Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছোটরা সচেতন বড়রা উদাসীন

এসএসসি পরীক্ষায় করোনা স্বাস্থ্যবিধি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রস্তুতি সেরে কেবল প্রবেশপত্র-কলম গুছিয়ে কেন্দ্রে ঢুকে যাওয়া নয়, করোনাভাইরাসের চোখ রাঙানির মধ্যে বাড়তি সতর্কতা নিয়েই এবার পরীক্ষায় বসছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। মাস্কে নাক-মুখ ঢেকে, হাতে স্যানিটাইজার নিয়ে অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল রোববার তাদের ঢুকতে দেখা গেছে পরীক্ষার কেন্দ্রে। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের যারা নিয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতা। হাজার হাজার অভিভাবককে পরীক্ষা কেন্দ্রে ভীড় করতে দেখা গেছে। ছোটরা মানলেও বড়দের এই উদাসীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো। অভিভাবকদের দেখা গেছে হাটবাজার- মেলার মতো একে অপরের ঘেষে বসে গল্প করছেন, ভীড়ের মধ্যে চিৎকার চেচামেচি করছেন। বেশি ভাগ অভিভাবকের মুখে মাস্ক ছিল না।

গতকাল সকাল ১০টায় পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবারের বিলম্বিত এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এতে বিজ্ঞান বিভাগের ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সবমিলিয়ে এবার এসএসসিতে পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন; সারা দেশে ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হচ্ছে।

মহামারীকালের এই পরীক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সব কেন্দ্রে হাত জীবাণুমুক্ত করা ও তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুমও। কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের ভিড় না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রাজধানীর কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রে প্রবেশ করলেও বাইরে অভিভাবকদের জটলায় তা উপেক্ষিত ছিল। কিছু কেন্দ্রে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থাও দেখা যায়নি।

পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের কর্মী ছাড়া অন্য যেন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে প্রবেশ না করে, সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ

শিক্ষামন্ত্রীও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শিক্ষার্থীর সাথে একজনের বেশি অভিভাবক না আসতে অনুরোধ জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সাথে তিন-চারজন করেও অভিভাবক এসেছেন।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে সরেজমিন দেখা যায়, অভিভাবকদের ব্যাপক চাপে কেন্দ্রের প্রবেশপথে পরীক্ষার্থীদের ঢোকা কঠিন হয়ে পড়ে। স্কুলের সামনের প্রধান সড়কে তৈরি হয় যানজট। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অভিভাবকদের সরে যেতে বললেও তাতে কাজ হয়নি। সোয়া ৯টা থেকে এই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ঢুকতে শুরু করে। অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড় ঠেলে কেন্দ্রে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীরাও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পরীক্ষার্থী কাজী নুসরাত জাহান বললেন, অভিভাবকদের জটলায় কেন্দ্রে ঢুকতেই বেশ সময় লেগেছে বেশি। গার্ডিয়ানদের কারণেই অনেক সমস্যা হচ্ছে। ভিড় ঠেলে ধাক্কাধাক্কি করে অনেক কষ্টে চিৎকার চেঁচামেচি করে ঢুকতে হয়েছে। তাদের কারণে দেরি হচ্ছে ঢুকতে। রাজধানীর বেশির ভাগ পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিভাবকদের ভীড়ের চিত্র দেখা গেছে। তারা যেন করোনাভাইরাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা ভুলে গেছেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাধিক অভিভাবক থাকায় জটলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে রশিদ হোসেন নামের এক অভিভাবক বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় বাবা-মাকে তো আসতেই হয়। আর বাচ্চারা বের হয়ে তো গার্ডিয়ান খুঁজবে। মোবাইল নেই, দূরে থাকি কী করে? আরেক অভিভাবক নুসরাত জাহান বললেন, বাচ্চাদের জন্য তো টেনশন হয়। সে পরীক্ষা দেবে, তখন তো আমি বাসায় বসে থাকতে পারব না। তবে মিরপুরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে অভিভাবকদের তেমন চাপ দেখা যায়নি।

দেশে ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা হয়ে এলেও করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার ৯ মাস পিছিয়ে এই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ