Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পার্বতীপুরে কলেজছাত্র হত্যা নিয়ে নানা গুঞ্জন

হত্যা না আত্মহত্যা

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০২ এএম

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে একটি হত্যাকাণ্ডের নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এটি কী হত্যাকাণ্ড না আত্মহত্যা। কলেজছাত্রের ঘটনাটি ৪দিন অতিবাহিত হলেও কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায়। ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্য থেকে। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা মোমিনপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে। কলেজছাত্র রিফাত সরকার রিজু হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তার পরিবার ও স্থানীয়রা অনেকটা নিশ্চিত হতে পারলেও নিয়মের কথা বলছেন পুলিশ। আলামত ও অবস্থা দৃষ্টে স্পষ্ট, রিজুকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে হত্যাকারীরা। বাড়িতে বাবা-মা না থাকায় সেই এলাকার মাদক সম্রাটরা সেখানে উঠা বসা, মজমা, আনন্দ-ফুর্তি করতো প্রায়। বাবা-মাসহ এলাকাবাসীর ধারণা মাদক নেটওয়ার্কটির সাথে রিজুর বিবাদ হয় এবং এক পর্যায়ে তাদেরকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করে রিজু। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। রিজুকে টিনের চালার একটা বর্গা বাশের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয় জীর্ন ছেড়া ওড়না দ্বারা। যার গিরা ছিল গলার সামনে থুতনির কাছে। গোটা শ^াসনালী ফাঁকা ছিল। পাগুলো বেঞ্চের সাথে হাটু গেড়ের মতো লাগা ছিল। তার বাবা দুলাল মিয়া ও স্বজনরা বলছেন, ঐ রাতে রিজু সাড়ে দশটার দিকে ম্যাজিক চুলায় ভাত রেধেছে, পাশের দোকান থেকে ডিম এনেছিল রাতের খাবার খাবে বলে। তার আত্মহত্যার প্রশ্নই উঠে না। মাদকের শক্তিশালী যে নেটটি এলাকাটিকে জিম্মি করে রেখেছে এবং যারা আসা যাওয়া করত রিজুর কাছে তাদের একজনকে পুলিশ টান দিলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে বলে স্বজনদে দাবি। স্থানীয়রাও বলছেন একই কথা। একটি তাজা প্রাণ সম্ভাবনাময় জীবন কেড়ে নিল দুর্বিত্তরা। অথচ হুমকি দিচ্ছে বাড়াবাড়িসহ মামলা না করতে একটি চক্র। মজার ব্যাপার হলো, যে চক্রটি রিজুদের বাড়িতে যাওয়া আসা করত তারা তার দাফন কার্যে কেউই অংশ নেয়নি এবং তাদের কাউকে আর এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে এলাকার বিজ্ঞ জনদের কাছ থেকে। রিজু মন্মথপুর আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। এইবার এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিল সে। ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় শুধু ৪ শতক মাটির উপর একটি ছোট্ট বাড়ি। জীবিকার জন্য বড় ভাই ও মা ঢাকায় থাকত। বাবাও থাকত বাহিরে। বাবা ভাইয়ের প্রেরিত টাকা পয়সায় সে লেখাপড়া করত। প্রাইভেটও পড়াত। বাবা-মা স্বজনরা জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে রিজুকে প্রথমে নেশা জাতীয় পানীয় পান করিয়ে অজ্ঞান করে শ^াসরোধ করা হয়। এরপর হত্যা নিশ্চিত করে তরিঘড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়, যা ভাত রান্না ও ডিম আনার সময়ক্ষণ থেকে অনুমেয়।
লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী এসআই সাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পিএম রিপোর্টের বাহিরে তাদের করনীয় কিছুই নেই।
মডেল থানার ওসি ইমাম জাফর জানান, আমরা এক্সপার্টের কাছে পাঠিয়েছি। এটি সুইসাইডাল ওর হুমিসাইডাল সেটি নিশ্চিত হতে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলেই সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ