বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাটোর শহরতলীর বড়ভিটা দাদাপুর জামে মসজিদের দেয়ালের একাংশ পুকুরে ধ্বসে পড়েছে দুই মাস আগে। পুরো মসজিদেই দেখা দিয়েছে ফাটল। মসজিদের টিনের চালটি বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। শহরের পিটিআই মোড় থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বাইপাস সড়ক সংলগ্ন দাদাপুর রোডে মসজিদটির অবস্থান। দাদাপুর সড়কের দুই পাশে সরকারি জায়গায় দুই শতাধিক পরিবারের বসবাস। এখানকার অধিকাংশই দিনমজুর এবং হৃতদরিদ্র। তারাই এই মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী ।
এলাকাবাসীরা জানান, ৯০ দশকে নিজেরা চাঁদা তুলে এবং কয়েকজন বিত্তবানের সহায়তায় মসজিদটি গড়ে তোলা হয়। দুই মাস আগে মসজিদটির একাংশের দেয়াল পুকুরে ধ্বসে পড়ে একদিকে হেলে পড়েছে। ওই অঞ্চলে আর কোনো মসজিদ না থাকায় হেলে পড়া মসজিদেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের একাংশ ধ্বসে পড়ায় দেয়ালে এবং মেঝের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। টিনের চাল বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মসজিদটিতে মুসল্লীরা নামাজ আদায় করছেন। মসজিদটি এতোটাই পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে, সেখানে আর নামাজ আদায় করার কোন সুযোগ নেই। পুকুরে ধসে পড়ায় মসজিদের মেঝের অংশসহ বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। তবুও উপায়হীন এই গ্রামের মুসল্লিদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আহবান করে দেয়া হয় আজান। এখনো ইমামতি করে ঈমাম সুমন আলী। সব কিছু ছাপিয়ে পাঁচ ওয়াক্তেই জামাতের ব্যবস্থা হয় প্রতিদিন। তবে সেই জামাতে মুসলীর সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। স্থানীয় মুসল্লী করিম হাওলাদার বলেন, অধিক সওয়াবের আশায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে মসজিদে যেয়ে জামাতে নামাজ পড়ি। তবে আশেপাশে মসজিদ থাকলে এমন ঝুঁকি নিতাম না বলে জানান তিনি। মুসল্লি মালেক শেখ বলেন, দিনের পর দিন যেভাবে মসজিদটি হেলে পরছে। যে কোন সময় পুরোটা ধ্বসে পড়তে পারে পুকুরের বুকে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন জানান, শুধু জীবনের ঝুঁকি নয়, নামাজে দাঁড়ানোর সময় নিজে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারলেও সেজদায় যেয়ে দেহের ভারসাম্য রাখা অনেক কষ্টের হয়ে পরে। রুকুতে গেলে কিছুটা হেলে পড়তে হলেও সেজদায় গেলে মনে হয় পুরো দেহ একেবারে গড়িয়ে পড়বে। মসজিদটি নতুন ভাবে তৈরি করতে অনেক টাকার দরকার যা স্থানীয়দের সামর্থ্যরে বাইরে। টাকার অভাবে যে কোন রকমের অবকাঠামো তৈরির কাজে হাত দিতে পারছেন না তারা।
মসজিদের ইমাম সুমন আলী জানান, নামাজের জন্য জামাত বাধা হলে সেই সময় মুসল্লিদের মনে বিপদের শঙ্কা না থাকলেও স্বজনরা উৎকণ্ঠায় থাকেন। মসজিদটি দ্রুত সংষ্কার করা দরকার। কিন্তু অর্থাভাবে তা করা সম্ভব হচ্ছে না। মসজিদের দেয়াল ধ্বসে পড়ায় পুরো মসজিদে ফাটল দেখা দিয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে পাঁচ ওয়াক্তেই জামাতের ব্যবস্থা হয় প্রতিদিন। নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ বলেন, নতুন করে মসজিদ নির্মাণে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত। তবে তাদের পক্ষ থেকে যতোটুকু পাশে থাকা যায়, তেমনটা থাকবেন বলে জানালেন জেলা প্রশাসক। নাটোর সদর উপজেলার বড় হরিশপুর ইউনিয়নের ৮ নং দাদাপুর রোড জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের কাছে আর্থিক অনুদান ও সাহায্য আবেদন করেছেন উক্ত মসজিদের সভাপতি এবং সম্পাদক। সবাই যদি আল্লাহর রাস্তায় দান করেন তাহলে আল্লাহর ঘর মসজিদ এ কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।