Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের লোকজন ইউপি নির্বাচনে নিজেরা নিজেরাই কামড়া কামড়ি করছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২১, ২:১৩ পিএম

সরকারের লোকজন এখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নিজেরাই কামড়া কামড়ি, মারামারি করে মরছে আর গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের শান্তি বিনষ্ট করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তারা জনগণের মধ্যে আতংক-অস্থিরতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। চলমান ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত সহিংসতা করছে।
বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ঢাকায় বসে টাকার বিনিময়ে প্রকাশ্যে মনোনয়ন বানিজ্য করছে আর প্রার্থীরা গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে। এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে-লুটপাটের লোভ। কোন মতে দলীয় টিকেট পেলেই সিলেকশনের চেয়ারম্যান হয়ে যাবে, তখন হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়ার অভাব হবে না। সব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। মেরে কেটে যেভাবে হোক চেয়ারম্যান-মেম্বার হওয়ার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছে তারা। কোন কোন জায়গায় প্রার্থীরা নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের এলাকা ছাড়া করার হুংকার দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আজ খবরের কাগজে দেখলাম, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম হুমকি দিয়েছেন, “যারা নৌকার বিরোধিতা করছে এবং নৌকায় ভোট দিবে না তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা মারা গেলে কবরস্থানে কবর দিতে দেয়া হবে না। এমনকি তাদের মসজিদেও নামাজ পড়তে দেয়া হবে না।”

রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা তার আপন বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের খান পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় বেজায় মনক্ষুন্ন হয়েছেন। তাই সেখানে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের পক্ষে প্রচারনায় তিনি মাঠে নেমেছেন, মাঠে নেমেছেন রাতে ভোট ডাকাতি করে দশমিনা-গলাচিপা আসনে নৌকার অটো এমপি সিইসির আপন ভাগ্নে এস এম শাহজাদা, সহোদর আবু তাহের খানসহ তাদের পুরো পরিবার।

সিইসির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জোরালো সমর্থক কে এম নুরুল হুদা গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনার দায় নিবে না। দায় প্রশাসনের। খুনোখুনিতে তিনি নাকি বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। কে এম নুরুল হুদার অধীনে নির্বাচন কমিশনের স্বয়ংসম্পূর্ণ সঙ্গা পাল্টে গেছে। কমিশনের স্বাধীন সত্তাকে হরণ করেছেন কে এম নুরুল হুদা নিজেই।

নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘নির্বাচনের সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে এর দায় তাদের ওপর বর্তাবে।” এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, নির্বাচনে সহিংসতার দায় স্থানীয় প্রশাসনের উপর চাপাচ্ছে মেরুদন্ডহীন পাপেট নির্বাচন কমিশন। অথচ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসে, সেক্ষেত্রে এতসব সহিংসতা, অনিয়মের দায় নির্বাচন কমিশনের। ভোট ডাকাতিকে সহায়তা দিতে গিয়ে নির্বাচনী হিংসা, সন্ত্রাসবাদকে লালন-পালন করেছে কমিশন। ক্ষমতাসীনদের হরেক কিসিমের নির্বাচনী প্রতারণার নির্লজ্জ পৃষ্ঠপোষক কে এম নুরুল হুদা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনী সহিংসতা দল, পরিবার, গোষ্ঠী, সমাজকেও আক্রান্ত করে এবং এর রেশ দীর্ঘসময় পর্যন্ত চলতে থাকে যা সামাজিক সম্পর্ককে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ঠেলে দেয়। আওয়ামী লীগ কখনোই নিজেদের স্বার্থসর্বস্বতার উর্দ্ধে উঠতে পারে না। এরা অবৈধ ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতেও দ্বিধা করে না। বর্তমান সময় সংকটময় ও সমস্যাদীর্ণ। গণতন্ত্র হরণ আওয়ামী লীগের ডিএনএ-তে মিশে আছে। এদের কর্তৃত্ববাদী হিংস্র শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশের সকল মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলেও সিইসি’র নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দেশের ভোটারদের সাথে প্রতারণা করেই চলেছে।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি: ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঐ দিন সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে।
৭ নভেম্বর সকাল ১১ টায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজারে বিএনপি’র পক্ষ থেকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া।
৬ নভেম্বর বেলা ২-০০টায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবিগণ আলোচনা করবেন।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
ইতোমধ্যে দলের পক্ষ থেকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে পোষ্টার প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়াও দলের অঙ্গ, সহযোগী এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলি দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
অনুরুপভাবে দেশব্যাপী জেলা, মহানগর ও উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে স্থানীয় সুবিধানুযায়ী যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ