Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক

ভারতীয় বন্যহাতির পাল এখন তান্ডব চালাচ্ছে নালিতাবাড়ীতে

ঝিনাইগাতী ( শেরপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৪৯ পিএম

ভারতীয় বন্য হাতির পাল এখন তান্ডব চালাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। খেয়ে এবং পায়ে পিষে ধংস করছে আমন ফসলের মাঠ। বন্যহাতির তান্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নালিতাবাড়ি গারো পাহাড়ের কৃষকরা।
হাতিগুলো দিনের আলোতে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে অবস্থানের পর রাতের আঁধার নামলেই লোকালয়ে নেমে আসে। তান্ডব চালায় আধা পাকা আমনের ফসলি জমিতে। এখন এরা ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে পিষিয়ে নষ্ট করে ফেলছে আমন ধানের খেত। এতে ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা। এ অবস্থায় শত শত কৃষকরা রাত জেগে পাহারা বসিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ও মশাল জ্বালিয়ে লাঠি হাতে সরব থাকলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না হাতির তান্ডব।
শনিবার ওই এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, হিংস্র বন্যহাতির দল ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে আস্তানা করেছে। দিনে পালিয়ে থাকে গহীন অরণ্যে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা এলাকার ফসলের জমিতে। পানিহাটা মৌজার ফেকামারীতে আমন ধানক্ষেত বিনষ্ট করে দিচ্ছে হাতি। পানিহাটা এলাকায় অর্ধ শতাধিক কৃষকের প্রায় ৪০-৫০ একর জমির পাকা আমন ধান পায়ে পিষ্ট করে এবং খেয়ে নষ্ট করেছে বন্যহাতি। কারো কারো ক্ষেত একেবারে বিনষ্ট করেছে। আবার কারো ক্ষেত আংশিক নষ্ট হয়েছে। হাতির এমন আচরণে দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকক’ল।
ওই এলাকার আশালতা নেংমিনজা, ডেবিট নকরেক ও হাসমত আলীসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতি বছর পাহাড়ি এই হাতির পাল ফসল ও জান মালের ব্যাপক ক্ষতি করছে। চলতি বছর বন্য হাতির দল প্রথমে বোরো ধান ও গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। পরে আমনের বীজতলা মাড়িয়ে নষ্ট করে। এখন আমনের পাকা ধান বিনষ্ট করছে। খাদ্যের সন্ধানে অভুক্ত হাতিগুলো লোকালয়ে এসে ছুটোছুটি করে। হাতির তান্ডবে এখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুমে।
পানিহাটা এলাকার এলিফ্যান্ট রেসপন্সটিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, কয়েক দিন ধরে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে বন্যহাতির দল। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ওয়াসিফ রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত— কৃষকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পরবর্তী আবাদের জন্য তাদেরকে উচ্চ ফলনশীল ধানবীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, বন্যহাতির পালকে তাড়ানোর বিষয়ে এরই মধ্যে একটা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক ও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চার্জার লাইট বিতরণ করা হবে। যা হাতি তাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ