পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালয়েশিয়া, আমেরিকায় যারা মানি লন্ডারিং করে টাকা পাচার করে তাদের ধরেন
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কিংবা কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি ক্রয়ে যারা অর্থ পাচার করেছেন- দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয় না। অথচ যারা দেশেই বিনিয়োগ করেছেন, বেকারের কর্মসংস্থান করেছেন- তাদের পেছনে ছোটে সংস্থাটি। দুর্নীতি বিরোধী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘দুদক’ সংক্রান্ত এই পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষকদের দীর্ঘ দিনের। বিশ্লেষকদের এ পর্যবেক্ষণ এবার প্রতিধ্বনিত হলো উচ্চ আদালতের কণ্ঠে। দুদকের উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট বলেছেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যদি দুদক এভাবে ছোটে তাহলে দেশের উন্নয়ন কীভাবে হবে? গতকাল রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। দিনাজপুরের ব্যবসায়ী ও জেলা যুবলীগ নেতা খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনের জামিন শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে। তারপক্ষে জামিন আবেদন করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বুড়য়া। এ সময় দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান সংযুক্ত ছিলেন। সরকারপক্ষে সংযুক্ত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যদি আপনারা এভাবে ছোটেন তাহলে দেশের উন্নয়ন হবে কীভাবে। যারা দেশের বাইরে বেগমপাড়া করছেন, যারা মালয়েশিয়া, আমেরিকায় টাকা পাঠাচ্ছেন, এগুলো বড় বড় মানি লন্ডারিং। তাদের ধরেন।
পরে ৪০ কোটি টাকা অর্থপাচার মামলায় দিনাজপুরের ব্যবসায়ী খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনকে ৮ সপ্তাহের জামিন দেন আদালত। তবে জামিনের শর্ত হিসেবে আসামিকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং তিনি দেশত্যাগ করতে পারবেন না বলে আদেশে বলা হয়। আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া বলেন, দিনাজপুরের সোনালী ব্যাংকের যে ব্রাঞ্চের কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে ওই ব্রাঞ্চের কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে ১৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ২১৮ টাকার জমা করেছেন খলিলুল্লাহ আজাদ। বিভিন্ন সময়ে তিনি এই টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে উচ্চ আদালত বিভিন্ন মামলায় প্রাসঙ্গিকভাবেই দুদকের সমালোচনা করে আসছে। প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে চুনোপুটিদের ধরার অভিযোগও আছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। রয়েছে ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রফতানিকারক এবং দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারীদের অনুসন্ধান-তদন্তের নামে হয়রানি করার অভিযোগ।
বেগমপাড়া নিয়ে দুদকের নিরবতা : মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ এবং কানাডার ‘বেগমপাড়া’ নিয়ে বিশ্লেষক মহলে রয়েছে উচ্চবাচ্য। অর্থপাচারের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রাসঙ্গিকতা পায় এ দু’টি বিষয়ে দুদকের আশ্চর্যজনক নিষ্ক্রিয়তা। দেশে অবস্থানরত ছোটোখাটো ব্যবসায়ীদের পেছনে দুদক যতটা কোমর বেঁধে নামে- সেভাবে নামতে দেখা যায় না আলোচিত অর্থপাচার সম্পর্কে। সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত হাতে থাকলেও রহস্যজনক নীরবতা দুদকের দায়িত্বশীলতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্লেষকরা তাই প্রশ্ন তোলেন- তাহলে দুদকের কাজ কি? উচ্চ আদালতও দুদকের নিরবতা-নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহুবার। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ইতিপূর্বে অর্থপাচারকারীদের ‘দেশের শত্রæ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের ইনডেক্স প্রকাশ করে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)। এ ধারাবাহিকতায় ৭ বছর আগে একটি ইনডেক্স প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে বছরে অন্তত: ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন গত বছর সাংবাদিকদের এক অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন. কানাডার টরেন্টোতে টাকা পাচার করে বাড়িঘর বানিয়েছেন এরকম অন্তত ২৮টি ঘটনা তার জানা রয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতিক ৪ জন। ২৪ জনই বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মকর্তা। তার এ মন্তব্যের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে মালয়েশিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অবৈধ সম্পদের মাধ্যমে সেকেন্ড হোম করেছেন তাদের তালিকা চেয়ে গত ১৪ জানুয়ারি তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।
শিল্পোন্নয়নের অন্তরায় দুদক : অর্থপাচার দেশের আলোচিত ইস্যু হলেও এ বিষয়টি দুর্নীতি দমনের কাছে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। দেশের কোন শ্রেণিটি অর্থপাচার করছেÑ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেটি স্পষ্ট করে দিলেও দুদকের দৃষ্টি যেন এ প্রশ্নে অন্ধ, একচোখা। অর্থপাচার বেশি করছেন সরকারের প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বে আসীন ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা। অথচ তাদের বিষয়ে দুদক অ্যাকশনে নেই। রাজনীতিকরাও অর্থপাচার করছেন। সেটির পরিমাণ সরকারি চাকরিজীবীদের চেয়ে কম। কিন্তু দুদকের চোখ সেদিকে যায় না। দুদক ‘অর্থপাচারকারী’ খোঁজে কেবল বেসরকারি ব্যক্তিদের মাঝে। বিশেষত: যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। যারা উৎপাদিত পণ্য রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনছেÑ তাদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন’ এবং সেই সম্পদ ‘পাচার’র অভিযোগ আনছে। অনুসন্ধান, জিজ্ঞাসাবাদের নামে সম্মানহানি করছে। দেশে বিনিয়োগ, শিল্পসম্প্রসারণ তথা বেসরকারি খাতের শিল্পোন্নয়নের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। দুদকের বাছ-বিচারহীন এ যেন ভ‚মিকায় দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তারা বিরক্ত। তারা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অহেতুক হয়রানির অভিযোগ তুলছেন। অন্যদিকে অন্যের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে অর্থপাচারকারী সরকারি কর্মকর্তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অনুসন্ধান-তদন্ত দূরে থাক-ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলাও করে না। কিন্তু কেন দুদক অর্থপাচারের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না? প্রশ্ন করা হয় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র কাছে। জবাবে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এর মূল কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অর্থ পাচারের সাথে জড়িতদের বিচার এবং অর্থ ফিরিয়ে আনার দৃষ্টান্ত হয়েছিল ২০০৭/৮ সালে এবং যে প্রক্রিয়ায় এটা তখন সম্ভব হয়েছিল একই প্রক্রিয়া এখনও বিদ্যমান রয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই, তাই এখন হচ্ছে না। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র স্বাক্ষরকারী দেশ। যেসব দেশে অর্থ পাচার হয় তারাও স্বাক্ষরকারী সদস্য রাষ্ট্র। এই কনভেনশনের আওতায় পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে চিহ্নিত করা, অর্থ-সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব। যারা জড়িত তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব।
নেপথ্যে আমলা-অনুরাগ : কারা বেশি অর্থপাচার করেন- এটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যেই প্রথম উঠে আসেনি। দুদক নিজেও জানে-কারা এই অর্থপাচাকারী। আর তাই অর্থপাচারকারীদের সুরক্ষায় দুদক সদা অন্তপ্রাণ। বিশেষ এই শ্রেণিটির প্রতি সংস্থাটির অনুরাগ যেন জন্মগত। এ কারণে প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও সিভিল সার্ভিসের দুর্নীতির বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বরং প্রশাসন কর্মকর্তাদের যাতে কোনো ধরনের ‘ক্ষতি’র সম্মুখীন হতে না হয় সেদিকে রাখা হয় তীক্ষè দৃষ্টি। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনত: স্বশাসিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। বাস্তবে জন্মলগ্ন থেকেই এটি আমলাতন্ত্রের পদানত সর্বোচ্চ পরাধীন এক সংস্থা। এ সংস্থায় কমিশনে যেমন রয়েছে আমলা-আধিক্য তেমনি সিদ্ধান্ত গ্রহণেও রয়েছে আমলা-প্রাধান্য। দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিক বাছাই পর্বটি প্রশাসন ক্যাডারদের দখলে। দুদকের গুরুত্বপূর্ণ ‘বিশেষ অনুসন্ধান-তদন্ত-১’, ‘অনুসন্ধান-তদন্ত-২’, ‘অর্থপাচার দমন-প্রতিরোধ’ সংক্রান্ত ডেস্ক এবং ‘দুদক প্রশাসন’ প্রেষণে আসা এডমিন ক্যাডারদের করায়ত্বে। কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খবরদারিত্বের কাজটিও করেন আমলা-কর্মকর্তারা। দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, শাস্তি, বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ারটি রাখা হয়েছে অনুসন্ধান-তদন্ত সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাহীন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হাতে। এসব বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন নামক সংস্থাটি পরিচালিতই হচ্ছে আমলাতন্ত্রের মর্জিমাফিক। যারা অর্থপাচার করছে তাদের অনেকেই দুদকের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে থাকা কর্মকর্তাদের স্বজাতি। এ কারণে তাদের অর্থপাচার এবং দুর্নীতির বিষয়ে কমিশনের পরিকল্পিত এই উদাসীনতা।
দুদকের মিথ্যা বাগাড়ম্বর : পররাষ্টমন্ত্রী অর্থপাচারকারীদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের পর চলতিবছর ফেব্রুয়ারিতে দুদকসহ তিনটি সংস্থার কাছে তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু দুদক নির্ধারিত সময়ে কোনো তালিকা দাখিল করেনি। বরং সংস্থাটির আইনজীবী বলেছিলেন, আমরা অর্থপাচারকারী তালিকা প্রকাশ করতে পারি না। মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য তদন্ত পর্যায়ে প্রকাশ করা যায় না। আন্তর্জাতিক আইনে বাধা আছে। অনেক দেশে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা তথ্য পাঠাচ্ছেন।
বাংলাদেশ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সংগঠন এগমন্ট গ্রুপ-এর সদস্য। এটি বিভিন্ন দেশের ১৬৬টি ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সংগঠন। তাদের নীতিই হলো তদন্ত পর্যায়ে তথ্য প্রকাশ না করা। তদন্ত পর্যায়ে তথ্য প্রকাশের দায়ে নাইজেরিয়াকে গ্রুপ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমরা সেই ঝুঁকি নিতে পারি না। ওই সময় সংস্থাটির তৎকালিন চেয়ারম্যান বলেছিলেন, যেসব ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করে সেসব দেশেই থাকছেন, তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। এপর্যন্ত বাংলাদেশের ৬০ ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে ১৮টি দেশে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই পর্যন্তই। এরপর মানিলন্ডারিং বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতির কথা শোনা যায়নি সংস্থাটির মুখ থেকে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিদেশে অর্থপাচারকারী কিংবা পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে কার্যত: কোনো তৎপরতাই নেই। ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এসিস্ট্যান্ট রিকোয়েস্ট’ (এমএলএআর)র আওতায় প্রকাশযোগ্য কোনো তথ্যই কোনো দেশ থেকে পাচ্ছে না দুদক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুদক ৫০টি অর্থ পাচার মামলা দায়েরের দাবি করে। বাস্তবে এগুলো হচ্ছে দেশের ভেতর বিভিন্ন বেসরকারি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন’র অভিযোগে মামলা। এসব মামলায় ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের কয়েকটি ধারাযুক্ত করে এটিকে ‘মানিলন্ডারিং মামলা’ বলে দাবি করছে সংস্থাটি। বিশেষত: ক্যাসিনোকান্ডকে গ্রেফতার হওয়া আলোচিত কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাগুলো রুজু করা হয়। এসব এজাহার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, সেই সম্পদ ‘স্থানান্তর’,‘ হস্তান্তর’ এবং ‘রূপান্তর’র অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব হচ্ছে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ব্যাপকভিত্তিক সংজ্ঞার পরিভাষা। এসব অভিযোগ আনার জন্য বিদেশে অর্থ পাচারের প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয় কোনো দেশে অর্থ স্থানান্তরিত কিংবা পাচার না হলেও এই অভিযোগগুলো আনা সম্ভব। দেশের অর্থ দেশেই বিনিয়োগ হলেও দুদক এজাহারে এসব পরিভাষা প্রয়োগ করে ‘অর্থপাচার’র অভিযোগ আনছে। আর এ অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী, শিল্প মালিক এবং রফতানিকারক।
জানা গেছে, এমএলএআর’র আওতায় দুদক বিদেশ থেকে কোনো তথ্য পাচ্ছে না। মানিলন্ডারিং মামলা দায়েরের কৃতিত্ব দাবির জন্য সংস্থাটি এ ধরণের চাতুর্যের আশ্রয় নিচ্ছে। ২০১৫ সালে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধিত হওয়ার পর বেসরকারি ব্যক্তিদের ‘অর্থপাচার’ সংক্রান্ত এখতিয়ার হারায় দুদক। ২০১৮ সাল থেকে বেসরকারি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন’র ধারা প্রয়োগের পাশাপাশি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ধারাও প্রয়োগ করছে। বিষয়টি এখনও উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়নি। মামলার পরিণতি না ভেবে নিছক লন্ডারিং মামলার সংখ্যা বাড়াতে একের পর এক দায়ের করছে ‘অর্থপাচার মামলা’। তবে দুদকের এ হেন মামলাকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ বলে উল্লেখ করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট বাবরূল আমীন। তিনি আশঙ্কা করে বলেন, বেসরকারি ব্যক্তিদের মানিলন্ডারিং মামলার এখতিয়ার সিআইডিসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। দুদক যে মামলাগুলো করছে সেগুলোর ফলাফল সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।