পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামীতে কোন জাতীয় নির্বাচন হবে না, জনগণ হতে দিবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে নেমে এ সরকারকে হটিয়ে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেই। আর সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে আছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার যদি কোন কথা না শোনে তাহলে রাজপথেই হবে চুড়ান্ত ফয়সালা।
সাড়ে ৬ মাসেরও বেশি সময় পর শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একদিন আগে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। দেশে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেই কেবল নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে। এই লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট সবাইকে নিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই।
ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে স্বীকার করে নিলেন তাদের অধীনে অতীতের সকল নির্বাচনে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভোট ডাকাতির জনক হলো আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র হত্যাকারী হলো আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে সকল নির্বাচন হয়েছে ফেনী স্টাইলে। কেন্দ্র দখল করে জালভোটের উৎসব করে আওয়ামী লীগ, দিনের ভোট রাতে করে করে আওয়ামী লীগ, বিনা ভোটে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ। আপনাদের মনে আছে ১৯৭৩ সালে খন্দকার মোসতাক নির্বাচনে পরাজিত হলে তাকে জেতাতে হেলিকপ্টার দিয়ে ঢাকায় ব্যালট এনে তাকে বিজয়ী করা হয়েছিল। সেই যে জালিয়াতি শুরু করলো আওয়ামী লীগ, তারই ধারাবাহিকতা আজও বহমান। এখন বাংলাদেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাসনে পাঠাতে সক্ষম হয়েছে তারা। তাই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। আইন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ভোটারদের আস্থা ফেরাতে হলে, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হলে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জনগনের ঘাড়ের ওপর দৈত্যের মতো চেপে বসা নিশুতি সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের ‘বাক্যদূষণ’ ইদানীং প্রায় মহামারীর পর্যায়ে পৌঁছেছে। বেপরোয়া দুর্নীতি-দু:শাসন-গুম-খুন-লুটপাট আর অর্থ পাচার করতে করতে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছেন তারা। কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী তাদের নেত্রীকে তুষ্ট করতে, একটু কৃপার লোভে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অশোভন সন্ত্রাসী ভাষায় বক্তব্য বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে সীমা লংঘন করে চলেছেন। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে-‘গোড়ায় গলদ’। নিশিরাতের গর্ভে জন্ম নেয়া এই সরকারেরও গোড়ায় গলদ আছে।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ডাকাতি করে জন্ম নেয়ায় সরকারকে ঘিরে রয়েছে লুটেরা, চোর, ডাকাত, টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও চাপাবাজ গোষ্ঠী। নিশিরাতের এই সরকারের দিবানিদ্রায় থাকার জন্য বেয়াদবি, মিথ্যাচার আর অপপ্রচার এখন তাদে মজ্জাগত হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়েও এমপি, মন্ত্রী হওয়ায় এদের অনেকেই রাজনীতি বোঝেনা। বোঝেনা শিষ্টাচার, ভদ্রতা, ভব্যতা, আচার আচরণ ও কথাবার্তা।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কেবল মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পক্ষেই সম্ভব। রাতে ব্যালটে সীলমারা অটো ভোটের বিতর্কিত এই প্রতিমন্ত্রী সন্ত্রাসীদের মতো কুৎসা গাইছেন। ভোট ডাকাতদের মুখেই এধরণের কথা মানায়। ক্ষমতার সুখে কান্ডজ্ঞান হারিয়ে এখন ‘কাকস্য পরিবেদনা’র মধ্যে রয়েছেন।
তিনি বলেন, এই বক্তব্য যারা শুনেছেন তারা হতবাক হয়ে গেছেন। এটা কি কোন সভ্য দেশের মন্ত্রীর মুখের ভাষা হতে পারে ? মনে হয়েছে গলির সন্ত্রাসী মাস্তানের হুংকার। বস্তির অশিক্ষিত বোহেমিয়ান গালিবাজদের খিস্তি। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে, এই ধরনের লোকরাও এখন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন ! একজন মন্ত্রীর কথা-বার্তায় শালীনতা থাকা বাঞ্ছনীয়। কারণ রাতের আঁধারে তারা ভোট চুরি করে হোক আর লুট করে হোক মন্ত্রী হয়ে গেছেন। তাদের কাছে নতুন প্রজন্মের নাগরিকরা শালীন ও শিষ্টাচার, উদাহরণমুলক আচরণ, কথাবার্তা শুনতে চায়, দেখতে চায়। কিন্তু তাদের এ কেমন আচরণ, কথাবার্তা!
বিএনপির এই নেতা বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী এর আগে ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু ৫ মাসও টিকতে পারেননি সেখানে। চিকিৎসকদের নিয়ে অসংলগ্ন, অশোভন ও বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে তাদের দলীয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএম) আন্দোলনের মুখে তার পলায়নপর অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন তার নেত্রী শেখ হাসিনা লাগামছাড়া, উস্কানিমূলক, অসংলগ্ন ও ভারসাম্যহীন বক্তব্য বিবৃতির উপযুক্ত মন্ত্রনালয় তথ্য ও সম্প্রচারে তাকে স্থানান্তরিত করেন। তিনি শুধু বিএনপি নেতানেত্রীদেরকেই নিয়েই নয়, গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন, গালাগালি করছেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের ফুল মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তার লাগামহীন, মাত্রাহীন বাক্যদূষণে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। তাকে টেক্কা দেয়ার জন্য তিনি এখন খিস্তি-খেউড় আর হুংকার কালচার চর্চা করছেন। বেহুদা কথাবার্তায় এতদিন ওবায়দুল কাদের এবং হাছান মাহমুদের প্রতিযোগিতা চললেও এ তালিকায় শীর্ষে উঠতে যা মনে আসে তাই বলছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন দুর্নীতি লুটপাটে দেশ ও জনগণকে পথে বসিয়ে দিয়েছেন। অর্থনীতি ফোকলা করে ফেলেছেন। এই করোনা মহামারিতে মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। এর মধ্যে ই-কমার্সের নামে ডজন ডজন প্রতিষ্ঠান, নানা নামে, নানা রংয়ে-ঢংয়ে কোন আইনের ভিত্তিতে জনগণের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করলো-সেই হিসেব করুন। কেন দেশের একটি প্রতিষ্ঠানও দুর্নীতি মুক্ত থাকতে পারেনি ? নিশিরাতের সরকারের আমলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই কেন দুর্নীতিকেই নীতি মনে করে -সেই হিসেব বের করুন। খোদ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘নগদ’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নগদ কেলেঙ্কারির খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। নিশিরাতের সরকারের প্রতি আহবান, বাঁচতে চাইলে এখনো সময় আছে, ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চান।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজিব আহসান এবং বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ সকল রাজবন্দীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।