বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে সীমান্তে হত্যার ঘটনা ঘটছে। সীমান্তে শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতের নাগরিকরাও নিহত হচ্ছে। এসব ঘটনা যাতে না হয় সেজন্য দু’দেশ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশনকে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চোরা চালান, অবৈধ অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডের কারনে সীমান্তে হত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে। এতে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, ভারতের নাগরিকরাও নিহত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে এমন হত্যকান্ডের ঘটনা অনেক কমে এসেছে। এই হত্যা যাতে শূন্যে আনা যায় এ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত কাজ করছে। বিএসএফ-বিজিবি সীমান্ত রক্ষায় যথেষ্ট সচেষ্ট রয়েছে। ভারতীয় সেনাদের বিনা কারণে হত্যা না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্ত সেনারা কাজ করে যাচ্ছে।
ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, বিজিবি-বিএসএফকে যৌথভাবে মাদক চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি। আশা করা হচ্ছে, ভালো ফল পাবো।
তিনি আরও বলেন, মাদক চোরাচালান দুই দেশেরই সমস্যা। বিশেষ করে ইয়াবা ও আইসের মতো ভয়ানক মাদক উভয় দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এটা যেকোনও মূল্যে বন্ধ করতে হবে। এই মাদক চোলাচালান বন্ধে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
তিস্তা নদীর বিষয়ে হাই কমিশনার বলেন, তিস্তা নদীর বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকার খুবই আন্তরিক। এ সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তিস্তাসহ অভিন্ন সকল নদীর পানির সমবন্টন ও টেকসই সমাধানে যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে ভারত সরকার প্রস্তুত।
তিনি নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সহযোগীতা অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রংপুর সিটি করপোরেশন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি। পরে বিক্রম দোরাইস্বামী রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইফ সাপোর্ট সংবলিত অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর করেন। এর আগে, তিনি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি মাহিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও রংপুর চেম্বার আয়োজিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
সেখানে ব্যবসায়ীদের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। এ দেশ হচ্ছে ভারতের প্রথম সারির ব্যবসায়িক অংশীদার। আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগীও বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মোংলা ও মিরসরাইয়ে ভারতের দুটো অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিশেষ করে অটোমোবাইলের যন্ত্রাংশ উৎপাদন, হালকা প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকে।
বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, পণ্য বৈচিত্রকরণ হলে ভারতেও রফতানি বাড়বে এবং ঘাটতি অনেক কমে যাবে। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চায় ভারত সরকার। বাংলাদেশের অবকাঠামো ও যোগাযোগে উন্নতি হচ্ছে। কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও আগামীতে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বহুগুণে বাড়বে বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। ইতিমধ্যে দীর্ঘদিনের অনেক অমীমাংসিত সমস্যা সমাধান হয়েছে, পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বাকিগুলোরও সমাধান হবে। পরিশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত সময়ে ভারত সরকারের অর্থায়নে রংপুর আইটি পার্কের কার্যক্রম শুরু হবে।
এর আগে সোমবার রাতে তিনি নগরীর হাড়িপটিস্থ ‘সিঙ্গারা হাউস’ এ গিয়ে সেখানকার সিঙ্গারা খেয়ে ভূয়সী প্রশংশা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।