Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগীরা যশোর জেনারেল হাসপাতাল

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

 

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ঘিরে চোরচক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের বেড থেকে ওষুধ, টাকা, মোবাইলসহ বিভিন্ন দামি সরঞ্জাম সামগ্রী চুরি করে নিচ্ছে। দিনে রাতে সুযোগ পেলেই রোগীর বেড থেকে মোবাইলসহ নানা সরঞ্জাম চুরি করে নিচ্ছে। এমনকি ওষুধ ঠিক আছে কি না, দেখে দেওয়ার নাম করে রোগীর কাছ থেকে ওষুধের প্যাকেট নিয়ে চম্পট দেয় চোর। চুরির বিষয় নিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেও সুরহা হয় না। যশোর শহরের বারান্দিপাড়া এলাকার নূর মোহম্মদের মেয়ে জাহানারা বেগম জানান, তিনি গত ৯ নভেম্বর তিনি মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার পরিবার অতি দরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ওষুধ কিনতে পারছিলেন না। এমন সময় জাহানার স্বজনরা রোগী কল্যাণ সমিতির শরণাপন্ন হয়। রোগী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তাকে প্রায় এক হাজার দুইশত টাকা মূল্যের ওষুধ কিনে দেয়। গত ১৩ নভেম্বর দিনের বেলায় তার স্বজনদের কাছ থেকে ওষুধ ঠিক আছে কি না দেখে দেওয়ার নাম করে তা নিয়ে চম্পট দেয় অপরিচিত ব্যক্তি। ভুক্তভোগী জাহানারার স্বজনরা জানান, হঠাৎ ওষুধ দেখতে চাওয়ায় তারা হাসপাতালে কোনো সেবাকর্মী ভেবে ওষুধ দেখতে দেন। আর এই সুযোগে চোর ওই এক হাজার দুইশত টাকা মূল্যের ওষুধ নিয়ে চম্পট দেয়। এই বিষয়ে তিনিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। কিন্তু সুফল পাননি।
স¤প্রতি এমন এক চুরির শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেনাপোলের পুটখলীর মোজাম্মেল হক নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা চুরি করে নেওয়া হয়েছে। মোজাম্মেল হক জানান, গত ১১ নভেম্বর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনার কেয়ার ইউনিটের তৃতীয় তলায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত ১নং বেডে ভর্তি হন। পরদিন ১২ নভেম্বর রাতে তার মানিব্যাগ থেকে ৮ হাজার টাকা চুরি হয়। এরপর তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের জানান। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন যশোরের লাবুয়াল হক রিপন। তিনি বলেন, গত ১৭ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি হাসপাতালের ২য় তলায় সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। এসময় রাত যেতে না যেতেই তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন এবং তিন হাজার টাকা মানিব্যাগসহ চুরি হয়ে যায়। এ বিষয়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সেবিকাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা এরকম অহরহ শুনছি। যে সে এসে ওষুধ দেখতে চাইলে রোগীরা দেখাচ্ছে আর চোর সুযোগে দামি ওষুধ নিয়ে চম্পট দিচ্ছে। আমাদের ওয়ার্ড বয়দের নির্ধারিত পোশাক না থাকায় তাদের বিষয়টির দিকে নজর দিতে কষ্ট হয়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান জানান, আমি চুরির ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো। এছাড়া এ বিষয়ে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদেরও অবগত করেছি। দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, সব থেকে আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে ওয়ার্ড বয়দের পোশাক নেই। যার ফলে আরো বেশি সমস্যা হচ্ছে। শিঘ্রই পোশাকের ব্যবস্থা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ