Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোর কারাগারে ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই ফাঁসি’ নিয়ে তোলপাড়!

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২১, ৯:৪৫ পিএম

‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’-এমন খবরে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে (৩ নভেম্বর) তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কারাগারে চুয়াডাঙ্গা জেলার মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মেম্বর হত্যা মামলায় দুই আসামি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মোকিম ও ঝড়–র ফাঁসি কার্যকর হয়। কারা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দাবি করেছে, আইনগত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মোকিম ও ঝড়–র ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত রবকুল মন্ডলের মেঝো ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেনকে ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন গ্রামের বাদল সর্দারের বাড়িতে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কতিপয় চরমপন্থি কুপিয়ে হত্যা করে। ওই দিনই নিহতের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায়ে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির দুই আঞ্চলিক নেতা দুর্লভপুরের মৃত মুরাদ আলীর ছেলে আব্দুল মোকিম ও একই গ্রামের মৃত আকছেদ আলীর ছেলে ঝড়ুসহ ৩ জন আসামিকে মৃত্যুদন্ডাদেশ এবং দুর্লভপুরের মৃত কুদরত আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিয়াসহ ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। বাকি ১৬ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

মামলার রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিলসূত্রে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত ২ জন আসামি আমিরুল ইসলাম ও হিয়ার দন্ডাদেশ মওকুফ করা হয়। মোকিম ও ঝড়–র ফাঁসির আদেশ বহাল থাকে। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাত পৌনে ১২টায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে মোকিম ও ঝড়–র ফাঁসি কার্যকর হয়।

এদিকে, বুধবার ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’-এমন খবরে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কারাগার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আইনগত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আপিল বিভাগে মৃত্যুদন্ড বহাল থাকার পর এই দুই আসামি মহামান্য রাষ্ট্রপতি’র কাছে ‘মৃত্যুদন্ড মওকুফের আবেদন’ করেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই আবেদন নামঞ্জুর করেন। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সহকারী সচিব মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষতির এক পত্রে আবেদন নামঞ্জুরের বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরপর আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ১৬ নভেম্বর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

তবে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে খুলনা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) মো. ছগির মিয়া জানান, ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’-এমন খবর তাদের নজরেও এসেছে। কারা কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র-ফাইল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ