Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিনরাত কাজ করেও অভাব যায় না

জমে উঠেছে শ্রমিকের হাট

গুরুদাসপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

বিনাহালে রসুন উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এলাকা নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে এবারে রসুন লাগানো আর ধান কাটা মৌসুমে প্রতিদিন বসছে দিনমজুরদের হাট।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলাধীন বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের নয়াবাজার, কাছিকাটা, হাজীরহাটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিনাচাষে রসুন লাগানো ও ধানকাটাসহ গেরস্থালী কাজের জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষ দিনমজুরের হাট এসে জমাট হন। শীত উপেক্ষা করে পেটের তাগিদে প্রতিদিন ভোর ৪ টায় ওই সকল দিনমজুররা ওই হাটে আসে। ভোর ৪টা থেকে শুরু করে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে শ্রমিক কেনা-বেঁচা। হাট থেকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য দিনমজুর খরিদ করে নিয়ে যায় সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা।
ধারাবারিষা এলাকার ফয়জাল, নয়াবাজারের মুন্না, হাসমারীর সোহাগ জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ, সলঙ্গা, উল্লাপাড়া উপজেলা ও পাবনা জেলার চাটমহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মহাসড়কের নয়াবাজার, কাছিকাটা, হাজীরহাট পয়েন্টে ভোর ৪ টা থেকে এসব দিনমজুর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নছিমন-করিমন, ট্রাকে ও বাসের ছাদে চড়ে এসে হাট বসায় এবং সেখান থেকে নারী-পুরুষ দিনমজুররা দিনচুক্তি অথবা কাজচুক্তি হিসেবে উচ্চ মুল্যে মহাজনের কাছে বেচাকেনা হয়ে থাকে। তবে কাজ অনুযায়ী তাদের আর্থিক চাহিদা বিভিন্ন পর্যায়ের হলেও মোটামুটি প্রতিদিন পুরুষ দিনমজুরের মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং মহিলা দিনমজুরের মজরি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে মজার ব্যাপার হলো, বেলা বাড়লে বসে থাকা দিনমজুরের মূল্য আনুপাতিকহারে কম হয়ে থাকে। আবার সারাদিন না খেয়ে কাজ করার মজুরি এবং তিন সন্ধ্যা খাবার দিয়ে কাজ করার মজুরির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
তারা আরো জানান, যদিও মজুরী একটু বেশী তার পরও হাতের কাছে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে। এতে আমাদের অনেকটা উপকারই হচ্ছে। নয়াবাজার দিনমজুর হাটে অপেক্ষমান দিনমজুর মান্নাননগরের জালাল আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার সংসারে ৭ জন খানেওয়ালা এবং তার একার উপার্জনের ওপরই তাদের খাওয়া পরা নির্ভরশীল। তাই দিবারাত্রী কাজ করেও তার অভাব যায় না। নয়াবাজার দিনমজুর হাটের মহিলা শ্রমিক ৪ সন্তানের জননী আমেনা বেগম জানান, তার স্বামী একজন দিনমজুর ছিল, এখন সে অর্ধাঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়ে সয্যাশায়ী। তাই তিনি সন্তানাদি ফেলে দিনমজুর হাটে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এখন তার ওপরেই সংসারের খাওয়া পড়া নির্ভর করছে।
তাড়াশের রহিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জের মনির হোসেন জানান, ৩৫-৪৫ টাকা ভাড়া দিয়ে এসেছি। যেতে আবার ৩৫-৪৫টাকা লাগবে। তবে আগের চেয়ে এ বছর মজুরীর দাম অনেক ভাল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ