Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিশোরী গৃহপরিচারিকাকে অমানবিক মারধর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ৬:৩৬ পিএম

একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বরিশাল নগরীতে ১৪ বছরের এক কিশোরী গৃহকর্মীকে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে । স্থানীয়দের খবরে পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পর ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার (১২ নভেম্বর) রাতে নগরীর আলেকান্দা এলাকার হাজিবাড়ি গলিতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীর হাজিবাড়ি গলির যুনযুরাইন ভবনের মালিক। তিনি নগরীর সাগরদি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মী নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবা-মা মারা গেছেন। এক সপ্তাহ আগে এক চাচা হুমায়ুন কবীরের বাসায় তাকে কাজে দেন। হাজিবাড়ি গলির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শুক্রবার রাতে সড়কের ওপর গৃহকর্মী মরিয়মকে বেদম মারধর করছিলেন হুমায়ন কবীরের স্ত্রী। মরিয়মের চুল ধরে একাধিকবার মাটির সঙ্গে আঘাত করা হয়। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে শিশুটিকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন হুমায়ন কবীর।

প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। হুমায়ন কবীরের জামাতা ঢাকায় স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তার কথা বলে হয়রানির ভয় দেখানো হয়। এ কারণে কেউ এগিয়ে যেতে সাহস পায়নি। তবে মোবাইল ফোনে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর গৃহকর্মী পুলিশকে জানায়, তার মা-বাবা মারা গেছে। এক চাচা সাত দিন আগে ওই বাসাতে তাকে গৃহকর্মীর কাজে দেন। কাজে সামান্য ভুল করলে তাকে মারধর করা হতো। কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বললে তাকে কয়েক দফায় মারধর করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাসার ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১০ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ তুলে মারধর করলে মেয়েটি পালানোর চেষ্টা করে। আশপাশের বাড়িতে আশ্রয় চাইলেও হয়রানির ভয়ে কেউ তাকে আশ্রয় দেয়নি।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে হুমায়ন কবীর ও তার স্ত্রী জানান, গৃহকর্মীর কাজে কোনো মন ছিল না। তাকে বার বার বলেও কোনো কাজ করানো যেত না। এছাড়া নেত্রকোনায় গ্রামের এক ছেলের সঙ্গে মরিয়মের প্রেমের সম্পর্ক আছে। সে লুকিয়ে আমাদের মোবাইল ফোন নিয়ে ওই ছেলেকে কল করতো। শুক্রবার রাতে পালিয়ে ওই ছেলের কাছে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল মেয়েটি। তাকে বাধা দেওয়ায় এখন মারধরসহ নানা মিথ্যা কথা বলছে। বরিশাল কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. লোকমান হোসেন বলেন, ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তারা মা-বাবা নেই। নেত্রকোনায় থাকা তার স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ