পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা স্থানান্তর, হস্তান্তর, রূপান্তর (মানিলন্ডারিং) এবং ৪শ’ ২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার কমিশন এ চার্জশিট অনুমোদন দেয়। দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন শিগগিরই চার্জশিট আদালতে দাখিল করবেন। সংস্থার সচিব ড. মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ তথ্য জানান। তার বিরুদ্ধে আরও ৭টি মামলা রুজুর অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
চার্জশিটে পি কে হালদার ছাড়াও তার মা লীলাবতী হালদার, অবন্তিকা বড়াল, শঙ্খ বেপারি, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় এবং স্বপন কুমার মিস্ত্রি। এর মধ্যে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে এককভাবে অবৈধ উপায়ে ১ কোটি ১৭ লাখ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এছাড়া পি কে হালদারের মালিকানাধীন এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্তত: ১ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইতিমধ্যেই জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬৭৯০.৯২৫ শতাংশ জমি। ২০ হাজার ২৫৭ বর্গফুটের একটি ১০ তলা ভবন। এসবের মূল্য ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। ২২টি গাড়ি। এগুলোর মূল্য ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩৭ টাকা। ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থিতি রয়েছে ৪০৮,১৩,৯৭,২৫৫.২৭ টাকা।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদারসহ অন্য আসামিগণ অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদসহ নিজের অবৈধ সম্পদের প্রকৃত অবস্থান গোপন করার হীন উদ্দেশ্যে নিজ নামে-বেনামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি/কাগুজে কোম্পানী/ব্যক্তিবর্গের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে পরিচালিত ১৭৮টি ব্যাংক হিসাবে ৬০৮০,৮৬,৪০,১২৫.০২ (প্রায় ৬ হাজার ৮১ কোটি) টাকা জমা ও ৬০৭৬,৫১,৮৬,৪৫৯.৫৭ (প্রায় ৬ হাজার ৭৬ কোটি) টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করত হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর করেন। পি কে হালদারের ভাই প্রীতিশ কুমার হালদারসহ তদন্তে আগত ১৩ জন আসামি পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত হয়ে কানাডায় অসংখ্য এসটিআর, এলসিটিআর এবং ইএফটিআর’র মাধ্যমে ১ হাজার ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪.৪১ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ অর্থপাচার করা হয়। এটি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য।
দুদক জানায়, কাগুজে প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে অর্থ আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বাইরে ‘ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লি:, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লি: এবং ফাস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ লোপাটের অভিযোগে এরই মধ্যে ১৫টি মামলা করা হয়েছে। আরও ৭টি পৃথক মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ এখনও অনুসন্ধানাধীন।
এদিকে চার্জশিটভুক্ত আসামি পি কে হালদারের পাচারকৃত অর্থ এবং পি কে হালদারকে ফেরত আনা হবে কি নাÑ জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, আপনারা জানেন, কোনো দেশ থেকে কাউকে ফিরিয়ে আনতে হলে অনেক কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমরা পি কে হালদারকে ফেরাতে চেষ্টা করছি। তবে এ প্রক্রিয়া সহজ নয়।
প্রসঙ্গত : গতবছর ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি পাঁচটি ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনকে আসামি করে পৃথক ৫টি মামলা করে দুদক। সব মামলাতেই পি কে হালদারকে অভিন্ন আসামি করা হয়েছে। মামলার পরপরই অন্যতম আসামি উজ্জ্বল কুমার নন্দী এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’র সাবেক এমডি রাশেদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসা তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদেরও আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে সুকুমার মৃধা, তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, রাশেদুল হক, পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, শঙ্খ বেপারি গ্রেফতার রয়েছেন। পি কে হালদারকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনায় ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতবছর ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রশান্ত কুমার হালদার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। অর্জিত অর্থ তিনি বিদেশ পাচারসহ দেশের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর, হস্তান্তর এবং রূপান্তর করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।