Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বছর না পেরুতেই ভৈরব সেতুর প্রতিরক্ষা দেয়ালে ধস

শাহেদ রহমার, যশোর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভৈরব নদের ওপর নির্মিত ভৈরব সেতুর পূর্ব পাশে সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে পড়ছে। এছাড়া, ওই অংশে সড়কের দুই দিকে সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে লম্বাফাটল দেখা দিয়েছে। উদ্বোধনের ১১ মাসের মাথায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ভারী বৃষ্টিতে সেতুর সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়ালে এই ধস এবং সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে ফাটল দেখা দেয়। এই অবস্থায় অনেকটা ঝুঁঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
গত ২২ নভেম্বর ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভৈরব সেতুর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ওইদিন সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে লোকজন ও যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। উপজেলা আটটি ইউনিয়ন মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নদ। দুই পারের মানুষের যোগাযোগ সহজতর করার জন্য ভৈরব নদের ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অভয়নগর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় ৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০২ দশমিক ৫৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৮ মিটার প্রস্থ ভৈরব সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটিতে মোট ১৫টি পিলার এবং ১৬টি স্প্যান রয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর। সেতুটি নির্মাণ করে ঢাকার যৌথ ঠিকাদানী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-রানকেন গ্রুপ। ২০১৯ সালের জুন মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভৈরব নদের পশ্চিম পারে মশরহাটি এবং পূর্ব পারে দেয়াপাড়া গ্রামকে সেতুটি সংযুক্ত করেছে। পূর্ব অংশে সেতু থেকে প্রায় ৩৫০ ফুট দূরে সংযোগ সড়কের বাম দিকে ৯০ ফুট এলাকা জুড়ে প্রতিরক্ষা দেয়ালের ব্লক ধসে পড়েছে। ওই অংশে আরও প্রায় ৫০ ফুট এলাকা জুড়ে ব্লক ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সেতু থেকে প্রায় ৩০০ ফুট দূরে সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে প্রায় ১০০ ফুট এলাকা জুড়ে লম্বা ফাটল দেখা দিয়েছে। সংযোগ সড়কের ডান দিকে প্রতিরক্ষা দেয়াল উঁচু নিচু হয়ে আছে। কয়েকটি স্থানে প্রতিরক্ষা দেয়ালের ব্লক দেবে গেছে। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে দেখা দেওয়া লম্বা ফাটল সেতুর প্রায় ১৫০ ফুটের মধ্যে চলে এসেছে।
দেয়াপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সেতুর সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়াল একেবারেই খাড়া করে করা হয়েছে। এখন অবস্থা খুবই খারাপ হয়েছে। দেয়াল থেকে ব্লক ধসে পড়ছে। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে লম্বা ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল সেতুর প্রায় নিকটে চলে এসেছে। নিচের মাটি সরে গেলে সংযোগ সড়কটি ধসে পড়বে।’
শংকরপাশা গ্রামের বাবলু তরফদার বলেন, সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়ালে ঢাল নেই। প্রায় সম্পূর্ণ খাড়া। বৃষ্টির আগেই সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়ালে ধস এবং সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছিল।
এলজিইডির অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শ্যামল কুমার বসু বলেন, ওই এলাকাতে বালুর পরিমাণ বেশি। এজন্য ভারী বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়ালের প্রায় ৭০ ফুট এলাকায় ব্লক ধসে পড়েছে। সংযোগ সড়ক ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, বড় সেতু নির্মাণ প্রকল্পের (এলবিসি) প্রকল্প পরিচালক এবং ডিজাইন বিভাগের প্রধানের নিকট পাঠানো হয়েছে। ডিজাইনের বিভাগের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছেন। তারা বললে আবার সংস্কার করা হবে।
এলজিইডির যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কেএম আনিছুজ্জামানের জানান, এলজিইডির ডিজাইনের বিভাগের কর্মকর্তারা দেখে গেছেন। তারা নির্দেশনা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ