পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্ধারিত সময়ের সাড়ে ৯ মাস পর গতকাল রোববার শুরু হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথমদিনে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবারের পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে। পরীক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিলো ১৮ হাজার ৮১০ জন শিক্ষার্থী। আর পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের কারণে বহিষ্কৃত হয়েছেন ৩১ জন।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩৪ জন। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৩ হাজার ৫৪৮ জন। বহিষ্কার হয়েছেন বরিশাল ও যশোর বোর্ডে একজন করে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪২ হাজার ৭২৪ জন, এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৫ হাজার ৩৭৮ জন। বহিষ্কার হয়েছে ১৯ জন পরীক্ষার্থী। আর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭১ জন। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৯ হাজার ৮৯৪ জন। বহিষ্কার হয়েছে ১০ জন।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলেও করোনার কারণে এ বছর দীর্ঘ প্রায় সাড়ে নয় মাস অপেক্ষা করতে হয় শিক্ষার্থীদের। করোনা সংক্রমণ কমে আসলে পুনর্বিন্যাস করা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর এই প্রথম কোনো পাবলিক পরীক্ষায় বসলো শিক্ষার্থীরা। মহামারির কারণে এবারের এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে ভিন্ন আমেজে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কেন্দ্রে।
এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। পরীক্ষার্থী বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এবার এসএসসি পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন, এসএসসি (ভোকেশনাল) এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও আটটি দেশে ৪২৯ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
এদিকে চলমান এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের কোন সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রশ্নফাঁস নিয়ে গুজবে কান না দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা কেউ করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। গতকাল রোববার এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন ঢাকার একটি কেন্দ্র ঘুরে দেখার পর তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নফাঁস কোথাও হবে না। তবে গুজব ছড়ানোর একটা চেষ্টা বরাবরের মত আছে। কেউ যদি প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা করে তাহলে মাদক, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, প্রশ্নফাঁস করে আমাদের সন্তানদের ভবিষৎ যারা নষ্ট করার অপচেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে এর চেয়ে কম কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আমি অনুরোধ করব, সবাই যেন এ বিষয়ে সাবধান থাকে।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কেবল তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন হবে কিনা- এমন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মূল্যায়নের নানা পদ্ধতি রয়েছে সারা বিশ্বে। লম্বা পরীক্ষা নিলেই মেধা যাচাই হবে তা নয়। অ্যসাইনমেন্টসহ নানান কিছু করেছে এই শিক্ষার্থীরা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তারা কতটা শিখেছে, সেটাই বড় বিষয়। এক মাসের মধ্যে এবারের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে আগামী বছর মে-জুনের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০২২ সালের পরীক্ষাও আগের ডেটে (ফেব্রুয়ারিতে) নেওয়া যাবে না। তবে এবারের মতো এত দেরি হবে না। কারণ সিলেবাস কমপ্লিট করতে তো সময় দিতে হবে।
সরকার দেশে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দিচ্ছে। সব শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনার চেষ্টার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যতজনকে সম্ভব দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে, আমরা সহযোগিতা করছি। এসএসসি পরীক্ষা যারা দিচ্ছে, যেহেতু ঢাকায় টিকাদান চলছে- তাদের খুবই কম টিকা পেয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যতদূর সম্ভব দেব, ঢাকার বাইরেও তারা টিকা পাবে। তবে টিকা ছাড়া কেউ পরীক্ষা দিতে পারবে না, এমন নয়। নতুন শিক্ষাক্রমে জেএসসি পরীক্ষা থাকবে কি না- এ প্রশ্নে দিপু মনি বলেন, ওভাবে সেটা থাকবে না। তবে অবশ্যই মূল্যায়ন হবে। শিক্ষাক্রম চালু হলে মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে। কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নেহাল আহমেদ শিক্ষামন্ত্রীর সাথে ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।