বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জালানী তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে গত শুক্রবার থেকে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য। এতে করে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের কারণে কক্সবাজারে
আটকা পড়ে হাজার হজার পর্যটক।
পর্যটকদের পুলিশি ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ। শনিবার (৬ নভেম্বর) বেলা তিনটার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচালিত জেলা পুলিশের পেজে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত
পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
পেইজে তিনি লিখেন, পর্যটন শহর কক্সবাজারে বিভিন্ন জেলা হতে আগত যেসকল পর্যটকগণ বাস ধর্মঘটের কারণে নিজ গন্তব্যে ফিরে যেতে পারছেন না। তাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সহায়তায় নিজস্ব পরিবহনে কোন প্রকার ভাড়া ছাড়া চট্টগ্রাম জেলায় পৌঁছে দেয়া হবে। ফিরে যেতে আগ্রহীদের জেলা পুলিশ লাইনে যাবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হঠাৎ গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস ধর্মঘটে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে শুক্র ও শনিবারে গন্তব্যে ফিরে প্রায় অর্ধলাখ
পর্যটক। শনিবার (৬ নভেম্বর) যাদের বিশেষ কাজ রয়েছে, তাদের অনেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় উড়োজাহাজে করে কক্সবাজার ত্যাগ করেন। কিন্তু যাদের সেই সামর্থ্য নেই তারা ছোট যানবাহনে কক্সবাজার ছাড়ার চেষ্টা চালান শুক্র ও শনিবার। অন্যসময়ের চেয়ে ভাড়া দু'তিনগুণ হওয়ায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারেননি আটকা পড়ারা। শনিবার বিমানের টিকেটের মূল্যও অন্যদিনের চেয়ে ছিল বেশ চড়া।
আগের মতো সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে বৃহস্পতি-শুক্র ও শনিবার হাতে রেখে কক্সবাজার
এসেছেন লাখো পর্যটক। এই ঘোষনার পর আটকে পড়া পর্যটকদের মাঝে প্রান ফিরে আসে, পুলিশের সাথে যোগাযোগ ও নাম রেজিস্ট্রেশন করতে থাকে। পুলিশের এই ব্যবস্থাপনায় এই পর্যন্ত ২০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ছেড়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম শেফা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েকজন এসেছি। শুক্রবার ভোৱে, আজকে চলে যাওয়ার কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় আটকে গেলাম। কল্পনাও করতে পারেনি পুলিশ এমন উদ্যোগ নেবে। অবশেষে পুলিশের বাসেই ফিরছি বন্দর নগরী। সেখানে ট্রেনে করে চলে যাব। কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ধর্মঘটের কারণে আটকা পড়ে ২০ হাজার পর্যটক। পর্যটকরা খুবই দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। পুলিশের বাস সেবার সিদ্ধান্ত অনেক পর্যটক উচ্ছ্বসিত। পুলিশের এমন সিদ্ধান্তে তারা অনেক আনন্দিত। আমরাও বিষয়টি হোটেলে হোটেলে ছড়িয়ে দিয়েছি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম সিকদার বলেন, 'কক্সবাজারে কোনও পর্যটক আটকা পড়েননি। তবে দুর্ভোগে পড়েছেন। দুর্ভোগে পড়া পর্যটকদের জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষ রুম বুকিংয়ে ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। গত দুই দিনে বেশিরভাগ পর্যটক আকাশ পথ ও বিভিন্ন ছোট যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। এখনও যেতে পারেননি এমন পর্যটকের সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি হতে পারে। তবে এ সংখ্যক পর্যটক সবসময় কক্সবাজারের অবস্থান করে থাকেন। সুতরাং পর্যটক আটকা পড়ার খবরটি সঠিক নয়।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে এসে প্রায় ২০ হাজার পর্যটক। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটকরা। সে বিবেচনায় নিজস্ব পরিবহনে পর্যটকদের ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। অনেক পর্যটক অতিরিক্ত ভাড়ায় উড়োজাহাজে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। যাদের সেই সামর্থ্য নেই তারা ছোট যানবাহনে কক্সবা চালাচ্ছেন। কিন্তু অন্য সময়ের চেয়ে ভাড়া দুই-তিনগুণ হওয়ায় তারা চেষ্টা করেও কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারছেন না। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আরো বালেন, যে কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ জনতার পাশে আছে ও থাকবে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের এ মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল সহ সর্বস্তরের মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।