Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনগণ বের হলে পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না: সরকারকে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিএনপির সম্প্রীতির সমাবেশে আক্রমণ, গ্রেফতার ও মামলার ঘটনার সমালোচনা করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এতো ভয় পান কেনো? ভয় পান এজন্য যে, আপনাদের পায়ের নিচে মাটি নাই। জনগণ যেদিন বের হবে রাজপথে, যেদিন সময় হবে সেদিন আপনারা পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশাসনকে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সরকার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের পকেট কেটে আওয়ামী লীগ নিজেদের পকেট ভারী করছে। হাজার হাজার কোটিপতি তৈরি হচ্ছে। আর মানুষ গরীব থেকে গরীব হয়ে যাচ্ছে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের প্রতারণা করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওরা প্রচারণা করছে, কয়েকদিন আগে একটা খবর বেরিয়েছে যে, রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে। আইএমএফ বলেছে, গতবছর সরকার যে হিসাব দিয়েছে রেমিট্যান্স বাড়ার সেটা ৭ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে বলেছে, বেশি বলেছে। অর্থ্যাৎ মানুষকে, বিশ্বকে প্রতারণা করছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের মূল চরিত্র।
সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী চান দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান, সবাই ভোট দিতে পারবে সেটা দেখতে চান।
তিনি বলেন, এই তিন তিনটা ইলেকশন তারা ধবংস করলো। গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়েছে। এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, শরীয়তপুরের এমপি তিনি বলছেন, আমি ঠিক করে দিবো কে চেয়ারম্যান হবে, কে মেম্বার হবে, অন্যকেউ দাঁড়াতে পারবে না। আমরা চিন্তাই করতে পারি না আমাদের দেশে এমন অবস্থা হতে পারে। ৭১ সালে এরকম গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই করেছিলাম সেই গণতন্ত্রকে একেবারে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়ে তারা এখন একটা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, এরা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে, তাদের সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। সহনশীলতা বলতে তাদের কিছু নেই। সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ধবংস করছে, এটার প্রতিবাদে কয়েকদিন আগে আমরা আমাদের অফিসের সামনে সভা করেছিলাম। সভা শেষে আমাদের ছেলেরা যখন ফিরে যাচ্ছিল তখন পেছনে থেকে তাদেরকে আক্রমণ করে, লাঠিচার্জ করে, গুলিবর্ষণ করে তাদেরকে আক্রমণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আহত করা হয়েছে অনেককে। উল্টো তারা আবার মামলা দিয়েছে শত শত মানুষের বিরুদ্ধে।
বাজারে দ্রব্যের মূল্যের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, চাল, ডাল, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, কেরোসিন তেল, ভোজ্য তৈলি একটা জিনিসও আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সাধারণ মানুষ এখন আর ভালো খেতে পারে না। খায় কারা? আওয়ামী লীগের লোকেরা। সিন্ডিকেটটা কী করে? তারা দাম বাড়ায়। একই সঙ্গে আবার আওয়ামী লীগের নেতা-পাতি নেতা যারা আছেন তারা টোল নেয়, চাঁদা নেয়। উত্তরবঙ্গ, পূর্ববঙ্গ থেকে যে সবজী আসে সেই ট্রাকের কাছ থেকে তারা টোল আদায় করে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বর্তমান সরকারকে হটাতে একটি দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহবান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, ঢাকা উত্তর মহানগরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, রফিক হাওলাদার, ফখরুল ইসলাম রবিন, এস এম জিলানী, গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, নজরুল ইসলাম প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ