা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম কর্তৃক প্রদর্শিত যেই রাস্তা বেয়ে পথ চলছিল, সেটি ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু-কে হত্যার মাধ্যমে বাঁকা পথে মোড় নেয়। ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু পূর্ব থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন, বাঁকাপথে আরোহনকারী ইসলাম নামক ট্রেনটির ড্রাইভার ট্রেনটিকে বাঁকাপথে নিয়ে যাচ্ছে। খুব সহসাই এর যাত্রীদের গোমরাহীতে নিমজ্জিত করবে। তাই তিনি পথভ্রষ্ট ড্রাইভারটিকে নামিয়ে ট্রেনটিকে সঠিকপথে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর প্রদর্শিত পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাতিল রাষ্ট্রদ-ের ক্ষমতাবলে তাকে এগুতে দেয়া হয়নি। বরং রাস্তায় এ বিশাল বাঁধাটিকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার জন্য ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-কে সপরিবারে শহীদ করে দেয়া হয়। ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-কে হত্যার মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্রকে অন্ধকার পথে নিয়ে যাওয়ার আর কোনো বাধা-বিপত্তি রইল না।
হৃদয় আরো দুঃখ-ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে যখন এমনটি হতে দেখা যায়, বিশ্ব মুসলিম ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-এর শাহাদাতের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে ভুলে গিয়ে বেহুদা সব কাজে লিপ্ত হয়। মনে রাখতে হবে, আমরা যদি ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-এর মূল চেতনাকে উপলব্ধি না করি, তবে ভালোবাসার পরিবর্তে তার প্রতি সুস্পষ্ট জুলুম করা হবে। কিয়ামতের দিন ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু যদি তার রক্ত মাখা জামা আর ছোট্ট শিশু-বাচ্চাদের নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হন এবং আমাদের কাছে প্রশ্ন করে বসেন, আমি কি আমার ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য শহীদ হয়েছিলাম? তখন আমাদের কি কোনো জবাব থাকবে? সুতরাং আমাদেরকে সর্বপ্রথম সঠিক ইতিহাস এবং মহররমের সঠিক শিক্ষা জানতে হবে। তারপর সে অনুযায়ী আমাদের কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে এবং মানুষের সামনে শাহাদাতে কারবালার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু যেই চেতনার কারণে তৎকালীন স্বৈরশাসক ও জালিম শাহীর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই চেতনা মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তোলার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদেরকে ইতিহাসের নি¤œলিখিত বিষয়গুলো জানতে হবে।
এক. উপলব্ধি করতে হবে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তার ক্লান্ত পরিশ্রমে ইসলামের যে গাছটি পরিপূর্ণ মহিরুপে রেখে গেছেন তার প্রথম থেকে শেষ অবদি চাক্ষুস সাক্ষী ছিলেন ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু। সেই আদর্শিক গাছটির ডাল-পালা ইতোমধ্যে কেটে দেয়া হলো। কিন্তু যখন তার মূল কর্তন ও নতুন একটি বিষবৃক্ষ রোপণ করতে এগোয়, তখন তিনি এর গতি প্রতিরোধে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। আর এ জন্যই ইতিহাসের এ মর্মান্তিক অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে।
দুই, আমাদের আরো জানতে হবে, ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার মূল কথা হলো, সমাজ ও রাষ্ট্রের কোনো পর্যায়ে পদ দাবি করা বা চেয়ে নেয়া যাবে না, আবার দায়িত্ব এলে তা শরয়ী ওজর ব্যতীত অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। হযরত আবদুর রহমান ইবনে সামুরাহ রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম আমাকে বলেছেন, তুমি নেতৃত্ব চেয়ে নেবে না। কেননা, তুমি যদি চেয়ে নেতৃত্ব লাভ করো তাহলে তোমাকে উক্ত পদের হাওয়ালা করা হবে। (সে অবস্থায় তুমি আল্লাহর কোনো সাহায্য পাবে না)। আর যদি কোনো রকম প্রার্থনা করা ব্যতীত তুমি নেতৃত্ব লাভ করো, তাহলে আল্লাহর তরফ থেকে তোমাকে দায়িত্ব পালনে সাহায্য করা হবে। (বুখারি, মুসলিম)
এটি কেবলমাত্র পুরুষানুক্রমিক বা বংশ পরম্পরায় গদিনশিন হওয়া বা মনোনীত করারও কোনো বিষয় নয়। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বলেছেন, মুসলিম জনগণের সাথে পরামর্শ না করে কেউ কাউকে নেতা হিসেবে বাইআত করলে, সে বাইআত গ্রহণযোগ্য হবে না। (মুসনাদে আহম্মদ)
ইসলাম নেতৃত্ব পরিবর্তন বা নেতৃত্ব বাছাই করার যে নিয়ম বা পন্থা বলে দিয়েছে, এটিই অত্যন্ত সুসম পন্থা, এর মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র সকল প্রকার বিকৃতি থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এ পন্থা বাদ দিলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি ও স্বেচ্ছাচারিতা বাসা বাঁধে। ফলে রাষ্ট্রব্যবস্থার সকল স্তরে অশান্তি আর অস্থিরতা প্রবল আকার ধারণ করে। বিদ্বেষ, পেশীশক্তি, সংকীর্ণ গোত্র বা বংশ মর্যাদা এবং কুৎসিত ঘরোয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘর্ষ দানা বেঁধে উঠে। মারামারি, খুনাখুনি, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়। নেতৃত্বের পালাবদলের যে নিয়ম ইসলাম অনুমোদন দেয়নি, তৎকালীন নেতৃত্ব সেই নিয়মের দিকে অগ্রসরমান দেখে হযরত ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু শঙ্কিত হয়ে উঠেন। যেহেতু ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু ছিলেন, একজন বিচক্ষণ, শরীয়তের অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম, হযরত আলী রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু ও হযরত ফাতিমা রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু যাকে কোলে-পিঠে করে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। যার শৈশব থেকে বার্ধক্য দীর্ঘসময় অতিবাহিত হয়েছে সাহাবায়ে কেরামের উন্নত পরিবেশে। যিনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম ও আমিরুল মুমীনিন হযরত আবু বকর রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু থেকে হযরত আলী রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু পর্যন্ত রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক বিশেষত্ব নিজ চক্ষে অবলোকন করেছেন। যিনি ভালো করে জেনেছেন এবং দেখেছেন ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্বের পালাবদলের নিয়মতান্ত্রিক রূপরেখা। তিনি তৎকালীন শাসকবর্গের ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক দিক পরিবর্তনের ব্যাপারটি সহসাই বুঝতে পারেন এবং নিজের প্রজ্ঞা দিয়ে এর করুণ পরিণতির চিন্তা করেন। তাই তিনি দ্রুত গতিসম্পন্ন দিকবিভ্রান্ত গাড়ি থামিয়ে তার সঠিক লাইনে পরিচালিত করার জন্য নিজের জান কোরবান করে দেন।
তিন. অবৈধভাবে নেতৃত্বের পালাবদলের কারণে তৎকালীন নেতৃত্ব জুলুমতন্ত্র কায়েম করে। ইসলামী রাষ্ট্রের সকল স্তরে বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অশান্তি আর অস্থিরতা প্রবল আকার ধারণ করে। বিদ্বেষ, পেশীশক্তি, খুনাখুনি চালু হয়।
স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ চরমভাবে অসহায়, মানবিক অধিকার বঞ্চিত দাসানুদাসে পরিণত হতে থাকে। রাজতান্ত্রিক শাসনের ফলে জনগণের ওপর মর্মস্পশী স্বৈরচারী শাসন পরিচালনা হতে থাকে এবং আল্লাহর বিধি- বিধানকে বিভিন্নভাবে অবহেলিত হতে থাকে। যেসব প্রতিষ্ঠানে আল্লাহর নাম উচ্চারণ হয়, সেগুলো গুরুত্বহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্ট চালানো হয়। ইয়াজিদ একটি স্বৈরশাসকে পরিণত হয়ে চরম অহংকারী ও সীমা লঙ্ঘনকারীতে নিমজ্জিত হয়। সে যা চিন্তা করে, তার যৌক্তিকতা সকলকে মেনে নিতে বাধ্য করে। তার কথাই হবে আইন, জনগণ তা অকুণ্ঠিত মনে ও নির্বাক চিত্তে মেনে নিতে বাধ্য হয়। ফলে হযরত ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু শঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে স্বৈরশাসকের গতিরোধ করতে গিয়ে শহীদ হন।
চার. ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-এর শাহাদাত আমাদের জন্য প্রেরণার বাতিঘর। আমাদেরকে ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-এর শাহাদাতের মূল উদ্দেশ্য ভালো করে উপলব্ধি করতে হবে। ইসলাীম রাষ্ট্রের বুনিয়াদী নীতি সংরক্ষণের জন্য ইমামের শাহাদাত ছিল এক ঐতিহাসিক নযরানা।
সর্বোপরি বলতে হয়, আমাদেরকে ইসলামী সমাজ বিনির্মানের পথে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহুতাআলা আনহু-এর প্রতি ভালোবাসার যথার্থ প্রকাশ পাবে। মনে রাখতে হবে এ পথে বাদ সাধবে পৃথিবীর তাবত তাগুতি শক্তি ও কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী। ইমাম হোসাইন রাদি-আল্লাহু তাআলা আনহু-এর মতো দৃঢ় ঈমান নিয়ে আমাদেরকে এ সকল শক্তির মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বময় ইসলামের জাগরণ বিস্মৃত ইতিহাসের আরেক অধ্যায় মহররম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ