Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাসে টম-জেরি খেলা

ভ্রাম্যমাণ আদালত বনাম ভাড়া নৈরাজ্য যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে গণপরিবহনে গণ্ডগোল লেগেই আছে

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

‘টম অ্যান্ড জেরি’ ধারাবাহিক কার্টুনটি পৃথিবীর সব দেশের শিশুদের পছন্দ। হলিউডের মেট্রো গোল্ডউইন মেয়ার স্টুডিওতে নির্মিত উইলিয়াম হ্যানা ও জোসেফ বারবারা লিখিত টম একটি বিড়াল আর জেরি একটি ছোট ইঁদুর। এই ইঁদুর-বিড়ালের নানা রকম দুষ্টুমি শিশুরা খুবই উপভোগ করেন। সেই টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের মতোই রাজধানী ঢাকার বাসগুলোতে চলছে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। এই খেলা হচ্ছে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত আর গণপরিবহনে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। গণপরিবহন ও লঞ্চভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর এক সপ্তাহ ধরে চলছে এই খেলা।

গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির পর বিআরটিএ কিলোমিটার হিসেবে ছোট-বড় বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এই ভাড়া আদায়ে বাস শ্রমিকরা মালিকদের নির্দেশের অজুহাত দিচ্ছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে ‘ওয়েবিল সিস্টেম’ ও ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাস মালিক সমিতি। অন্যদিকে বিআরটিএ অতিরিক্ত ভাড়া ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করছে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় চলছে টেলিভিশনে প্রচারিত ‘টম অ্যান্ড জেরি’ ধারাবাহিক কার্টুনের খেলার মতো। বাস মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করে ৬ হাজারের বেশি বাস। এর মধ্যে অনেক বাসে ওয়েবিল সিস্টেম ও সিটিং সার্ভিসের নামে উচ্চহারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি বাস তল্লাশি করে জরিমানা করছে। কিন্তু জরিমানা দেয়ার পরই ওই বাসগুলো আবার যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করছে। পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখলেই যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দিয়ে যাত্রীদের অনুরোধ করছে কিছু না বলার জন্য। বিআরটিএ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত আর বাস চালকদের মধ্যে এই ‘টম অ্যান্ড জেরি’ খেলার মাঝখানে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে।

ঝগড়ায় দিন শুরু : ইংরেজিতে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’। বাংলা অর্থ সকাল দেখে বলে দেয়া যায় দিনটি কেমন যাবে। রাজধানী ঢাকায় কর্মজীবী মানুষের যাতায়াতে যারা গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল; তারা কয়েক দিন থেকে অফিস বা কর্মস্থলে সকালে যাওয়ার সময় ‘ঝগড়া-বিবাদ’ দিয়েই দিন শুরু করেন। বাসে উঠেই তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়। সিএনজিচালিত বাসে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া জোর করে আদায় করা হয়। আবার কিলোমিটার অনুপাতের হারেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। এ নিয়ে বাসে কর্মরত পরিবহন শ্রমিক তথা ড্রাইভার, হেলপার, কন্ডাক্টরদের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছে। কখনো কখনো হাতাহাতি পর্যন্ত হচ্ছে। এ ছাড়াও বাস মালিকরা নিজস্ব গুণ্ডা দিয়েও যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। ফলে দিনের প্রথম প্রহর তথা দিন শুরু করতে হচ্ছে ঝগড়া দিয়ে। ফলে বাস চলাচলকারী পেশাজীবীরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছেন। জানা যায়, বাসে কর্মরত পরিবহন শ্রমিকরা ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে পরিবহন মালিক এবং ওয়েবিল পদ্ধতিকে দায়ী করে কৈফিয়ত দিচ্ছেন। বাস মালিক সমিতি ঘোষণা দিয়েছেন ওয়েবিল ও সিটিং সার্ভিস বন্ধ। কিন্তু বাস্তবে দুই ধারায় ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়ের কারণে গতকাল মিরপুরে কয়েকটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে পরিবহর শ্রমিকরা। এতে যাত্রীরা পড়েন মহা বিপদে। কয়েক ঘণ্টা বন্ধ রেখে আবার বাস চালানো শুরু হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিরপুর থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট থেকে গুলিস্তানÑ এই তিন সø্যাবে ভাড়া নির্ধারণ ছিল। এখন প্রত্যেক স্টপেজে সø্যাব রাখা হে ছে। মালিকদের দাবি মিরপুর থেকে গুলিস্তান এখন ১২টি সø্যাবে ভাড়া আদায় করার কথা। ভাড়াও কাটার কথা ১২ সø্যাবে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে। বাস মালিকদের দাবি অনেক যাত্রী বিআরটিএর নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকার যে নিয়ম; সেটাও মানতে চাইছেন না। তাই বাস হেল্পারদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন। একাধিক ড্রাইভারের দাবি ভাড়া আদায়ে ওয়েবিল পদ্ধতি বাদ দিয়েছেন। ভাড়ার সঙ্গে বর্তমান ওয়েবিলের কোনো সম্পর্ক নেই। চার্ট অনুযায়ীই ভাড়া কাটার নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ সিটিং সার্ভিসের নামে চিটিং এখনো চলছে। ওয়েবিল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায় চলছে। এর মধ্যে গত ১৫ নভেম্বর রামপুরায় শিক্ষার্থীরা রাইদা নামের একটি কোম্পানির ২০ থেকে ২৫টি বাস আটকে রাস্তায় বিক্ষোভ করে। দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাসের মালিককে ডেকে নিয়ে তিন পক্ষ্যের বৈঠক করেন। অতঃপর বাস মালিক শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত জানালে তিন পক্ষই খুশি হয়ে মিষ্টি বিতরণ করেন। গতকাল উত্তরায় ছাত্ররা কয়েকটি বাস আটক করে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা চলাচলের জন্য খুলে দেয়।

স্টিকারে জোচ্চুরি : সরকার ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করলেও সিএনজি গ্যাসের দাম বাড়ায়নি। এ অবস্থায় ঘোষণা দেয়া হয় ডিজেলচালিত বাসগুলোতে ভাড়া বাড়বে তবে সিএনজিচালিত বাসে আগের ভাড়া নিতে হবে। এ জন্য যাত্রীরা যাতে বুঝতে পারেন কোনটি ডিজেল আর কোনটি সিএনজিচালিত বাসে ‘স্টিকার’ লাগিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু প্রায় সবগুলো বাসেই ডিজেলচালিত স্টিকার লাগিয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বুয়েটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করে বাসগুলোর শতকরা ৯৫ ভাগ সিএনজিচালিত। যাত্রী কল্যাণ সমিতি একাধিক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, ঢাকায় চলাচলকারী শতকরা ৯৫ ভাগ বাস সিএনজিচালিত। কিন্তু বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দাবি উল্টো। তাদের দাবি মোট বাসের মাত্র ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ সিএনজিচালিত। সংগঠনটি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে ঢাকা মহানগরী, শহরতলি ও পাশের ৩ জেলায় (গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ) চলাচল করছে ১২০ কোম্পানির ৬ হাজার বাস। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানির মাত্র ১৯৬টি গাড়ি সিএনজিতে চলাচল করছে। এটা মোট বাসের ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। বাস মালিক সমিতি জানায়, ঢাকা মহানগরীতে চলা গ্রেট তুরাগ ট্রান্সপোর্টের ৪০টি, অনাবিল সুপার লিমিটেডের ৫টি, প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন লিমিটেডের ১২টি, শ্রাবণ ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ৩০টি, আসিয়ান ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ২০টি, মেঘালয় ট্রান্সপোর্টের ৫টি, হিমালয় ট্রান্সপোর্টের ১৪টি, ভিআইপি অটোমোবাইলের ২টি, মেঘলা ট্রান্সপোর্টের ২৭টি, শিকড় পরিবহনের ৮টি, বিকল্প অটো সার্ভিসের ১টি, গাবতলী লিংক মিনিবাস সার্ভিসের ১১টি, ৬ নং মতিঝিল-বনানী কোচ লিমিটেডের ২১টি বাস সিএনজিতে চলাচল করছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ জানান, রাজধানীতে ওয়েবিল সিস্টেম এবং সিটিং সার্ভিস ভাড়া আদায় বন্ধ করা হয়েছে। আর স্টিকার দেখে যাত্রীরা সিএনজি ও ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া দেবেন। কিন্তু রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় সব বাসেই ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার লাগানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিআরটিএ ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর ঘোষণা দিলেও তিন-চার দিন ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েছিল। গতকাল কোনো আদালত বসানো হয়নি। তবে মালিক সমিতির লোকজনও নিজেরা পথে পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করে। এসবই হচ্ছে টিভির ক্যামেরানির্ভর। কিছু গণমাধ্যম কর্মীকে কিছু টাকা দিয়ে ডেকে নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে মালিক সমিতির তৎপরতার সচিত্র খবর মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছেন এমন কয়েকজন এই প্রতিবেদককে জানান, তারা নিরুপায় হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছেন। তাদের ভাষায় বিআরটিএ ও বাস মালিকরা সিন্ডিকেট করে তাদের বেশি ভাড়া দিতে বাধ্য করছে।

ওয়েবিল সিস্টেম : গণপরিবহন মালিকদের দাবিতে বিআরটিএ গত ৭ নভেম্বর বাস ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। বাস মালিকদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভাড়া বৃদ্ধি করায় রাজধানীতে ‘সিটিং সার্ভিস’ এবং ‘ওয়েবিল সিস্টেম’ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক সমিতি। কিন্তু এখনও ‘ওয়েবিল সিস্টেম’ চালু রয়েছে। বাসে যাত্রীরা যেখানেই নামুক না কেন এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। মালিকপক্ষ দাবি করছে, নতুন করে নির্ধারণ করা ভাড়াই নেয়া হচ্ছে, ওয়েবিল রাখা হয়েছে শুধু হিসাবের জন্য। যাত্রীদের অভিযোগ ‘ওয়েবিলের দোহাই দিয়ে’ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে যাত্রীদের বাধ্য করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রায়ই বিতর্ক-হাতাহাতি হচ্ছে বাসের স্টাফদের সঙ্গে যাত্রীদের। রাজধানীর শনিরআখড়া থেকে ঠিকানা বাসে উঠে গাড়িটিতে একাধিক যাত্রীর সঙ্গে বাহাস করতে দেখা যায় ড্রাইভার-কন্ডাক্টরদের সঙ্গে। তুহিন নামের এক যাত্রী হেলাপারের সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বলেন, সরকার জনগণের ওপর ভাড়া চাপিয়ে দিয়েছে। সরকার থেকে যেটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, সেই ভাড়াই দেবো। চার্টে উল্লেখ করাই আছে কত ভাড়া দিতে হবে। এর বাইরে কেন দেবো? অন্য যাত্রীরা বলেন, ভাড়া বাড়ছে পয়সায়, বাস মালিকরা বাড়াচ্ছে টাকায়। শুরুতে চার্ট দেখত না মানুষ, এখন সবাই চার্ট দেখছে। আগে থেকেই এরা ভাড়া বাড়িয়ে নিত। এখনও তারা ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে মূল ভাড়া থেকে হিসাব না করে আগের বাড়তি বাড়ার ওপর অতিরিক্ত ভাড়া হিসাব করে। তখন ভাড়া চার্টের ভাড়ার চেয়েও বেশি হয়ে যায়। আর বিআরটিএ যে চার্ট দিয়েছে সেটাও সঠিক হিসেবে হয়নি।

ভাড়া নিয়ে বাগি¦তণ্ডার জেরে গতকাল দুপুর থেকে মিরপুরে চালকদের একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। মিরপুর-১২, মিরপুর-১০, মিরপুর-১ নম্বরসহ পুরো মিরপুর এলাকায় অধিকাংশ সিটিং সার্ভিস বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভাড়া নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে চালকদের একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।

মিরপুরের কালশীতে কয়েকজন যাত্রী একটি বাসের দুই কর্মচারীকে মারধর করেন বলে জানান ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তপন মাহমুদ। তিনি বলেন, এর প্রতিবাদে চালকরা বাস চালানো বন্ধ করে দেন। আমরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। বাস চলাচল দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে।

জানা যায়, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আসার জন্য মিরপুর ১২ নম্বর থেকে নূর এ মক্কা পরিবহনের বাসে ওঠেন সত্যজিৎ কাঞ্জিলাল নামের এক যাত্রী। এ সময় তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। কাঞ্জিলাল বলেন, সিটিং সার্ভিস তুলে দেয়া হবে, সব বাস লোকালে চলবেÑ এই ঘোষণার প্রতিবাদে বাসচালকরা ধর্মঘট পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। আমি দেখেছি, প্রতিটি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়েছে সন্ত্রাসী কায়দায়। এতে শত শত যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। পরে অন্যদের সঙ্গে আমি হেঁটে ও রিকশায় গন্তব্যের দিকে যাই।

মিরপুর-১০ নম্বরে বাসের জন্য অপেক্ষারত যাত্রী মঈনুল ইসলাম বলেন, শিকড় পরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচল করছে না। মতিঝিল যাবার বাস না পেয়ে অপেক্ষা করছি দেড় ঘণ্টা ধরে। সারি সারি বাস আছে কিন্তু সেগুলো বন্ধ।

গতকাল রাজধানীর গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, পল্টন, সায়েদাবাদ এলাকায় বিভিন্ন রুটের চলাচল করা বাসের সাধারণ যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা জানায়, বাধ্য হয়েই তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বাসে যাতায়াত করছেন। তাদের অভিযোগ, তেলের দাম যে হারে বেড়েছে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিআরটিএ-বাস মালিক সমিতি সিন্ডিকেট করে ভাড়া বাড়িয়েছে। এখন তারা যাত্রী হয়রানি বন্ধে অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে টম-জেরি খেলছেন। এসব নাটক বন্ধ করে যাত্রী হয়রানি এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।



 

Show all comments
  • N M Jashed ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ২:২১ এএম says : 0
    এত নাটক না করে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল গ্যাসের দাম কমেছে।তেলের দাম কমিয়ে গাড়ী ভাড়া কমিয়ে দিলে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Tareq Anam ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ২:২১ এএম says : 0
    আইনের দুর্বলতা, দলীয়করণ ও অপশাসন ই এর জন্যে দায়ী।
    Total Reply(0) Reply
  • মাসুম ইবনে মনির ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ২:২২ এএম says : 0
    1 কিঃ মিঃ ভাড়া ১৫ টাকা দিতে হবে। বাধ্য করছে সবাইকে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmad Raihan Siddiquee ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:০৯ এএম says : 0
    সাধারণ মানুষের টাকা ডাকাতি করে নিয়ে কিছু পুঁজিবাদদের পকেট ভারি হচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়ানো হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Omar Faruk ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১২ এএম says : 0
    তেলের দাম বাড়ানো হলো। বাস মালিকরা ধর্মঘট দিলো। বাসের ভাড়া বাড়ানো হলো। ধর্মঘট পত্যাহার হলো। জনগনের কাধে চাপিয়ে দেয়া হলো। মাঝখানে জনগণ পিষ্ট হলো।ইনসাফ হাহাকার করছে,নিতী নৈতিকতা বিপর্যয়ের মুখে। সাথে দ্রব্যমূল্যের চাপ তো আছেই।
    Total Reply(0) Reply
  • কৌশিক সরকার ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১২ এএম says : 0
    এগুলো দেখে মাঝে মাঝে মেজাজ নিয়ন্ত্রনে রাখা খুবই কষ্টকর হয়
    Total Reply(0) Reply
  • টুটুল ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৯:০৫ এএম says : 0
    ‘ওয়েবিলের দোহাই দিয়ে’ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে যাত্রীদের বাধ্য করা হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • আবদুল মান্নান ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৯:০৬ এএম says : 0
    রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় সব বাসেই ‘ডিজেলচালিত’ স্টিকার লাগানো হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বেশ কিছু গাড়ি সিএনজি চালিত
    Total Reply(0) Reply
  • নিয়ামুল ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৯:০৭ এএম says : 0
    জনগণের পকেট কেটে সবারই বাড়তি ইনকাম হচ্ছে, আমরা জনগণ নিরোপায়
    Total Reply(0) Reply
  • দুলাল ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৯:১০ এএম says : 0
    মালিক সমিতিসহ সবার অভিযানই লোক দেখানো, টিভি ও নিউজের জন্য।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Monirul Islam Mortaza ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ৯:১০ এএম says : 0
    এছাড়া বাসগুলো মানুষ উঠানোর সময়ও চালাতে থাকে আর নামানোর সময়তো চলন্ত বাস থেকে ঠেলে নামিয়ে দেয়। আবার দেখা যায় যাত্রী না থাকলেও বাসগুলো অযথা দাড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করে। কিছু বললেও তারা চরম দুর্ব্যাবহার করে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাড়া নৈরাজ্য
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ