Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মিউচুয়াল ফান্ডে যত সুযোগ-সুবিধা দরকার সব দিতে চাই’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০২১, ৫:৪৯ পিএম

মিউচুয়াল ফান্ড অনেক ভালো পারফরমেন্স করছে মন্তব্য করে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমরা এ খাতটি অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। এক্ষেত্রে আমরা সেবক হিসেবে যত সুযোগ-সুবিধা দেয়া দরকার, তার সব দিতে চাই। এ মিউচুয়াল ফান্ডকে অনেক বড় দেখতে চাই।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার (৯ অক্টোবর) অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ড (এএএমসিএমএফ) আয়োজিত ‘ইনস্টিটিউশনাল রোল ইন সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সিং’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের কোনো প্রচার নেই। ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদিন কমপক্ষে দু’জন মানুষ ফোন করে কোন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করবে তা জানতে চান। যেখানে ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সব শ্রেণির মানুষ ফোন করেন। এছাড়া কেমন রিটার্ন দেয়, তাও জানতে চান তারা।

তিনি বলেন, এ বছর ফান্ডগুলো অনেক ভালো রিটার্ন দিয়েছে। তারা অনেক ভালো করছে। এ খাতটি উন্নতি করার যে সঠিক সময় পার করছে, সেই সুযোগটি আমরাও নিতে চাই। ফান্ডগুলোর যদি প্রচারণায় অনেক খরচ মনে করেন, তাহলে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করেন। আমি তো যখনই আইপিএলের খেলা দেখতে বসি, তখনই ওই দেশের মিউচুয়াল ফান্ডের বিজ্ঞাপন দেখি।

তার মানে ওরা ফান্ড জনপ্রিয় করেছে। ওদের ফান্ডের আকার অনেক বড়। আমাদের ফান্ডগুলোও এখনই বড় করতে প্রচারণায় নামতে হবে। একই সঙ্গে কোনো নেতিবাচক বা সন্দেহ থাকলে তা দূর করতে হবে। এছাড়া কারও কোনো প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত।

তিনি বলেন, ড. মিজানের (বিএসইসির কমিশনার) ভাষ্য অনুযায়ী মিউচুয়াল ফান্ডের আকার মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা। এত ছোট কেন হবে? সবাইকে এই ১৫ হাজার কোটির আকারকে কীভাবে দেড় লাখে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। আপনারা আমাদের বলেন, কী করতে হবে, কোথায় সমস্যা। আমরা আপনাদের আইনগতভাবে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। কেন আপনারা বলছেন না, ফান্ডের আকার বাড়ানো দরকার। কোথায় বাধা আছে, তা জানান।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, গত সপ্তাহেও মিউচুয়াল ফান্ড খাত নিয়ে কমিশন সভায় বসেছিল। কীভাবে এ খাতকে সহযোগিতা ও দশগুণ আকার করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। তাই আপনাদের কাছে আশা করবো এ খাতে কী সহযোগিতা দরকার তা আমাদের বলবেন।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, একতাই বল। অতএব সবাইকে এক থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। কাজ করতে গেলে এমন হয়। তবে কথা বলে তা সমাধান করে নিতে হবে। আমাদের এক থাকতে হবে। এর মাধ্যমে এই খাতকে বড় বিনিয়োগ আকারে নিয়ে আসতে চাই। তখনই আপনাদের আজকের আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। আপনারা সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ডের ভূমিকা। এই বাজারের স্ট্যাবলে মিউচুয়াল ফান্ডের মতো দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল আর কোথাও পাওয়া যায় না। এ কারণে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের দায়িত্বরতদের প্রতি আমাদের আকাঙ্খা অনেক। আপনাদের বুদ্ধিমত্তা ও বিবেচনাকে কাজে লাগিয়ে শেয়ারবাজার নিয়ে যে ভয়, শঙ্কা ও বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়, এখন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ডের অনেক কিছু করার আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে সাপোর্ট দেওয়া নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এখন শেয়ারবাজার থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব দেওয়া হয়, তা ১০০ গুণ বেড়ে যাবে। এজন্য মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে সহযোগিতা করা দরকার। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান সম্মতি জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অর্থনীতি কিন্তু সবার। আমরা শেয়ারবাজারে প্রতিদিন যে দু-তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন করি সব টাকা কিন্তু ব্যাংকে চলে যায়। সুতরাং শেয়ারবাজার যত বড়ই হোক না কেন, টাকা-পয়সা সব আপনাদের (ব্যাংক) কাছে থাকে। আপনাদের মাধ্যমেই টাকা-পয়সা লেনদেন হয়। সুতরাং শেয়ারবাজার বড় হয়ে গেলে মানি মার্কেটের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, এটা যেন কেউ কখনো মনে না করেন। বরং শেয়ারবাজার যত বড় হবে, ফিসহ নানাভাবে ব্যাংকের তত আয় বাড়বে।

এএএমসিএমএফের সভাপতি ড. হাসান ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন একাশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অরুনাষ্ণু দত্ত। এছাড়া বক্তব্য দেন আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলি প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএসইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ