পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে দেশের পণ্য রফতানিতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। করোনা মহামারির মধ্যে সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে ৪১৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের বা ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়েছে। এ আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। গত বছর সেপ্টেম্বরে ৩০২ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। সোমবার (৪ অক্টোবর) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এক হাজার ১০২ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং রফতানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। ইপিবির তথ্যমতে, আগস্টে মাসে তৈরি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের মাস জুলাইতে তৈরি পোশাক রফতানিতে ছিল নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি- মাইনাস ১১ শতাংশ। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে বিদেশের বাজারে দেশীয় পোশাক রফতানি হয়েছে ৩৪১ কোটি ৮৮ লাখ ইউএস ডলার। যা এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ২৪১ কোটি ৩৪ লাখ ইউএস ডলার। সেই হিসেবে গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ কোটিস ডলার রফতানি আয় বেড়েছে পোশাক খাতে। ইপিবির হিসেবে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর— এই তিন মাসে ৯০৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে নিটওয়্যার পণ্য রফতানি করেছে ৫১৬ কোটি ৪১ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ শতাংশ। ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ৫২ লাখ ডলারের। এই খাতে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, গত বছর মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তৈরি-পোশাক খাত। এখন ক্ষত কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে, পোশাকের চাহিদা বাড়ায় নতুন অর্ডারও আসছে। এ কারণে রফতানি আয় বেড়েছে। আগামীতে রফতানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা তার। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এবার ৩৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানির লক্ষ্য ঠিক করা হচ্ছে। আশা করছি এ লক্ষ্য পূরণ করতে পারবো।
ইপিবি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে কৃষিপণ্য রফতানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রফতানির আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি আয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় চামড়াজাত খাত থেকে রফতানি আয় এসেছে ২৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। তবে এ সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি কমেছে। সেপ্টেম্বর শেষে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২১ কোটি ২৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় ৩০ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রফতানি করে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।