পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস গতকাল রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভোগান্তিতে পড়ে বহু মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন আটকে থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন। বেশি সমস্যায় পড়েন বয়স্ক ব্যক্তি, নারী, শিশু ও রোগীরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গুলশান, বনানী, বাংলামটর, শাহবাগ, মতিঝিল, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড়, গুলিস্তান এলাকায় বেশি যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়ে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতেও। যানজটের কারণে যানবাহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন রাজধানীবাসী।
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা হুসেন আলী কারওয়ান বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় মোটরসাইকেল করে রওনা হন। দুপুর ১২টার সময় তিনি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানীর কাকলী মোড়ে পৌঁছান। সড়কে প্রচন্ড যানজট। তাই প্রায় ৪৫ মিনিট সেখানে তাকে আটকে থাকতে হয়। মহাখালীমুখী সড়কে তীব্র যানজট দেখে তিনি সে পথে না গিয়ে বনানী হয়ে গুলশানে যান। সেখানেও ছিল যানজট। সব মিলিয়ে মিরপুর থেকে কারওয়ান বাজারে আসতে আলী হোসাইনের সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের এসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানীর নৌবাহিনীর সদর দফতরের সামনের অংশ থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত সড়কের প্রশস্ততা অনেক কমেছে। কারণ, সেখানে উড়ালসড়কের (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) কাজের জন্য সড়কের কিছু অংশ ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। এ কারণে মহাখালী, গুলশান ও বনানীমুখী সড়কগুলোয় যানজট প্রচন্ড। আরও কয়েক দিন সেখানে কাজ চলবে বলে জানা গেছে।
তবে শুধু গুলশান-বনানী নয়, সকাল থেকে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে ছিল যানজট। বনানীর মতো মতিঝিল এলাকায় যানজট বেশি দেখা গেছে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রুহুল আমিন বলেন, সাধারণত মোটরসাইকেলে যেকোনো জায়গায় যেতেই সময় কম লাগে। কিন্তু গতকাল সড়কে মোটরসাইকেল নিয়েও যানজটে পড়ে থাকতে হয়েছে। আমি উত্তরা থেকে রওয়ানা হয়ে মতিঝিল অফিসের কাজে যাই। কিন্তু সড়কের প্রতিটি সিগন্যালে দাঁড়াতে হয়েছে অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশি সময়। এদিকে মহাখালী থেকে সাতরাস্তা এলাকার সড়কে তীব্র যানজট। তাই অফিসে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা দেড়ি হয়। ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পরিদর্শক সাইদুর রহমান বলেন, গতকাল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। এ কারণে সকাল থেকে মতিঝিল এলাকার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এদিকে প্রতিদিনই যানবাহনের কিছুটা চাপ থাকে তেজগাঁও লিংক রোড, বেগুনবাড়িসহ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার ভেতরের সব গলিপথে। দীর্ঘসময় এসব এলাকায় যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়। সড়কে গতকাল বেশি পরিমাণে গাড়ির চাপ থাকতে দেখা গেছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, রাজধানীর রাস্তাগুলোতে একদিকে গাড়ির যানজট, অন্যদিকে এ স্থবির পরিস্থিতিতে যানবাহন চালকরাও ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা না মানায় অবস্থা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। আর নিয়ম মেনে না চলার কারণে সৃষ্ট যানজট মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। অনেকেই বলেন, শৃঙ্খলা না মানা রাজধানীতে যানজটের একটি বড় কারণ। বাস-মিনিবাসগুলো যেখানে-সেখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায়। রাস্তা দখল করেও বসানো হয় অস্থায়ী দোকান। এ ছাড়া প্রাইভেট কার, ট্রাক, ভ্যান ইত্যাদি রাস্তার ওপরই পার্কিং করে রাখা হয়।
তবে যানজটের বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তরা জানান, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে গাড়ির সংখ্যা বেশি থাকে। অনেকে দু’দিনের ছুটিতে বাড়ি যান। এসব কারণে এই দিন একটু যানজট বেশি থাকে। তবে সন্ধ্যা ৭টার পর সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এদিকে, রাজধানীর পুরান ঢাকায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মরণী, মালিটোলা, সুরিটোলা, বংশাল, নয়াবাজার ও বাবুবাজারে যানজটের তীব্র আকার ধারণ করতে দেখা গেছে। পুরান ঢাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তায় অত্যধিক রিকশা যানজটের অন্যতম কারণ। রাস্তা বা ফুটপাতে অবৈধ দখলের কারণেও কোথাও কোথাও যানজট হয়। এছাড়া পুরান ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তায় উন্নয়ন কাজ চলছে। এ কারণেই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও গতকাল সকালে বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তাগুলোতে পানি জমে যায়। এ জন্যও যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুইটি আক্তার নামের এক তরুণী। নাজিরা বাজারের ওই বাসিন্দা জানান, গতকাল সকাল ৯টায় ধানমন্ডি এলাকায় একটি পরীক্ষা ছিল। কিন্তু যানজট ও বৃষ্টির পানির কারণে তিনি সকাল ১১টায় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।