আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। গতকাল রোববার সকালে সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে তো নির্বাচনের কোনো পরিস্থিতি, পরিবেশ নেই। এখানে অনির্বাচিত সরকার, অবৈধ সরকার, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে গত দুটি টার্ম জোর করে ক্ষমতায় আছে। আমরা তখনই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো, যখন নির্বাচনের সত্যিকার পরিবেশ তৈরি হবে।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্যই দরকার নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার, নির্দলীয় সরকার, তার অধীনে একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবশ্যই অংশগ্রহণ করবো আমরা। সেজন্যই আমরা আন্দোলন করছি। এছাড়া দেশে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে, এতে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন, এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে সরকার জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। একইভাবে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের যারা আছেন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যারা আছেন, তাদের ধর্মবিশ্বাস পালন, উপসনালয়গুলো এগুলোরও কোনো নিরাপত্তা সরকার দিতে পারছে না। একইসঙ্গে আমাদের যে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী আছে, মুসলমান সমাজ, ইসলাম ধর্মে যারা বিশ্বাস করেন, তাদেরও এখানে কোনো নিরাপত্তা নাই। সামগ্রিকভাবে জনগণের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক যে সাম্প্রদায়িক সমস্যাগুলো তৈরি করা হয়েছে, আপনারাই দেখেছেন পত্রপত্রিকায় যে নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। আজকেও পত্রিকায় এসেছে যে রংপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সৈকত। এটা খুব পরিষ্কার, সরকারের যেহেতু জনগণের সাথে সম্পর্ক নেই, যেহেতু জনগণের ভোট তারা পায় না, এজন্য জনগণের দৃষ্টিটাকে ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার থেকে সরানোর জন্য তারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীমসহ বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মির্জা ফখরুল বিমানযোগে সকালে সিলেটে পৌঁছান। সিলেটে মাজার জিয়ারত শেষে বিএনপির সাবেক এমপি প্রয়াত ফজলুল হক আসপিয়ার শোকসভায় যোগ দিতে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেন তিনি।