পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেয়া এবং পরবর্তীতে সেই প্রার্থী পরিবর্তন করে অন্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে বেশ বিব্রত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত দুই ধাপে অনেক স্থানে বিতর্কিতদের মনোনয়ন দেওয়ায় দলের ভেতরে ও বাইরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। দ্বিতীয় দফার ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছে বিএনপি নেতা, শিবির নেতা, মন্দিরে হামলায় জড়িত, মামলার আসামী। এমনকি ইউরোপে বসে মনোনয়ন পাবার ঘটনায় ঘটেছে। তৃণমূলের অভিযোগ থেকে জানা যায়, চাল চোর, গম চোর, ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তৃণমূল সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো তালিকায় বিতর্কিতদের নাম থাকা এবং অনেক তালিকায় একক প্রার্থীর নাম পাঠানোর কারণে দলের মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে গিয়ে এ ধরণের ভুল হয়েছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সেজন্য বিতর্কিতদের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বার বার হুশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু এরপরও কাজ হয়নি। তাই তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য তৃণমূল থেকে বিতর্কিতদের নাম যারা পাঠাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে এমন বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ বিষয়ে দেখভাল করবেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই যোগ্যদের দলীয় মনোনয়ন দিয়ে থাকি। এতে দু-একটা ভুল থাকতেই পারে। তবে গত দুই ধাপের মনোনয়নে আমরা যেসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি সেখানে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনগুলোতে তৃণমূলের যেসব তালিকায় বিতর্কিতদের নাম থাকবে, প্রার্থীদের বিষয়ে ভুল তথ্য, অপূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকেব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা দলে অনুপ্রবেশ ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ছিল সর্বনিম্ন তিনজনের নাম রেজুলেশন আকারে কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতারা নিজেদের প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দিতে নিচ্ছেন অসৎ পন্থা। অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেন। দলের পদে না থেকেও দলীয় পদবি ব্যবহার করেন কেউ কেউ। ইউনিয়নের তথ্য উপজেলায় বা উপজেলার তথ্য জেলায় পালটে দেওয়ার অভিযোগও আছে। আবার জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করার ঘটনাও ঘটে। একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও কোনো কোনো জায়গা থেকে পাঠানো হয় একক প্রার্থীর নাম।
সূত্র জানায়, তৃণমূল থেকে পাঠানো তথ্যে হয়তো একজনের সাংগঠনিক পরিচয়ে দল বা সহযোগী সংগঠনের সম্পাদকীয় পদে ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, তিনি হয়তো কখনো সেই পদে ছিলেনই না। কারণ সাবেক পদ ব্যবহার করলে সেটা যাঁচাই করা কঠিন। এমন আরও নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়। এছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে অনেক তথ্য লুকানো হয়। অনেকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ আছে। কিন্তু কেন্দ্রে সেগুলো দেওয়া হয় না। অল্প সময় হাতে থাকায় কেন্দ্র থেকেও এগুলো পুরোপুরি জানা সম্ভব হয় না। ফলে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এক হাজার সাতটি ইউনিয়নে দলের আগ্রহী প্রার্থীদের কাছে শনিবার থেকে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি করা হয়েছে। চলবে বুধবার (২০ অক্টোবর) পর্যন্ত। পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) থেকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তে শুরু হবে মনোনয়ন বোর্ডের সভা। গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এবার টানা চারদিনের সভায় আট বিভাগের প্রার্থী চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো কোনো জেলা থেকে তথ্য গোপন করে বিতর্কিতদের নাম কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন। যারা এ ধরনের কাজে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের আগে এবং মনোনয়ন পাওয়ার পরে অনেক অভিযোগ জমা পড়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে। মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়। এছাড়া মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পরে পাওয়া অভিযোগগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে দলটি। এসব অভিযোগে অন্তত ১৫ ইউপি দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনও করে আওয়ামী লীগ। তবে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, যত পরিমাণ অভিযোগ এসেছে, এর তুলনায় সত্যতা পাওয়া গেছে অনেক কম। বঞ্চিত হয়ে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছেন অনেকেই। অভিযোগগুলো দপ্তর সেল থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো প্রতিবেদন আকারে জমা নেওয়া অভিযোগপত্রসহ মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়ে থাকে। মনোনয়ন বোর্ড আরও যাচাই-বাছাই শেষে অন্যান্য রিপোর্ট মিলিয়ে চূড়ান্ত করবে নৌকার প্রার্থী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।