Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভরাট দখলে যমুনার সংযোগ বংশী নদীর অনেকাংশ এখন মরাগাঙ

সাভার থেকে সেলিম আহমেদ | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৪ পিএম

ঢাকার সাভারে এক সময়ের খরস্রোতা যমুনার শাখা নদী বংশীর অনেক অংশ ভরাট হয়ে সরু খাল বা নালায় পরিণত হয়েছে। পলি পরে যেমন ভরাট হয়েছে তেমনি ভাবে দখল হয়ে গেছে অনেক অংশ। দখলের কারণে মুখ আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে পানি প্রবাহ। ৪০ বছরেও ড্রেজিং না হওয়ায় খর¯্রােতা নদী এখন মরা গাঙে পরিণত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে নৌ পথে যোগাযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যমুনা নদীর ধানতারা-নৈহাটী বাজার-বেনুপুর হাটখোলা দিয়ে আসা পানিতে শাখা নদী বংশী এক সময় ছিল খর¯্রােতা। এই নদীর গাজীবাড়ি-নাল্লাপোল্লা-মুনসুরবাগ-স্বামেরটেকী-রাঙ্গামাটি এলাকায় চলতো মালবাহী পালতোলা নৌকা। বড় বড় লঞ্চে চলাচল করতেন মানুষ। এই পথধরে নয়ারহাট-সাভার হয়ে ধলেশ^রী-বুড়িগঙ্গা-তুরাগ নদীতে যোগাযোগ ছিল। অন্যদিকে যাতায়াত হতো টাঙ্গাইলে। যার সবই এখন স্মৃতি।
উত্তর নাল্লাপোল্লা গ্রামের রাকিব হাসান বলেন, ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা গুংগ্রাম এলাকায় যমুনা থেকে বংশী নদীর সংযোগ মুখে ঘরবাড়ি বানিয়েছে একাধিক ব্যক্তি। এতে বন্ধ হয়ে গেছে নদীর পানি প্রবাহ। ফলে শুকিয়ে খর¯্রােতা নদী এখন মরাগাঙে পরিণত হয়েছে। ভরাট হয়েছে নদীর ধানতারা বাজার ও মাইঝাইল অংশ।
মুনসুরবাগ গ্রামের আতাউর রহমান খান আলমগীর জানান, নদীর পুরানো গতিপথ পাল্টে যাওয়ায় আশির দশকে একবার নদীর অনেক অংশ পুন:খনন করা হয়। এরআগে এই নদীতে পালতোলা মালবাহী নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করতো। যা ছিল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। ২৫-৩০ বছর আগে বন্যার সময় নদীতে পলিমাটি পরে ভরাট শুরু হয়। সময় পরিক্রমায় নদীতার চিহ্ন হারিয়েছে। তিনি বলেন, নদীর উজান পথ আটকে দেয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বংশী নদী রক্ষায় ড্রেজিং ও উচ্ছেদ উভয়ই জরুরী। একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম খান মৃদুল জানান, লঞ্চে করে বাড়ির মুরুব্বীরা এই পথে আসা যাওয়া করতেন সেই গল্প শুনেছেন, বাস্তবে দেখেননি। বর্ষা মৌসুমে নদীতে কয়েদিন স্যালু নৌকা চলাচল করলেও সারা বছর পানির দেখা মিলেনা। নদীর বুকজুড়ে রোপণ করা হয় ধানের চারা। আস্তে আস্তে নির্বিচারে নদীর পার দখল ও ভরাটকরে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।
আষাড়িয়াটেকী গ্রামের লক্ষণ চন্দ্র সরকার জানান, এই নদীতে সারা বছরই সুস্বাদু হরেক রকম মাছ পাওয়া যেত। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে তা বাজারে বিক্রি হতো। নদীতে পানিই থাকে না তাই মাছের দেখাও মিলে না। অনেক স্থানে পানি আটকে থাকায় সেখানে জমে থাকে কচুরিপানা। নদীর আর পূর্বের রুপ নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে নদীতে পানি না থাকায় চাষাবাদও ব্যাহত হচ্ছে। নদীর সঙ্গে পানির মেশিন বসিয়ে পাইপ সংযোগ দিয়ে ও নালা কেটে ক্ষেতে পানি দেয়া হতো। নদীতে পানি না থাকায় কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। তাদেরকে বেশী অর্থ ব্যয়ে বিকল্পভাবে পানির যোগান দিতে হচ্ছে।



 

Show all comments
  • শংকর চন্দ্র শীল। ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৩৬ পিএম says : 0
    বাংলা দেশ দল খুব ভালো খেলে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ