Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারের কৃত্রিম সঙ্কটে বিপাকে কৃষক

শাহজাহান মিয়া, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সারের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে কৃষকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। ভরা মৌসুমে সার না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগি কৃষকরা।
রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষক মশিউর রহমান, শাহিনুর রহমান, কলাবাড়ীর ফারুখ আহমেদ, এমদাদুল হক, বারবান্দা এলাকার আবুল কাশেম, পাটাধোয়াপাড়ার রুহুল আমিন, ঝাউবাড়ির গোলাম হোসেন, যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ির আবু সাঈদ, লালকুড়ার জহির উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করে জানান, চলতি রোপা-আমন মৌসুমে ক্ষেতে বিভিন্ন জাতের সার প্রয়োগ করতে হয়। তারা অভিযোগ করে বলেন, সারের ডিলাররা খুচরা বিক্রেতাদের সাথে আঁতাত করে রাতের আঁধারে সার বিক্রি করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেন। পরে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতিবস্তা পটাশ সারের সরকারের নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকার জায়গায় ৯০০ টাকা, ইউরিয়া ৮০০ টাকার জায়গায় ১ হাজার টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকার জায়গায় ১ হাজার ৩০০ ও টিএসপি ১১০০ টাকার জায়গায় ১৬০০ টাকা নেয়া হচ্ছে কৃষকদের কাছ থেকে। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা নিয়মিত সারের বাজার মনিটরিং না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার কর্তিমারী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম চাওয়ায় খুচরা সার বিক্রেতা বাবলু মিয়ার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান কয়েকজন কৃষক। কৃষকদের দাবি, সব সারের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। ইউরিয়া সার কিনতে চাইলে ওই খুচরা বিক্রেতা ইউরিয়ার সাথে বোরনসহ অন্যান্য সার নিতে বাধ্য করছেন। এ নিয়ে কৃষক-বিক্রেতার মধ্যে ক্ষোভ তর্কবিতর্ক দেখা দেয়। খুচরা বিক্রেতা বাবলু মিয়ার দাবি, কৃষি অফিস থেকে এ নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। তাই তারা এ নিয়ম মানতে কৃষককে বাধ্য করছেন।
এ সময় তর্কে জড়ানো ঝাউবাড়ি এলাকার কৃষক গোলাম হোসেন বলেন, আমার জমিতে বোরন সার দেয়ার দরকার না থাকলেও জোর করে ইউরিয়ার সাথে তা নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বোরন সার ছাড়া ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, বাজারে সারের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করায় ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা জিম্মি করছেন কৃষকদের।
বিসিআইসি সার ডিলার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃত্রিম সঙ্কট নয় বরং বরাদ্দ কম থাকায় বাজারে সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা সরাসরি সার না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ২৭ টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল তা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। কৃষকরা সার পেয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই। গত ১০ দিন ধরে এমন অবস্থা চলছে বলেও জানান তিনি।
নিয়মিত সারের বাজার মনিটরিং না করার কথা অস্বীকার করে রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, উপজেলায় রবি মৌসুমে সারের চাহিদা ৭০০ টনের জায়গায় ২৪৫ টন বরাদ্দ পাওয়ায় এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি রেজুলেশন আকারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। উপজেলায় মোট ১২জন সার ডিলার রয়েছেন। এ ছাড়াও প্রত্যেক ইউনিয়নে ৯ জন করে খুচরা বিক্রেতা রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ